পদ্মা সেতু ॥ তিন মাসের মধ্যে নির্মাণ শুরু, সম্পন্ন হবে ৩ বছরে

 নকশার পরিবর্তন না করে নিজস্ব অর্থায়নে তিন মাসের মধ্যে বহুল আলোচিত পদ্মা সেতু নির্মাণ কাজ শুরু এবং আগামী তিন বছরেই সেতু নির্মাণ সম্পন্ন করার ঘোষণা দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।
তিনি বলেন, পদ্মা সেতুর নকশায় কোন পরিবর্তন হবে না। আগের মতোই সড়ক ও রেলপথ থাকবে পদ্মা সেতুতে। সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে এ ব্যয়বহুল সেতুটি নির্মাণ করা অসম্ভব কিছু নয়। শুধু অন্যান্য খাতে কিছুটা খরচ কমাতে হবে।
সোমবার জাতীয় সংসদে ৩০০ বিধিতে দেয়া বিবৃতিতে পদ্মা সেতু নির্মাণে সরকারের অবস্থান তুলে ধরতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, তিন মাসের মধ্যে এ সেতুর কাজ শুরু না করলে তা আরও এক বছর পিছিয়ে যাবে। বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার সময়সূচী ঠিক রাখতেই বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নের অপেক্ষায় না থেকে তাদের ‘না’ করে দেয়া হয়েছে। তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্পে এখন পর্যন্ত কোন দুর্নীতি হয়নি। আগামীতেও পদ্মা সেতু নির্মাণে কোন দুর্নীতি হবে না।
দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন আমরা এ অর্থবছরেই শুরু করছি, নিজস্ব অর্থেই তা সম্পন্ন করব। পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে কোন ধরনের দুর্নীতি কখনো হবে না। এ প্রকল্পে কোন দুর্নীতি চলবে না। দুর্নীতিবাজদের কাছে আমার আহ্বান, আপনারা সাবধান হউন। আপনাদের নিস্তার নেই। প্রকল্প বাস্তবায়নে যারা নিযুক্ত আছেন এবং ভবিষ্যতে যারা নিযুক্ত হবেন তাদের সকলের কাছে আমার মিনতি আপনারা এ জাতির একটি গর্বের কাজে আপনাদের দক্ষতা এবং সামর্থ্যের সর্বোচ্চ মান এবং আপনাদের উন্নত মূল্যবোধ নিয়ে নিবেদিতভাবে কাজ করে যাবেন।
তিনি দৃঢ় কণ্ঠে বলেন, পদ্মা সেতু নির্মাণে আমরা কোন ধরনের দুর্নীতি সহ্য করব না। আমরা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত কাজে বিশ্বব্যাংকের বিশেষজ্ঞ দলের সম্পৃক্তি চাই। বিশ্বব্যাংক আমাদের জানিয়েছে, পদ্মা সেতুর কারণে অন্যান্য প্রকল্প বাস্তবায়নে কোন প্রভাব পড়বে না, দুদকের তদন্ত কার্যক্রমে তারা সম্পৃক্ত থাকবে। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু বাস্তবায়নে কোন দুর্নীতি হয়নি এবং দুর্নীতির সম্ভাবনা সম্বন্ধে শক্ত তদন্ত চলছে এবং ভবিষ্যতে যাতে এ প্রকল্পে কোন দুর্নীতি না হয় সেটা সরকার নিশ্চিত করবে। তিনি বলেন, আমরা জানতাম যে, বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করলে অন্যান্য যারা যৌথ অর্থায়ন চুক্তির মাধ্যমে প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন তাদের সঙ্গে চুক্তিও বাতিল হয়ে যাবে। তবে তাদের কাছ থেকে অন্যভাবে সহায়তা পাওয়ার লক্ষ্যে তাদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে।
লিখিত বিবৃতিতে অর্থমন্ত্রী বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই আমাদের সংবাদ মাধ্যমে এবং সারা দেশে সম্ভবত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে পদ্মা সেতু প্রকল্পের বাস্তবায়ন। আমরা পদ্মা সেতু প্রকল্প বাস্তবায়নের যে পরিকল্পনা প্রণয়ন করি তাতে এ অর্থবছরেই সেতুর কাজ আমাদের শুরু করার কথা। আমাদের হিসেবে বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া এ ক্যালেন্ডার বছরের প্রথম তিন মাসের মধ্যেই শুরু না করলে প্রকল্প বাস্তবায়ন আরও এক বছর পিছিয়ে যাবে।