ঢাকায় জামায়াত শিবিরের ৪১ স্থায়ী গোপন আস্তানা- নাশকতার প্রস্তুতি by গাফফার খান চৌধুরী

 জামায়াত-শিবির ও জঙ্গীরা ঢাকায় বড় ধরনের নাশকতা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। মিলিত হচ্ছে গোপন আস্তানায়। চলছে ঘন ঘন বৈঠক। ঢাকা ও তার আশপাশের জামায়াত-শিবিরের ৪১টি স্থায়ী গোপন আসস্তানার সন্ধান পেয়েছে গোয়েন্দারা।
আস্তানাগুলোর বেশির ভাগই জামায়াত-শিবিরের নিজস্ব। নাশকতা চালানোর উদ্দেশ্যে আস্তানা ও তার আশপাশের এলাকায় জামায়াত-শিবির ও জঙ্গীদের সমাবেশ ঘটানো হচ্ছে। ঢাকার বাইরের সব ক্যাডারদের ঢাকায় তলব করা হয়েছে। ঢাকায় কয়েক হাজার ছাত্র শিবির ক্যাডার অবস্থান করছে। বড় ধরনের নাশকতা চালাতে নির্দেশের অপেৰায় রয়েছে তারা।
সম্প্রতি সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে গোয়েন্দা সংস্থার পাঠানো এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, ছাত্র শিবির ঢাকায় অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এজন্য শিবির নেতাকর্মীরা ঢাকা ও তার আশপাশের ৪১টি গোপন আস্তানায় মিলিত হচ্ছে। এসব আস্তানা জামায়াত-শিবিরের স্থায়ী ঘাঁটি। আসত্মানার অবস্থান অনুযায়ী সেই সব এলাকায় আক্রমণ করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। প্রয়োজনে সংবলিতভাবে ঢাকায় আক্রমণ চালানো হতে পারে। জঙ্গীরাও এসব আসত্মানায় যাতায়াত করে। সম্প্রতি ঢাকায় শিবির ক্যাডারদের আনাগোনা বেড়েছে। আস্তানাগুলো জামায়াত-শিবির ও জঙ্গীদের ঘাঁটি।
আসত্মানাগুলো হচ্ছে, যাত্রাবাড়ী থানাধীন দয়াগঞ্জ মসজিদ সংলগ্ন মেস, নিউমার্কেট এলাকার এলিফ্যান্ট রোডের ৫১ নম্বর বাড়ির নিচতলা থেকে ৫ম তলা পর্যনত্ম বিশ্ববিদ্যালয় শিৰক মেস ও এলিফ্যান্ট রোড়ের ৬৬ নম্বর বাড়ির নিচতলা থেকে ৫ম তলা পর্যনত্ম টিনসেড মেস, পল্টনের গ্রান্ড আজাদ হোটেলের পিছনের মেস, মগবাজার জামায়াত অফিস সংলগ্ন মেসগুলো, কলাবাগান থানাধানী বশির উদ্দিন রোড় মসজিদ সংলগ্ন ৫তলা ভবন, দারম্নল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরা ও ধানম-ি ক্যাম্পাসের আশপাশের একাধিক মেস, বাড্ডার এ/১৬৭/৫ নম্বর বাড়ির ইসলামি সমাজ কল্যাণ ট্রাস্ট, আশুলিয়ার ডা-াবর এলাকার ডা-াবর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশের মসজিদ মেস, আশুলিয়ার সিন্দুরিয়ার এলাকার সিন্দুুরিয়া মাদ্রাসা, কামরাঙ্গীরচর থানাধীন আল-আমিন মাদ্রাসা ও তৎসংলগ্ন মেস, উত্তরা ও তুরাগ থানা এলাকার ৫ নম্বর সেকশনের ৬/এ নম্বর রোড়ের ইসলামিক এডুকেশন সোসাইটি হোস্টেল (আইইএস), উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরের ১৮ নম্বর রোড়ের ৪৫ নম্বর বাড়িতে অবস্থিত আইডিয়াল হোম, নিউমার্কেট এলাকার এলিফ্যান্ট রোড়ের ২৬৪ নম্বর বাড়ি, উত্তরার ৬ নম্বর সেক্টরের ১ নম্বর রোড়ের ১ নম্বর বাড়ি, উত্তরার ১৪ নম্বর সেক্টরের ১৩ নম্বর রোড়ের ১১ নম্বর বাড়ি, দৰিণখান থানাধীন দৰিণ গাওয়াইরের ৬৭২ নম্বর জয়নাল আবেদীনের বাড়ি, মিরপুর ১৩ নম্বর কাফরম্নল এলাকার কমিশনার কার্যালয়ের পিছনের মেস, গেন্ডারিয়ার ৫২ নম্বর সতীশ সরকার রোড়ের কাজী মনিরম্নজ্জামানের বাড়ি, সতীশ সরকার রোড়ের ১৫/১ নম্বর জাকির হোসেনের বাড়ি, সূত্রাপুরের বানিয়ানগর এলাকার ৪৫/২ মনির হোসেনের বাড়ি, গে-ারিয়ার শশীভূষণ চ্যাটার্জী লেনের ১২/১/এ নম্বর আবুল হোসেনের বাড়ি, গে-ারিয়ার সতীশ সরকার রোড়ের আদর্শ একাডেমীর উত্তর দিকের বাড়িটি, ২৫ নম্বর শিরিশদাস লেনের আধুনিক প্রেস ও প্রকাশনীর ৬তলা বাড়ি, সূত্রাপুরের পাতলা খান লেনের ৬ নম্বর বাবুল বেপারীর বাড়ি, ১১/১ নম্বর হাজী সালাউদ্দিন ওরফে খসরম্নর বাড়ি ও ৩০ নম্বর সফিকুর রহমানের বাড়ি, তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানাধীন মধ্যকুনী পাড়ার নুর ফার্মেসীর গলির হাবিব মিয়ার ৪তলা বাড়ি ও মধ্যকুনীপাড়ার পাটোয়ারী ভবন। এ বাড়ি ২টি তেজগাঁও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিবির নেতাকর্মীদের ঘাঁটি। কোতোয়ালির কবিরাজ গলির আরাফাত প্রেসের মালিকের ২/১ নম্বর বাড়ি। বংশাল থানাধীন নবাবপুরের ব্র্যাক ব্যাংকের শাখা ভবনের ৬তলা বাড়ি, আজিমপুরের ইঞ্জিনিয়ার এমএ আজিজের ৪৪/এইচ নম্বর চায়না বিল্ডিং, নিউমার্কেট থানাধীন কাঁটাবন ঢালের ২৬৬ নম্বর বাড়ি, শাহবাগ থানাধীন চৌমুহনী বিল্ডিংয়ের পাশের ফোকাস কোচিং ভবন, মিরপুর-২ এর সেনপাড়া পর্বতার ৩৯ নম্বর সমাজ কল্যাণ মসজিদের ২য় তলার মেস, শেরেবাংলানগর থানাধীন হোটেল নিদ মহলের পেছনের শুক্রাবাদের ১০১ ও ১০১/এ নম্বর বাড়ি, শাহজাহানপুরের সামনে গ্যারেজের পাশের মেস ও রেলওয়ে কলোনীর বেশ কয়েকটি বাড়ি ও শাহজাহানপুরের বেনজীর বাগানের লন্ডনী বাড়ি।
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, এসব বাড়ি ছাত্র শিবিরের স্থায়ী ঘাঁটি। বিভিন্ন সময় এসব বাড়িতেই শিবির নেতাকর্মীরা একত্রিত হয়। এসব আসত্মানা থেকে তারা গোপন কার্যক্রম চালায়। সারাদেশে চিরম্ননি অভিযানের কারণে শিবির আসত্মানা ছেড়ে আত্মগোপন করেছে। তবে গোপনে সংগঠিত হয়ে বড় ধরনের নাশকতা চালাতে পারে। এসব আসত্মানা থেকেই শিবিরের ঢাকায় সমসত্ম কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

No comments

Powered by Blogger.