ধোঁয়াশায় আচ্ছন্ন বেইজিং

চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের বাতাসে দূষণ ভয়াবহ মাত্রায় বেড়ে গেছে। দুই সপ্তাহের মধ্যে রাজধানী বেইজিংসহ কয়েকটি শহরে তীব্র ধোঁয়াশা সৃষ্টির ঘটনা ঘটেছে। লোকজনের পক্ষে ২০০ মিটারের বেশি দূরত্বের কিছু দেখা কষ্টকর। দূষণের হাত থেকে বাঁচতে অনেকেই গ্যাসমাস্ক (নাকেমুখে ঢাকনা) পরছে।
এ অবস্থা সৃষ্টির পর যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস বেইজিংয়ের বাতাসের ওপর একটি পরীক্ষা চালায়। এতে দেখা যায়, বায়ুমান সূচক বা বাতাসের শুদ্ধতার সূচকে ব্যাপক অবনতি ঘটেছে। বাতাসে দূষণের পরিমাণ মানুষের জন্য সহনীয় মাত্রার চেয়ে ২০ গুণ বেশি। দূষণের কারণে প্রচণ্ড ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। লোকজন ২০০ মিটারের বেশি দূরত্বের কিছু দেখতে পাচ্ছে না।
রাষ্ট্রায়ত্ত সম্প্রচারমাধ্যম চায়না সেন্ট্রাল টেলিভিশনে ( সিসিটিভি) দেখা যায়, ধোঁয়াশার ফলে রাস্তায় চলাচলকারী যানবাহনে দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বলছে। কর্মক্ষেত্রে লোকজন গ্যাসমাস্ক পরে কাজ করছে। চীনের মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ হেনানে অবস্থা আরো খারাপ। সিসিটিভি জানায়, হেনানের ঝেংঝু বিমানবন্দরে ১০৯টি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এ অবস্থা আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া জানায়, পূর্বাঞ্চলীয় শানদং প্রদেশেও দৃষ্টিসীমা ১০০ মিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকায় বিমানের ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এর ফলে প্রায় দুই হাজার যাত্রী বিমানবন্দরে আটকে পড়ে।
বায়ু দূষণের ক্ষুদ্রতম কনার নাম পিএম ২.৫। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার (ডাবি্লউএইচও) মতে, প্রতি ঘনমিটার বাতাসে পিএম ২.৫-এর উপস্থিতি ২৫ মাইক্রোগ্রামের (এক মিলিগ্রামের এক হাজার ভাগের এক ভাগ) বেশি থাকা উচিত নয়। এর পরিমাণ ১০০ মাইক্রোগ্রামের বেশি হলে ওই বাতাস অস্বাস্থ্যকর। আর যদি ৩০০ মাইক্রোগ্রামের বেশি হয়, তবে তা ঝুঁকিপূর্ণ। এ অবস্থায় শিশু ও বয়স্ক লোকদের ঘরের বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস পরিচালিত পরীক্ষায় দেখা গেছে, মঙ্গলবার সকাল ৬টায় বাতাসে পিএম ২.৫-এর পরিমাণ ছিল ৫২৬ মাইক্রোগ্রাম। দুপুরে ছিলে ৪৭৫। দুই সপ্তাহ আগে তা ছিল ৮০০ মাইক্রোগ্রামের ওপরে।
কর্তৃপক্ষ রাস্তায় সরকারি যানবাহন অন্তত ৩০ শতাংশ কমানোর নির্দেশ দিয়েছে। সূত্র : বিবিস, দ্য টেলিগ্রাফ।

No comments

Powered by Blogger.