স্টাইল- স্টাইলিশ সুমন by তৌহিদা শিরোপা

অর্থহীনের সুমন ওরফে বেজবাবা। চোখের সামনে ভেসে ওঠে কালো সানগ্লাস, কালো শার্ট আর হাতে বেজ গিটার। মঞ্চের ভাবগম্ভীর মানুষটি কিন্তু ব্যক্তিগত জীবনে প্রাণোচ্ছল, আমুদে। তিনি যে প্রচণ্ড শৌখিনও, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। কালো রঙের পোশাক, সানগ্লাস সারা বছরই পরেন।
কেলভিন ক্লেইন, জারা ব্র্যান্ডের শার্ট-স্যুট পছন্দের তালিকার শীর্ষে। প্যান্টের মধ্যে লিভাইস। ফরমাল হোক আর ক্যাজুয়াল কোনো অনুষ্ঠানই হোক, সব সময় শার্ট, জিনস পরেন। শীতে অবশ্য স্যুট-কোট পরেন, তাও সেই কালো।
সানগ্লাস আর হাতঘড়ি সংগ্রহ কখন শখের পর্যায়ে চলে গেছে, তা নিজেও জানেন না সুমন। হিউব্লো, ট্যাগ হিউয়ার, প্যানেরাই, কোয়ার্টজ, রোলেক্স ও ওমেগা ব্র্যান্ডের নানা নকশার ঘড়ি পরেন তিনি। ওকলে, রে ব্যান, কেলভিন ক্লেইনের কালো সানগ্লাস তাঁর ট্রেডমার্ক হলেও এসব ব্র্যান্ডের নীল, লাল ও বাহারি রঙের সানগ্লাসও তিনি পরে থাকেন।
ব্র্যান্ডের বাইরে কি কিছু পরেন না? হেসে উত্তরে বলেন, ‘আসলে তা নয়। একটা সময় অনেক মোটা ছিলাম। তখন চাইলেও মনের মতো পোশাক পরতে পারতাম না। এখন পরি। এ ধরনের ব্র্যান্ডের পোশাকের বাইরে ব্র্যান্ডবিহীন পোশাকও পরা হয়।’
গানের জগতের এই মানুষটি খুব অভিযানপ্রিয়। সুযোগ পেলেই নর্থফেসের ব্যাকপ্যাক, কার্গো প্যান্ট ও জুতা পরে বেরিয়ে পড়েন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ি চালানোও তাঁর শখ। একবার যুক্তরাষ্ট্রে টানা ৩০ ঘণ্টা গাড়ি চালিয়েছিলেন তিনি। শুধু বিদেশ নয়, বাংলাদেশের সব জেলাতেই গাড়ি চালিয়ে তিনি ঘুরেছেন। বেড়ানোর ফাঁকে সুমন ক্যামেরাবন্দী করেন প্রাকৃতিক দৃশ্য। সংগ্রহে আছে ক্যাননের নানা ধরনের লেন্স।
যেসব গিটার বাজিয়ে গান করেন তিনি, তার সবই বিখ্যাত ব্র্যান্ডের। বিশ্বখ্যাত গিটারের ব্র্যান্ড ‘এমটিডি’র বেজ গিটারই বাজান তিনি। তাঁর জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয় এই গিটার। নিজের সাজসজ্জার দিকে তেমন নজর না দিলেও হলিউডের আয়রনম্যান চলচ্চিত্রের টনি স্টার্ক চরিত্রকে অনুকরণ করেন তিনি। সাজসজ্জার জন্য অন্য কিছু ব্যবহার না করলেও সুগন্ধি ছাড়া চলে না। বুলগেরির অ্যাকোয়া, গুচি ও কেলভিন ক্লেইনের কোলন তাঁর বেশি প্রিয়। আফটার শেভের ক্ষেত্রেও বুলগেরি ও কেলভিন ক্লেইনকেই বেছে নেন। ডিভিডি সংগ্রহ করাও তাঁর অন্যতম প্রিয় কাজ।
জুতার মধ্যে বেইলি, ড্যাপার ব্র্যান্ডকেই বেছে নেন সুমন। শরীরে কর্কট রোগ বাসা বাঁধলেও তিনি মানসিক শক্তি দিয়ে সেটি জয় করছেন। সুমন বলেন, ‘আমি মনে করি জীবনটা অনেকটা ষড়ঋতুর মতো। ভালো-খারাপ সময় পাশাপাশি থাকে। আমার খারাপ সময় কেটে গিয়ে ভালো সময় এসেছে। এখন আমি সুস্থ।’
একসময় ভোজনরসিক হলেও এখন অবশ্য আগের মতো খেতে পারেন না। স্যুপ, কফিই তাঁর সঙ্গী। শুধু কফি খানই না, ভালো কফি বানানও তিনি। ঢাকার উত্তরার বাসার কফিবারটা দেখলেই বোঝা যায় সুমনের কফি আসক্তি। সংগ্রহে আছে দেশ-বিদেশের নানা আকারের নান্দনিক সব কফির মগ আর কফি তৈরির যন্ত্র। শৌখিন মানুষ বলে কথা!

সুমনের ওজন কমার রহস্য
১৮৪ কেজি থেকে ৮৭ কেজি। একবারে এত ওজন কীভাবে কমানো সম্ভব? উত্তরে সুমন একটা রহস্যময় হাসি দেন। রহস্য উন্মোচন করে বলেন, ‘দেড় বছর নিয়মিত ব্যায়াম করেছি। ডায়েটে কোনো শর্করা ছিল না। শুধু আমিষ খেয়েছি।’ ২০০৭ সালের দিকে প্রথম দফায় ওজন কমিয়েছেন তিনি। আবার দুই বছর আগে দ্বিতীয় দফায় ওজন কমান। তবে সবার জন্য সুমনের পরামর্শ, এভাবে ওজন না কমিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ডায়েট ও ব্যায়াম করা উচিত।

সুমনের রেসিপি
লাত্তে ক্যাপুচিনো কফি
স্টারবার্কসের ক্যাফে ভেরানো ও এসপ্রেসো রোস্টের কফি বিন নিতে হবে। এরপর একে গুঁড়া করে নিয়ে সাদা চকলেট পাউডার মিশিয়ে এসপ্রেসোর শটস বানিয়ে নিতে হবে। এরপর দুধের সঙ্গে ভ্যানিলা পাউডার ও চকলেট পাউডার মিশিয়ে ক্যাপুচিনো তৈরি করে আগের এসপ্রেসো শটস সঙ্গে মিশিয়ে নিতে হবে। হয়ে গেল লাত্তে ক্যাপুচিনো কফি।

No comments

Powered by Blogger.