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক সেপ্টেম্বর মাসে এ প্রকল্প বাস্তবায়নে প্রত্যাবর্তন করে এবং তখন থেকেই আমরা ঠিক করে রেখেছি যে, জানুয়ারিতেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে হবে। আমরা দেখলাম যে বিশ্বব্যাংকের সময়সূচী এবং আমাদের সময়সূচী মিলছে না। গত ৩১ জানুয়ারিতে আমরা উন্নয়ন সহযোগীদের জানিয়ে দেই যে, আমরা পদ্মা সেতুর কাজ এখনই শুরু করব এবং আমরা বিশ্বব্যাংকের অপেক্ষায় থাকব না। আমি সরকারের এ সিদ্ধান্তটি বিশ্বব্যাংককে জানাই এবং বলি যে আমরা এ প্রকল্প এখনই শুরু করব এবং এতে বিশ্বব্যাংকের সহায়তা আর চাই না। আমরা একই সঙ্গে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছি যে, উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে আমাদের অন্যান্য প্রকল্প বা কার্যক্রম নিয়ে যেসব কার্যক্রম চলছে তা অব্যাহত ধারায় চলবে এবং পদ্মা সেতুর অর্থায়নের বিষয়টি সেখানে কোন প্রভাব ফেলবে না।
অর্থমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করার পর পরই আমরা ঘোষণা দেই যে, বাংলাদেশে বিনিয়োগ ব্যাপকভাবে বাড়াতে হবে। সেজন্য তিনটি সূত্রে আমাদের অধিকতর অর্থ সংগ্রহ করতে হবে। প্রথমটি হলো অভ্যন্তরীণ সূত্রে রাজস্ব আদায় বাড়াতে হবে এবং সেটা আমরা জোরেশোরেই করে যাচ্ছি। দ্বিতীয়ত, আমাদের মতো গরিব দেশে সহজ শর্তে যে বৈদেশিক সহায়তা দেয়া হয় তা যথেষ্ট নয় এবং সেটা বর্ধিত করা উচিত। অন্যদিকে সরাসরি যে বৈদেশিক বিনিয়োগ হয় সেটাও তুলনামূলকভাবে কম এবং সেটাও বাড়াতে হবে। বাস্তবে তিনটি ক্ষেত্রেই আমরা অগ্রগতি লক্ষ্য করি।
তিনি বলেন, ২০০৭-০৮ সালে বৈদেশিক সহায়তার অঙ্গীকার ছিল ২২৫৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং বৈদেশিক সহায়তা ব্যবহার হয় ১৬৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। পরবর্তী প্রতিটি বছরেই বৈদেশিক সহায়তার অঙ্গীকার এবং ব্যবহার অনেক বেড়ে গিয়েছে। ২০১১-১২ সালে এর পরিমাণ যথাক্রমে ৪৭৬৪ এবং ২১২৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। বৈদেশিক সরাসরি বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও আমরা অনেক এগিয়ে গেছি। যদিও আমার ব্যক্তিগত হিসাবে তা আশানুরূপ হয়নি। গত বছর ২০১১-১২ সালে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ হয়েছে ১৩০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা এর আগে কখনও হয়নি। এসব ইতিবাচক অর্জনের প্রেক্ষাপটে আমি মনে করি যে আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন সম্ভব হবে ইনশাল্লাহ।
নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, অর্থনীতির জন্য পদ্মা সেতু একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প এবং দক্ষিণ বাংলার অর্থনৈতিক জীবনে এই সেতুর প্রভাব হবে সুদূরপ্রসারী। প্রকল্পটির এই গুরুত্বটি আমাদের সব উন্নয়ন সহযোগী মেনে নিয়েছেন। এই প্রকল্পটিতে ইতোমধ্যে চীন, মালয়েশিয়া এবং পরোক্ষভাবে ভারত তাদের আগ্রহ দেখিয়েছে। আমরা মনে করি যে বর্তমানে অর্থায়নকারী উন্নয়ন সহযোগীরা প্রকল্পটির অর্থায়নে ভবিষ্যতে রাজি হতে পারেন।
