জামায়াত-শিবিরের মিথ্যাচারের রাজনীতি

চট্টগ্রামে গত বৃহস্পতিবার সন্ত্রাসী হামলায় নিহত চবি ছাত্র মহিউদ্দিন ও আহত মোহাইমেনুলকে শিবিরকর্মী দাবি করে বড় ধরনের বেকায়দায় পড়েছে জামায়াত-শিবির।
নিহত মহিউদ্দিনের পিতা ও পরিবারের প থেকে চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলে দেয়া হয়েছে, সে কখনও শিবির করেনি এবং শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিল না। পাশাপাশি গ্রেফতারকৃত জামায়াত -শিবিরের ২০নেতাকর্মী রিমান্ডে জানিয়েছে, তাদের ভুল তথ্য দেয়ার কারণে মহিউদ্দিন হত্যার পর মিছিল করেছে। এ ২০ জনের মধ্যে অন্যতম হলো_ নগর জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক আহসান উলস্নাহ। অপরদিকে মহিউদ্দিন হত্যাকা-ের পর আহত চবি ছাত্র মোহাইমেনুল রবিবার রাতে পুলিশের কাছে ধরা দেয়ার পর জিজ্ঞাসাবাদে সেও বলেছে_ সে শিবির কমর্ী নয়, শিবিরের রাজনীতি সে সমর্থন করে না। সোমবার মোহাইমেনুলের চাচা, দু'ভাই, তিন বোন চট্টগ্রাম প্রেসকাবে সাংবাদিক সম্মেলন আহ্বান করে জোরালোভাবে দাবি করেছে, মোহাইমেনুল শিবিরকমর্ী নয়। জামায়াত- শিবির তাকে নিয়ে অপরাজনীতি করছে। মোহাইমেনুলের মা যুক্তরাষ্ট্রের নিউজার্সি থেকে টেলিফোনে দাবি করেছেন তার পুত্র শিবির রাজনীতি করে না।
গত বৃহস্পতিবার রাতে ষোলশহর রেলস্টেশনে সন্ত্রাসী হামলায় মহিউদ্দিন নিহত হয়। আহত হয় মোহাইমেনুল। তারা উভয়ে হলে যাবার জন্য পস্নাটফরমে হাজির হয়েছিল। হামলার ঘটনার পর থেকেই জামায়াত-শিবির এবং কেন্দ্রীয়ভাবে দাবি করে আসছে মহিউদ্দিন ও মোহাইমেনুল তাদের কমর্ী। ঘটনার পরদিন জামায়াত-শিবির রীতিমতো নিহত মহিউদ্দিনের নামে ব্যানার বানিয়ে গায়েবানা জানাজা এবং জঙ্গী মিছিল করে। মিছিলে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে গ্রেফতার হয়েছে ৮৬। মামলা হয়েছে অজ্ঞাতনামাসহ ৩ হাজার শিবিরকমর্ীর বিরম্নদ্ধে। এর মধ্যে সাতকানিয়া থেকে নির্বাচিত জামায়াতের এমপি মাওলানা শামসুল ইসলামও রয়েছেন। তাকে গ্রেফতারের জন্য সংসদে স্পীকারের নিকট অনুমোদন চাইবে বলে পুলিশ জানিয়েছে। সোমবার সংসদে শামসুল ইসলামকে দেখা গেছে।
মহিউদ্দিনের পিতাসহ পরিবারের প থেকে বলা হয়, সে শিবিরকমর্ী ছিল না এবং জামায়াত-শিবিরের প থেকেও মহিউদ্দিন শিবিরকমর্ী ছিল, এর কোন প্রমাণ আজ পর্যনত্ম দেখাতে পারেনি। পাশাপাশি মোহাইমেনুল নিজেকে শিবির কমর্ী নয় এবং জামায়াত-শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়; এমন দাবির পর মৌলবাদী জামায়াত-শিবিরের মিথ্যার বেসাতির রাজনীতিতে বড় ধরনের একটি চপেটাঘাত বলে ওয়াকিফহাল বিভিন্ন সূত্রের অভিমত। মোহাইমেনুল জীবিত থেকেই বলে যাচ্ছে, সে শিবির রাজনীতি করে না। মহিউদ্দিনের জীবিত থাকা অবস্থায় শিবির করার কোন প্রমাণ নেই। এখন প্রশ্ন উঠেছে, মহিউদ্দিনকে কি কবর থেকে উঠে এসে বলতে হবে, সে শিবির করে না?
সংশিস্নষ্ট সূত্র মতে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত শিবিরের নারকীয় তা-বের পর জামায়াত-শিবিরের প্রয়োজন ছিল একটি লাশ। চট্টগ্রামে মহিউদ্দিন লাশ হওয়ার পর অত্যনত্ম কৌশলে তারা লাশের রাজনীতি শুরম্ন করেছিল। কিন্তু বিধি বাম! নিহত মহিউদ্দিন ও আহত মোহাইমেনুলকে শিবিরকমর্ী বানাতে গিয়ে ধরা খেল জামায়াত-শিবির। খোদ নায়েবে আমির অধ্যাপক আহসান উলস্নাহ স্বীকার করেছেন, এটা ছিল তাদের জন্য ভুল তথ্য। এর পর জামায়াত-শিবিরের মিথ্যাচারের জবাব ও প্রমাণাদি আর কি হতে পারে। নিহত এবং আহত দু'ছাত্রকে টার্গেট করে যে অপরাজনীতি শুরম্ন করতে চেয়েছিল_ দু'টিই হয়েছে মিস ফায়ার।
এত কিছুর পর চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের প থেকে 'এ বর্বরতা ও জুলুমের শেষ কোথায়?' শিরোণাম দিয়ে সোমবার নগরজুড়ে লিফলেট ছাড়া হয়েছে। এতে রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত ঘটনায় তাদের প েসাফাই গাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি চবির নিহত ছাত্র মহিউদ্দিনকে আবারও শিবিরকমর্ী বলে দাবি করা হয়েছে। বিভিন্ন পত্রিকায় এ সংক্রানত্ম প্রকাশিত সংবাদকে জামায়াত মিডিয়ায় সন্ত্রাস ও অপপ্রচার বলে লিফলেটে দাবি করা হয়েছে। অপরদিকে, নগর জামায়াতের প থেকে গ্রেফতারকৃত জামায়াত-শিবির কমর্ীদের মুক্তি দাবি করে সরকারের বিরম্নদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানানো হয়েছে। অপরদিকে, চবি ছাত্র শিবিরের প থেকে নিহত মহিউদ্দিনকে তাদের কমর্ী দাবি করে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.