‘যেখানেই খেলি চাপ থাকে’

 এ নিয়ে দ্বিতীয়বার ফিফা ব্যালন ডি’অরে আসা হলো। অনুভূতি কী? নেইমার: এখানে আসতে পেরে আমি খুশি। বিশ্বের সব বড় খেলোয়াড়ের সঙ্গে এ রকম বড় একটা অনুষ্ঠানে আসা, শৈশবের নায়কদের সান্নিধ্য...আসলেই রোমাঞ্চকর একটা ব্যাপার।
 দক্ষিণ আমেরিকা ক্লাব ফুটবলের একমাত্র প্রতিনিধি আপনি। এটা কি উপলক্ষটাকে আরও বিশেষ করে তুলছে?
নেইমার: হ্যাঁ, বিশেষ একটা অনুভূতি তো বটেই। আমি মনে করি, আমি সঠিক পথেই আছি। লক্ষ্য পূরণ করতে পেরে আমি সন্তুষ্ট। আশা করব, এই ধারাবাহিকতা থাকবে। আগামীবারও আমি এখানে থাকব।
 বর্ষসেরা গোলের ফিফা পুসকাস পুরস্কারের জন্য টানা দুবার মনোনীত হলেন। দারুণ সব গোল করাও কি আপনার লক্ষ্যের মধ্যে পড়ে?
নেইমার: না, না। এটা আসলে হয়ে যায়। এমন নয় যে মাঠে গিয়েই দুর্দান্ত সব গোল করার চেষ্টা করি আমি। তবে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, আমি বেশ কিছু দারুণ গোল করেছি। অন্য সবকিছুর চেয়ে এগুলোই আমাকে এখানে নিয়ে আসার জন্য যথেষ্ট প্রমাণিত হয়েছে।
 গোল করা ও গোল করানো কি একই রকম উপভোগ করেন?
নেইমার: দুটোই উপভোগ করি। গোল করতে না পারলে গোল বানিয়ে দিতে পারলেও আমি খুশি। সত্যি বলতে কি, আমার পাস থেকে যখন কোনো সতীর্থ গোল করে, তখন মনে হয় গোলটা নিজেই করেছি!
 কোনটা কঠিন কাজ? খেলা নাকি সন্তান লালন-পালন?
নেইমার: পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করে (হাসি)। আমার ছেলের বয়স এখন প্রায় ১৮ মাস। তার জন্য আমাকে অনেক কিছুই করতে হচ্ছে। সন্তান বড় করাটাই বোধ হয় বেশি কঠিন।
 বাবা হিসেবে আপনি কেমন?
নেইমার: খুবই সুখী একজন বাবা আমি। ঈশ্বরের কাছে কৃতজ্ঞ আমাকে এমন দারুণ একটি উপহার দেওয়ায়। ওকে নিয়ে আমার চিন্তার অন্ত নেই। যতক্ষণ পারি, ওর সঙ্গে সময় কাটাতে চেষ্টা করি।
 ফুটবলে ফিরে আসি। ২০১২ সালে কোন ব্যক্তিগত অর্জনটাকে আলাদা চোখে দেখেন?
নেইমার: ক্রুজেইরোর সঙ্গে ব্রাজিলিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের কথাই আগে বলব, (গত নভেম্বরের এই খেলায় নেইমার সান্তোসের হয়ে হ্যাটট্রিক করেছিলেন)। আমি প্রতিপক্ষ সমর্থকদেরও অভিবাদন পেয়েছিলাম। আমার জন্য ওটা ছিল আবেগের মুহূর্ত।
 লন্ডন অলিম্পিকের কথা বলুন। ফাইনালে ব্রাজিল মেক্সিকোর কাছে হেরে গিয়েছিল...
নেইমার: কঠিন একটা সময় ছিল। একই সঙ্গে সুখ ও দুঃখের। আমি অনেক কিছুই শিখেছি। ফাইনালে হারাটা ছিল লজ্জার। কিন্তু পদক জিততে পেরে আমি খুশি।
 মানোজেস সম্পর্কে আপনার মত...
নেইমার: আমাকে দলে এনেছিল মানো। তাঁর কাছ থেকে অনেক কিছুই শিখেছি। প্রত্যেক কোচেরই কাজ করার নিজস্ব একটা ধরন আছে। মানোর ক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি।
 দলে লুইস ফিলিপ স্কলারির আসা নিয়ে আপনার অনুভূতি কী?
নেইমার: অনেক প্রত্যাশা তাঁকে ঘিরে। অসাধারণ একজন কোচ। মানুষ হিসেবেও দারুণ।
 পর পর দুটো বড় টুর্নামেন্ট (কনফেডারেশনস কাপ ও বিশ্বকাপ) ঘরের মাটিতে। চাপ সামলাতে কতটা প্রস্তুত?
নেইমার: চাপটা অনেক বেশি। যেখানেই খেলি না কেন চাপ থাকে। ঘরে অবশ্য এটা আরও বেশি। তবে আমরা এ নিয়ে সচেতন। দিনশেষে চাপ আসলে উপভোগ্যই।
 ব্রাজিলের হয়ে সর্বশেষ বিশ্বকাপজয়ী কোচ স্কলারি। ২০০২-এর সেই বিশ্বকাপ নিয়ে কোনো স্মৃতি?
নেইমার: আমার তখন ১০ বছর। ব্রাজিলে খেলা হতো সকালে। আমি তাই তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে যেতাম। চেঁচিয়ে গলা ফাটাতাম। সব গোলই আমার মনে আছে, বিশেষ করে ফাইনালেরগুলো।
 ফিফা বিশ্বকাপের পরও কি আপনি সান্তোসে থাকবেন?
নেইমার: জানি না। আমার চুক্তি ২০১৪ পর্যন্ত। আর বিশ্বকাপেরও এখনো অনেক দিন বাকি। পরিবার ও সান্তোসের সঙ্গে কথা বলে আমাকে এটা ঠিক করতে হবে।
 দানি আলভেজ বলেছিলেন, তিনি নাকি আপনাকে বার্সেলোনায় যেতে বলছেন...
নেইমার: (হাসি) দানি আমাকে সব সময় লজ্জায় ফেলে দেয়!

No comments

Powered by Blogger.