হারুনের পদক প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী- ফারুককে পেটানোর ঘটনাটিও বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে

বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুককে পেটানোর ঘটনায় বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ কী করে রাষ্ট্রপতির পুলিশ পদক (সেবা) পেলেন, এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেছেন,
‘তাঁকে পদক দেওয়ার ক্ষেত্রে এ ঘটনাও বিবেচনায় আনা হয়েছে।’ গতকাল মঙ্গলবার রাজারবাগ পুলিশ মিলনায়তনের অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আপনারা লক্ষ করবেন, তিনি (হারুন) তাঁর ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করেছেন। ওই ভদ্রলোক, যাকে আপনাদের ভাষায় দমন করা হয়েছে, তিনি তো মা-বাবা তুলে গালি দিয়েছিলেন।’
২০১১ সালের ঘটনায় কেন এ বছর পদক দিলেন—এই প্রশ্ন করা হলে মন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭১ সালের অবদানের কারণে পুলিশকে তো ২০১১ সালে স্বাধীনতা পদক দেওয়া হলো।’ এরপর মন্ত্রী আর কোনো প্রশ্নের জবাব দেননি।
বার্ষিক পুলিশ সপ্তাহ উপলক্ষে গতকাল পুলিশ ও র‌্যাবের ৬৭ জনকে চার ধরনের পদক দেওয়া হয়েছে। এঁদের মধ্যে পুলিশের লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) হারুনের নামও আছে। ২০১১ সালের ৬ জুলাই হরতাল চলাকালে জাতীয় সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপকে ব্যাপক মারধর করেন হারুন। তখন তিনি তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) ছিলেন। ওই মারধরের ঘটনা তখন বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার পায়। এ ছাড়া গত ৯ ডিসেম্বর পুরান ঢাকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পিটিয়ে ও কুপিয়ে পথচারী বিশ্বজিৎকে হত্যার সময়ও ঘটনাস্থলের খুব কাছেই ডিসি হারুনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ উপস্থিত ছিল। কিন্তু তারা হামলাকারীদের প্রতিহত বা বিশ্বজিৎকে রক্ষায় এগিয়ে আসেনি বলে অভিযোগ আছে।
হারুনের পদক প্রাপ্তির বৃত্তান্তে বলা হয়েছে, তিনি রাজধানীর লালবাগ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নতির জন্য দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। বিডিআর বিদ্রোহ মামলায় স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালত ও পুরান ঢাকার আদালত প্রাঙ্গণে, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা বিচারের জন্য কারাগারের প্রধান ফটকে স্থাপিত আদালতের বিশেষ এজলাস এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন। এসব প্রশংসনীয় কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
হারুনের পদক পুলিশের কলঙ্ক: এদিকে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক গতকাল সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক সমাবেশে বলেছেন, ‘ডিসি হারুনকে রাষ্ট্রীয় পুরস্কার দিলে পুলিশ বাহিনীর মধ্যে ব্যাপক অসন্তুষ্টি দেখা দেবে। এভাবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী টিকিয়ে রাখা বেশ কঠিন হবে।’ তাঁর দাবি, হারুনকে এই পদক দিয়ে সরকার পুলিশ বাহিনীকে কলঙ্কিত করেছে।
খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের মামলা প্রত্যাহার এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের মুক্তির দাবিতে তৃণমূল ফোরাম নামে একটি সংগঠন এই সমাবেশের আয়োজন করে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সমালোচনা করে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘দেশের জনগণকে কাবু করতে এবং আন্দোলন দমাতে পেপার সেপ্র ব্যবহার করার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নোবেল পুরস্কার ও ডক্টরেট ডিগ্রি দেওয়া উচিত।’

No comments

Powered by Blogger.