তিনি বলেন, সেতুর বাস্তবায়নে কিছু কাজ আমরা সম্পন্ন করেছি। অবশিষ্ট কাজের মধ্যে রয়েছে সেতু নির্মাণের ঠিকাদার নিয়োগ, সেতু নির্মাণের জন্য পর্যবেক্ষণ পরামর্শক নিয়োগ, নদীশাসনের জন্য ঠিকাদার নিয়োগ, সার্ভিস এরিয়া প্রস্তুতির জন্য ঠিকাদার নিয়োগ, জাজিরা এ্যাপ্রোচ রোড নির্মাণ এবং মাওয়া এ্যাপ্রোচ রোড নির্মাণ। এসব বিভিন্ন কাজে মোট ৩ হাজার ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থাৎ ২৪ হাজার ৩৯৪ কোটি টাকা লাগবে। এই ব্যয়ের জন্য আমাদের অর্থ সাশ্রয় এখন থেকে চার বছরের মধ্যে করতে হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমরা এসব কাজ আমাদের নিজস্ব ব্যয়ে সম্পূর্ণ করতে চাই। এজন্য যে বিষয়টির দিকে আমাদের প্রথমেই নজর দিতে হবে সেটি হলো, নিজস্ব সম্পদ থেকে মোট ১৮শ’ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের সমমানের বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহ। আমরা মনে করি যে, পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন ২০১২-১৩ অর্থবছরে শুরু হবে এবং পরবর্তী তিন বছরে তা সম্পূর্ণ হবে। এই অর্থবছরে পদ্মা সেতুর জন্য বাজেটে যে বরাদ্দ রয়েছে তা আমাদের কিছু বাড়াতে হবে। পরবর্তী তিন বছরের জন্য পদ্মা সেতুর যে প্রাক্কলিত বাজেট আছে সেটি ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হবে।
তিনি বলেন, এই বিষয়ে অর্থ বিভাগ মধ্যমেয়াদী বাজেট কাঠামোয় যে আগামী বছরগুলোর ব্যয়ের হিসাব দিয়েছে সেটা পরিবর্তন করার উদ্যোগ ইতোমধ্যেই নেয়া হয়েছে। সংশোধিত বাজেট সম্বন্ধে আমি যখন আমাদের চিন্তা-ভাবনা তুলে ধরব তখন এ সম্বন্ধে আরও বক্তব্য রাখার ইচ্ছা রাখি। আমরা ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে পদ্মা সেতুর ডিজাইন বা প্রাক্কলিত হিসাবে আমরা কোন পরিবর্তন করছি না।
দেশবাসীর উদ্দেশে অর্থমন্ত্রী বলেন, সবাইকে বুঝতে হবে যে, বাংলাদেশের অর্থনীতি এখন যে অবস্থায় আছে সেই অবস্থানটি চার-পাঁচ বছর আগে চিন্তাও করা যেত না। এই সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করে অর্থবছর ২০০৮-০৯ সালের মধ্যভাগে, জানুয়ারি ২০০৯ সালে। পূর্ববর্তী অর্থবছর ২০০৭-০৮-এ আমাদের বার্ষিক বাজেট ছিল ৯৩ হাজার ৬০৮ কোটি টাকা। যার মধ্যে অভ্যন্তরীণ সূত্রে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৬০ হাজার ৫৩৯ কোটি টাকা। এই বছর অর্থাৎ ২০১২-১৩ অর্থবছরে আমাদের বাজেট হলো এক লাখ ৯১ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ সূত্রে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা হলো এক লাখ ৩৯ হাজার ৬৭০ কোটি টাকা। এই বাস্তবতার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে পদ্মা সেতুর বাস্তবায়ন নিজস্ব অর্থে করা মোটেই অসম্ভব নয়। যদিও এর জন্য অন্যান্য খাতে খরচ কিছু কমাতে হবে অথবা রাজস্ব সূত্রে আদায় আরও বাড়াতে হবে। এই বছরে রাজস্ব আদায়ের যে লক্ষ্যমাত্রা আছে সেটা আমি মনে করি আমরা বাস্তবে অতিক্রম করে যাব।
অর্থমন্ত্রী পদ্মা সেতু প্রকল্পে উত্থাপিত দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পে ইতোমধ্যেই আমরা প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার মতো কার্যক্রম বাস্তবায়ন করেছি। জমি অধিগ্রহণ এবং ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে এই ব্যয়টি হয়েছে এবং এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত দুর্নীতির কোন অভিযোগ পাইনি। দুর্নীতির যে অভিযোগ বিশ্বব্যাংক করেছে সেটি হচ্ছে দুর্নীতির সম্ভাবনা নিয়ে এবং এই অভিযোগটি করা হয়েছে বিভিন্ন কারণে। তার মধ্যে প্রথম কারণটি হচ্ছে বাংলাদেশের দুর্নীতির ক্ষেত্রে অত্যন্ত ন্যক্কারজনক রেকর্ড। দ্বিতীয় কারণটি হচ্ছে ঠিকাদারদের অভিযোগ প্রবণতা। তৃতীয় কারণ সম্ভবত বড় বড় প্রকল্পে বিখ্যাত ঠিকাদারদের দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ।
