জামায়াতে ইসলামীর বিচার by বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর

জামায়াতে ইসলামের অবৈধ প্রাইভেট টিরেনি উচ্ছেদ করার সময় এসেছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক সরকারের প্রশ্রয় পেয়ে জামায়াতে ইসলামী শক্তি সঞ্চয় করেছে।
এই শক্তি এখন তারা ব্যবহার করছে সেন্ট্রিস্ট রাজনীতি ধ্বংস করার জন্য এবং তাদের কথিত ইসলামী রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করার জন্য। এই লৰ্যে তারা দেশের বিভিন্ন স্থানে গোপন অস্ত্রাগার গড়ে তুলেছে, যুবকদের অস্ত্র শিৰার ট্রেনিং দিচ্ছে, মাথা থেকে সুস্থ চিন্তা দূর করে বেহেশতের পাসপোর্ট ইস্যু করছে। একই সঙ্গে ব্যাংক, বীমা, এনজিও তৈরি করে কর্পোরেট আন্দোলন শুরু করেছে। এ হচ্ছে পশ্চাৎপদ দেশে ধনতান্ত্রিক ব্যবস্থার এক ধরন। এই ধরনের একদিকে আছে যারা বিরোধী কিংবা প্রতিযোগী তাদের হত্যা করা, অন্যদিকে আছে ধনতন্ত্রের বর্বরতা আরোপ করা।
জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশকে দু'ভাগে বিভাজিত করে রেখেছে। একদিকে আছে জামায়াতে ইসলামী (এবং তার অঙ্গ সংগঠন বিএনপি : কথাটা এভাবে বলা অসঙ্গত নয়), অন্যদিকে আছে সেন্ট্রিস্ট রাজনীতিতে বিশ্বাসী বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। আবার পাওয়ার সিস্টেমের একদিকে আছে সরকার, অন্যদিকে আছে কর্পোরেট সিস্টেম। জামায়াতে ইসলামী যুবকদের ব্যবহার করে রাষ্ট্রবিরোধী গোপন অস্ত্রাগার গড়ে তুলেছে এবং কর্পোরেট আন্দোলনের মাধ্যমে রাষ্ট্রের সমানত্মরালে সবুজ ধনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে। এই অর্থ ব্যবহৃত হচ্ছে অস্ত্র ক্রয় ও ট্রেনিংয়ের জন্য, অপরদিকে এই অর্থ ব্যবহৃত হচ্ছে রাষ্ট্রের সমানত্মরাল কর্পোরেট সিস্টেম শক্তিশালী করার জন্য।
এই ৰেত্রে রাষ্ট্র কি করছে? রাষ্ট্র অর্ধমনস্কভাবে জামায়াতে ইসলামীকে কনফ্রন্ট করছে। জামায়াতে ইসলামী তার সশস্ত্র ক্যাডার এবং সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের কাছে প্রমাণ করার চেষ্টা করছে : বাংলাদেশ রাষ্ট্র দু'ভাগে বিভক্ত, একভাগে আছে জামায়াতে ইসলামীর রাষ্ট্রব্যবস্থা, অন্যভাগে আছে বাংলাদেশের বৈধ রাষ্ট্রব্যবস্থা। বৈধ রাষ্ট্রব্যবস্থার বিরোধিতা করে তার জায়গায় তৈরি করার চেষ্টা করছে জামায়াতে ইসলামীর অবৈধ ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থা কতদূর পর্যনত্ম মানা যায়? বৈধ রাষ্ট্রব্যবস্থা, দেরিতে হলেও, ঘুম থেকে জেগে উঠছে এবং কনফ্রন্ট করছে অবৈধ ব্যবস্থা এবং তার সহযোগী অঙ্গ সংগঠন। এই প্রথম, বহুদিন পর, বর্বরতার দায়ে অভিযুক্ত জামায়াতে ইসলামী ক্যাডারদের গ্রেফতার করা শুরম্ন করেছে, গোপন অস্ত্র ভা-ারে হানা দেয়া শুরম্ন করছে।
যেসব সরকারী কর্মচারী এবং পুলিশ জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে দহরম মহরম করছে, তাদের বরখাসত্ম করা জরম্নরি। এক রাষ্ট্রে দুই হুকুমত চলতে পারে না। বদমাসদের সঙ্গে আঁতাত করে যারা টিকে আছে, তাদের তালিকা প্রকাশ করা জরম্নরি। মানুষ জানুক এদের মুখোশ। মানুষ জানুক এদের চরিত্র।
ইসলামী অর্থনীতি, ইসলামী রাজনৈতিক ব্যবস্থা বলে কিছু আছে কি? সৌদি আরবে, সৌদি রাষ্ট্রব্যবস্থা নিয়ন্ত্রিত অর্থনীতি ছাড়া অন্য কিছু আছে কি? বাহরাইনে, কুয়েতে, কাতারে, ইয়েমেনে স্ব-স্ব রাষ্ট্রব্যবস্থা নিয়ন্ত্রিত অর্থনীতি ছাড়া অন্য কিছু আছে কি? কিংবা ইসলামী রাজনৈতিক ব্যবস্থা বলে কিছু আছে কি? জামায়াতে ইসলামী গরিব বাংলাদেশে ভ-ামির চূড়ানত্ম করে রাজনীতি ও অর্থনীতির ইসলামী প্রকাশ করে চলেছে। এই একাংশের বিরম্নদ্ধে রম্নখে দাঁড়াবার সময় এসেছে।
বাংলাদেশের মানুষ অন্যায়ের সঙ্গে আপোস করে বেঁচে থাকে না। প্রতিরোধ করার ৰেত্রে হয়ত সময় নেয়। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচারে সময় নিয়েছে, এ সত্য, কিন্তু শেষ পর্যনত্ম বিচার করে হত্যাকারীদের ফাঁসিতে ঝুলিয়ে দিয়েছে। দেরি হবার কারণে, সন্দেহ তৈরি হয়েছে : বিচার কি শেষ পর্যনত্ম হবে। জামায়াতে ইসলামী সকল অর্থে যুদ্ধাপরাধী। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সংবিধান মোতাবেক হবে এবং যুদ্ধাপরাধীদের শাসত্মি হবে। বিচার দেরি হওয়াতে জামায়াতে ইসলামীর নেতা এবং ক্যাডাররা ভাবছে, হয়ত বিচার শেষ পর্যনত্ম হবে না, তাদের পাপের শাসত্মি হবে না। এতে জামায়াতে ইসলামীর দুরাশা, সেই কথা ভেবে তারা আবার হত্যার রাজনীতি শুরম্ন করেছে।
তাদের হত্যার রাজনীতির সময় ফুরিয়ে এসেছে। তাদের ভরসা বিএনপির সাহায্যে তারা পুলসেরাত পারি দিতে সৰম হবে। বাংলার মানুষ, দেরিতে হলেও জেগে ওঠে। জামায়াতে ইসলামীর শাসত্মি হবার হবেই। জলস্নাদ তোমার মুক্তি নেই।

No comments

Powered by Blogger.