কক্সবাজাওে হোটেল মোটেল জোনে ৫৯ পস্নট বাতিল- ভারত-শ্রীলঙ্কার প্রত্যাশিত ফাইনাল আজ

আরিফুর রহমান বাবু ধরা যাক ভারত ও শ্রীলঙ্কার এক দল ফাইনালে আসেনি। রবিন লীগ থেকেই ছিটকে পড়েছে। এই দুই মহাশক্তির এক দলকে পেছনে ফেলে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। তাহলে কি সেটাকে প্রত্যাশিত ফাইনাল বলা হতো? নিশ্চয়ই না।
ভারত-শ্রীলঙ্কার যে কাউকে টপকে শাকিব, তামিম, আশরাফুল, মুশফিকুর ও রিয়াদদের ফাইনালে ওঠা বড় চমক বলেই গণ্য হতো। গোটা দেশে সাড়া পড়ে যেত। ক্রিকেট বিশ্বও নড়েচড়ে বসত। আইডিয়া কাপের ফাইনাল হয়ে উঠত টক অব দ্য কান্ট্রি। কিন্তু বাসত্মবতা হচ্ছে, তা হয়নি। ফাইনালে ওঠা বহুদূরে, টাইগাররা একটি ম্যাচও জিততে পারেনি। সব ম্যাচ হেরে বিদায় নিয়ে এখন ভারতের সঙ্গে টেস্ট সিরিজের প্রস্তুতি নিচ্ছে শাকিব বাহিনী। স্বাগতিকদের এ বিদায় অপ্রত্যাশিত নয়। ক্রিকেট বিশ্বে অবস্থান, শক্তি-সামর্থ্য সব হিসেবেই ভারত-শ্রীলঙ্কা ঢের এগিয়ে। ফেবারিটও। ওই দুই দলের ফাইনালও তাই স্বাভাবিক। প্রত্যাশিতও। আজই সে প্রত্যাশিত ফাইনাল। বুধবারই সে লড়াই, সে মহারণ। রাজধানী ঢাকা এর আগে এমন অনেক ফাইনাল দেখেছে। দুই বছর আগে এই মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ভারত-পাকিসত্মান কিটপস্নাই তিন জাতি কাপের ফাইনাল খেলেছিল। তবে সেই ফাইনাল নিয়ে ঢাকাবাসীর সঙ্গে গোটা বাঙালীর যে উৎসাহ-আগ্রহ ছিল, আজকের ফাইনাল নিয়ে ততটা নেই। তার পরও ভাবা হচ্ছে রবিন লীগের যে কোন খেলার চেয়ে আজ বেশি দর্শক হবে। তবে ভারত সহঅধিনায়ক বীরেন্দর সেবাগ তা মনে করেন না। ব্রেট লি, শোয়েব আখতার, মাখায়া এনটিনিদের যখন-তখন অফস্টাম্পের বাইরে ফ্যাশ করে সীমানা ছাড়া করার মতো মঙ্গলবার একঝাঁক সংবাদকমর্ীর সামনে অবলীলায় বলে দিয়েছেন, আমার মনে হয় না খুব বেশি দর্শক হবে। সেবাগ যাই মনে করম্নন না কেন, বিসিবির কর্মকর্তাদের ধারণা_ দর্শক হবে। সেটা কমবেশি যাই হোক। জোর লড়াইয়ের সম্ভাবনা আছে যথেষ্টই। সেটা দু'দলের রবিন লীগ ম্যাচেই বোঝা গেছে। দু'বারের লড়াইয়ে ধোনি ও সাঙ্গাকারার দল জিতেছে একবার করে। বলার অপো রাখে না, দু'বারই রান তাড়া করা দল জিতেছে। আজও দুই শিবিরই সন্ধ্যার পর ব্যাট করতে চাইছে। দু'দলের ল্য, আগে টস জেতা। তার পর অবধারিতভাবে ফিল্ডিং করা। সেটা যে শিশিরের কারণে, তা আর নতুন করে বলার বোধকরি দরকার নেই। সেই আসর শুরম্নর আগে থেকেই শিশির সবচেয়ে আলোচিত ইসু্য। বুধবারের ফাইনালের আগেও সবকিছু পেছনে ফেলে শিশিরই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। দু'দল একে অপরকে যতটা ভয় পাচ্ছে, সমীহ করছে, তারচেয়ে অনেক বেশি ভয় শিশিরকে। কোন পই সন্ধ্যার পর বোলিং করতে নারাজ। কিন্তু শুধু চাইলেই তো আর হবে না। এ জন্য আগে টস জিততে হবে। সে টস জেুার তো আর কৌশল নেই। ভাগ্যই পারে টস জেতাতে। সেটা কে পাবেন_ ধোনি, না সাঙ্গাকারা? সেটা খেলা শুরম্নর আধঘণ্টা আগেই জানা যাবে। ফাইনালে সব হিসেব বদলে না গেলে তখনই ম্যাচের সম্ভাব্য ভাগ্যও গড়ে উঠবে।
শিশির যতই ভূমিকা রাখুক, সচেতন ক্রিকেট অনুরাগীদের কেউ কেউ অন্য কথাও বলছেন। তাদের কথা, দু'দল যতই শিশির বলে গলা ফাটাক না কেন, ফাইনালে আগে ব্যাট করা দলও জিতে যেতে পারে। কিভাবে? কেন অনেক রান করে। ২৯৬ আর ২৭৯ রান করা দল তো হেরেছেই। তারচেয়ে আরও বেশি রান দরকার। সেবাগের ভাষায়, সাড়ে তিন শ' দরকার।
ক্রিকেট খেলাই এমন_ যা বেশি ভাবা হয়, যাকে প্রায় স্বতঃসিদ্ধ বলে মনে হয়, সেটাই বদলে যায়। শিশিরভেজা মাঠ-উইকেট-বলে আগের ছয় ম্যাচে পরে বোলিং করা দল পরাজয়ের হতাশায় ডুবেছে। আজ উল্টোটাও হতে পারে।
এদিকে গত প্রায় দেড় মাস ধরে ভারত ও শ্রীলঙ্কা নিজেদের সঙ্গে খেলছে। টেস্ট, ওয়ানডে আর টি২০ সিরিজ_ সবই হয়েছে। এর অল্প কিছুদিন পর বাংলাদেশে আইডিয়া কাপ ফাইনাল। দু'দলের বিশেষ করে ভারতীয়দের কাছে এটা আর একটি লড়াই ছাড়া কিছুই নয়। তবে ভারতের মাটিতে না পারা লঙ্কানদের কাছে এটা প্রতিশোধের ম্যাচ। সে কারণেই ধোনি বাহিনীর চেয়ে সাঙ্গাকারার দল একটু বেশি সিরিয়াস। ফাইনালের আগে কাল লঙ্কানরা যতটা জান লড়িয়ে প্র্যাকটিস করলেন, ভারতীয়রা ততটা নয়। লঙ্কানদের নিবিড় প্র্যাকটিস সেশনের বিপরীতে ভারতীয়দের ছিল ঐচ্ছিক প্র্যাকটিস। তাতে কিছু আসে-যায় না। খেলার আগের দিন যতটা সম্ভব কম অনুশীলন করে নির্ভার থাকা দলের জায়গামতো জ্বলে ওঠাও কম নয়। এখন জায়গামতো কোন্ দল জ্বলে ওঠে সেটাই দেখার।

No comments

Powered by Blogger.