অমীমাংসিত সব সমস্যার সমাধান হোক- বাংলাদেশ-ভারত দুটি চুক্তি

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে গত সোমবার ঢাকায় যে দুটি চুক্তি সই হয়েছে, তা ছিল দীর্ঘ প্রত্যাশিত। অপরাধী হস্তান্তর ও ভিসা-প্রক্রিয়া সহজ করাসংক্রান্ত এই দুটি চুক্তি দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে আরও জোরদার করবে।
তবে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময়, অপদখলীয় জমি হস্তান্তরসহ বেশ কিছু অমীমাংসিত বিষয় রয়ে গেছে, যেগুলোরও দ্রুত সমাধান প্রয়োজন।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার দীর্ঘ সীমান্ত থাকার সুযোগটি দুই দেশের অপরাধীরাই নিয়ে থাকে। নিজ দেশে অপরাধ করে তাদের প্রতিবেশী দেশে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও কম নয়। এসব অপরাধী দুই দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে ধরা পড়লেও দুই দেশের মধ্যে কোনো হস্তান্তর বা বিনিময় চুক্তি না থাকায় এত দিন তাদের ফেরত পাঠানো সহজ ছিল না। এই চুক্তি সইয়ের ফলে সে সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা করা যায়।
একইভাবে ভিসার কড়াকড়ি নিয়ে দুই দেশের জনগণের মধ্যেই অসন্তোষ ছিল। ভিসা-প্রক্রিয়া সহজ করায় তাদের যাতায়াতের ভোগান্তি অনেকাংশে কমে যাবে। দুটি দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ক্ষেত্রে যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা এই দুটি চুক্তিকে স্বাগত জানাই।
সীমান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি এবং ছিটমহল বিনিময়ের উদ্দেশ্যে ১৯৭৪ সালে দুই দেশের মধ্যে চুক্তি সই হলেও অদ্যাবধি ভারতীয় পার্লামেন্ট তা অনুমোদন করেনি। অথচ চুক্তি বাস্তবায়নের জন্য তা অপরিহার্য। সীমান্তে হত্যা বন্ধ নিয়ে ভারতের কাছ থেকে বহুবার প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও তা বন্ধ হয়নি। দুটি বন্ধু দেশের সীমান্তে এ ধরনের হত্যাকাণ্ড চলতে পারে না।
চুক্তি সইয়ের আগে সোমবার দুই দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীদ্বয়ের মধ্যে যে বৈঠক হয়েছে, সেখানেও এই বিষয়টি আলোচিত হয়েছে বলে জানা গেছে। আর কথা নয়, এখন কাজেই দেখাতে হবে সীমান্তে আর একটিও হত্যার ঘটনা ঘটছে না। ছিটমহল বিনিময় ও অপদখলীয় জমি হস্তান্তরের বিষয়টিও দীর্ঘদিন ঝুলে আছে। মূলত ভারতীয় পক্ষের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কারণেই এত দিন ধরে তা আটকে রয়েছে। আমরা আশা করব, এই দুটি সমস্যা সমাধানেও ভারতীয় পক্ষ আন্তরিকতা নিয়ে এগিয়ে আসবে।

No comments

Powered by Blogger.