তিনি বলেন, চারদলীয় জোট সরকারের আমলে দুর্নীতি এত ব্যাপক হয় যে, বিশ্বব্যাংক সড়ক ও জনপথ খাতে সহায়তা দেবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই সিদ্ধান্ত তারা পরিবর্তন করে বলতে গেলে পরীক্ষামূলকভাবে পদ্মা সেতুর অর্থায়নে অংশগ্রহণ করে। এখানে প্রথম থেকেই তারা নানা অভিযোগ পেতে শুরু করে এবং দেখা যায় যে, ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই ওই বিষয়ে তারা নানা অনুসন্ধান চালায় এবং এজন্য আমাদের অসৎ ব্যক্তিরাই মূলত দায়ী। আমাদের ঠিকাদারের মধ্যে অভিযোগ প্রবণতা বিশ্বব্যাংককে অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বনে বাধ্য করে। এসব অভিযোগ যে যথাযথ হয় না তার প্রমাণের কোন অভাব নেই।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিশ্বব্যাংকের তরফ থেকেই পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রতিষ্ঠানের পছন্দের তালিকা প্রণয়নের সময় তারা একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য (চীনের সিআরসিসি) অনেক দেনদরবার করে। কিন্তু অবশেষে দেখা যায়, এই দেনদরবারটি একান্তই একটি জালিয়াতির কারণে অনুষ্ঠিত হয়। যে প্রতিষ্ঠানের জন্য পুনর্বিবেচনা দাবি করা হয় সেই প্রতিষ্ঠান কোনদিনই পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন করেনি এবং তাদের হয়ে তাদের বাঙালী এজেন্ট ভেন্চুরা ইন্টারন্যাশনাল জালিয়াতি করে অভিযোগ প্রদান করে। এক বিবেচনায় বলা চলে যে এই প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগের প্রধান সূত্র হচ্ছে আমাদের নিজেদের স্বার্থান্বেষী কতিপয় মানুষ।
উত্থাপিত দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, আমরা বিশ্বব্যাংকের অভিযোগ বিশেষভাবে আমলে নেই এবং তদন্তকাজ ২০১১ সালের অক্টোবর মাসেই শুরু করি। বিশ্বব্যাংক যেসব তথ্য দিয়েছে সেগুলো নিয়ে তদন্ত কাজ এগিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে দুদক প্রথমেই বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ করে। বিশ্বব্যাংকের প্রথা অনুযায়ী তারা যে সূত্রে তথ্য আদায় করে তা তারা কাউকে বলতে পারে না। আর এজন্য তাদের দেয়া তথ্যপ্রমাণে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। তাই দুর্নীতি দমন কমিশনকে নানা উপায়ে বিভিন্ন ঠিকাদারদের সাক্ষ্য গ্রহণ করতে হয় এবং অন্য অভিযোগকারীদের প্রশ্ন করার ব্যবস্থা নিতে হয়।
অর্থমন্ত্রী আবারও দৃঢ়কণ্ঠে বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পে এখন পর্যন্ত কোন দুর্নীতি হয়নি। দ্বিতীয়ত, দুর্নীতির সম্ভাবনা নিয়ে যেসব কথা উঠছে তার প্রতিটি বিষয়ই আমাদের দুর্নীতি দমন কমিশন গভীরভাবে অনুসন্ধান করেছে এবং করছে। আমাদের লক্ষ্য হলো এই প্রকল্পে যেখানে আমাদের দেশের সকল মানুষ আগ্রহান্বিত এবং নিবেদিত সেখানে কোন ধরনের দুর্নীতি হতে আমরা দেব না। পদ্মা সেতুতে উন্নয়ন সহযোগীদের অর্থায়ন আর নেই। কিন্তু তারা যেসব দুর্নীতির ষড়যন্ত্রের কথা বলছেন সেগুলো আমরা তদন্ত করছি এবং তদন্ত চূড়ান্ত করে তার প্রতিকার করব। আবেগজড়িত কণ্ঠে অর্থমন্ত্রী বলেন, জীবন সাহ্নান্নে পৌঁছে এই সেতু নির্মাণ প্রকল্পে যুক্ত হতে পেরে আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি এবং আমি ওয়াদা করছি যে সর্বশক্তি দিয়ে এই প্রকল্পের বাস্তবায়ন প্রকৌশলী দৃষ্টিকোণ থেকে যাতে সার্থক হয় তার ব্যবস্থা আমরা করছি।

No comments

Powered by Blogger.