মন্ত্রী এমপিদের সঙ্গে তৃণমূল কর্মীদের দূরত্ব কমানোর দাবি

সরকার থেকে দলকে আদালা এবং মন্ত্রী-এমপিদের সঙ্গে মাঠের নেতাকর্মীদের দূরত্ব কমানোর পরামর্শ দিলেন সারাদেশ থেকে আসা আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতারা।
প্রধানমন্ত্রীর সামনেই গত এক বছরে সরকারের সঙ্গে দলের দূরত্ব বেড়ে যাওয়াসহ মন্ত্রী-এমপিদের কিছু কর্মকা-ের সমালোচনা করতেও ছাড়েননি তাঁরা। প্রচলিত আইনে নয়, বিশেষ ট্রাইবু্যনাল করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে তাঁরা ছিলেন সোচ্চার। বর্ধিত সভায় তৃণমূল নেতারা নানা সমস্যা, অভিযোগ তুলে ধরলেও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যে কোন নির্দেশ অৰরে অৰরে পালনের দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন।
তৃণমূল নেতারা বলেন, নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দলকে নিয়ন্ত্রণ করবে, নাকি দলই নির্বাচিতদের নিয়ন্ত্রণ করবে- সে ব্যাপারে সিদ্ধানত্ম নিতে হবে। গত এক বছরে সরকারের সঙ্গে দলের দূরত্ব অনেক বেড়েছে। দলকে পাশ কাটিয়ে অনেক মন্ত্রী-এমপি এলাকায় নিজস্ব বলয় সৃষ্টি করার চেষ্টা করছে। নিজেদের সবচেয়ে ৰমতাধর ভাবছে। এতে দ্বন্দ্ব-বিবাদ বাড়ছে। জেলা পরিষদ কার নিয়ন্ত্রণে, কে চালাচ্ছে কেউ-ই জানে না। আওয়ামী লীগ ৰমতায় আছে তা কাগুজে-কলমে দেখলেও তৃণমূল নেতারা তা অনুভব বা উপলব্ধি পর্যনত্ম করতে পারে না। তাঁরা অতিদ্রম্নত সিটি করপোরেশন, জেলা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন দেয়া, মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটিগুলো সম্মেলন করে পুনর্গঠন, উপজেলা পরিষদ নিয়ে এমপি-চেয়ারম্যানদের দূরত্ব নিরসন এবং মাঠের নেতাদের সমস্যা-অভিযোগ শুনতে মাসে অনত্মত একটি দিন দলের জন্য ব্যয় করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান।
প্রতিটি তৃণমূল নেতাদের বক্তব্যে ধৈর্য ধরে শুনে তাঁর জবাব দেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এখন থেকে প্রতিটি জেলার নেতাদের ঢাকায় ডেকে এনে তাঁদের সঙ্গে বৈঠক করার ঘোষণা দেন। মন্ত্রী-এমপিদের উদ্দেশে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে তিনি বলেন, তৃণমূল নেতারাই দলের প্রাণশক্তি। তাঁদের সঙ্গে মিলেমিশেই সবাইকে কাজ করতে হবে। তৃণমূল নেতাদের পরামর্শেই মনোনয়ন দেয়া হয়। তাই আগামীতে যাঁরা তৃণমূল নেতাদের বেশি ভোট পাবেন, তাঁরাই দলের মনোনয়ন পাবেন। তিনি দ্রম্নত জেলা পরিষদ পুনর্গঠনের প্রতিশ্রম্নতি দিয়ে বলেন, আওয়ামী লীগ ৰমতায় আসে এ ভাবটা নেতাকর্মীরা যত না দেখাবে ততই মঙ্গল। কেননা বিএনপি-জামায়াত জোট ৰমতায় থাকার সময় তারা ভাব দেখাতে গিয়েই দেশকে শেষ করে দিয়েছে। জনগণ ভোট না দিয়ে তাদের বিদায় করে দিয়েছে। সেই ভাগ্য আমাদের যাতে না হয় সেজন্য ৰমতার ভাব সহ্য করা হবে না।
আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন পরিণত হয়েছিল তৃণমূল নেতাদের পদচারণায় মুখরিত। প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরম্ন করে মন্ত্রী-এমপি, জেলা-মহানগর-উপজেলা নেতারা মিলেছিলেন এক অন্যরকম মিলনমেলায়। সকালে বর্ধিত সভায় উদ্বোধনী ভাষণ এবং নতুন সদস্য সংগ্রহ অভিযানের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর বিকেল তিনটায় একইস্থানে শুরম্ন হয় বর্ধিত সভার বিশেষ সাংগঠনিক বৈঠক। বিগত সময়ে এই সভাটি রম্নদ্ধদ্বার এবং শুধুমাত্র কেন্দ্রীয়, জেলা ও মহানগর সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের জন্য সীমাবদ্ধ থাকলেও শনিবার তা ছিল ব্যতিক্রম। উপদেষ্টাম-লী থেকে শুরম্ন করে সহযোগী সংগঠনের নেতা পর্যনত্ম সবাইকেই দ্বিতীয় অধিবেশনে থাকার অনুমতি দেন শেখ হাসিনা। এমনকি বর্ধিত সভার স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সাংবাদিকদের থাকতে বাধা দেয়া হয়নি।
প্রধানমন্ত্রী হিসাবে নয়, দলের একজন কর্মীর মতো সবার সঙ্গে মিশে গিয়ে প্রাণখুলে বর্ধিত সভার দ্বিতীয় অধিবেশন পরিচালনা করেছেন শেখ হাসিনা। তিনি দ্বিতীয় পর্যায়ের তৃণমূল নেতাদের মধ্যে থেকে একজন ছাড়া আর কোন মন্ত্রী বা এমপিকে বক্তব্য রাখার সুযোগ দেননি। সাত বিভাগ থেকে সাতজন জেলা ও উপজেলা নেতাকে বক্তব্যের সুযোগ দেন তিনি। যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের বিশাল এক কর্মীবাহিনী বর্ধিত সভায় আগত তৃণমূল নেতাদের মধ্যাহ্ন ভোজসহ সারাৰণ চা-কফি এবং ফল দিয়ে আপ্যায়িত করেন। তৃণমূল নেতাদের মাঝে সরকারের এক বছরের সাফল্য নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলনের কপি, ভারত সফর নিয়ে বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়ার অভিযোগ খ-ন করে প্রধানমন্ত্রীর সাংবাদিক সম্মেলনের কপিসহ সরকারের এক বছরের অর্জন সংবলিত পুসত্মিকা একটি ব্যাগে করে বিতরণ করা হয়। বিকেল সাড়ে পাঁচটায় বর্ধিত সভা শেষে শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের মুলতবি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বর্ধিত সভায় গৃহীত সিদ্ধানত্ম অনুমোদন এবং তৃণমূল নেতাদের মধ্যে সদস্য সংগ্রহ বই ও দলের গঠনতন্ত্র-ঘোষণাপত্র বিতরণের বিষয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধানত্ম হয়।
তবে দ্বিতীয় অধিবেশন শুরম্নতেই সভাপতি শেখ হাসিনা তৃণমূল নেতাদের উদ্দেশে বলেন, 'আপনাদের অনেকের মধ্যে ৰোভ, অভাব-অভিযোগ আছে আমি জানি। তবে আমাদের একটি ঐতিহাসিক অর্জন আছে। জাতির পিতার হত্যা মামলার বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে। তাই প্রতিটি জেলা-উপজেলার নেতাদের একদিন করে ডেকে এনে আমি সবার কথা শুনব। সবাই প্রাণখুলে সব কথা বলতে পারবেন। আমরা দলকে গণতান্ত্রিকভাবে গড়ে তুলতে চাই। তাই নির্বাচন কমিশনের প্রদত্ত আইন সবাইকে মেনেই সংগঠন করতে হবে। আপনারা স্ব স্ব জেলার সাংগঠনিক রিপোর্ট দিয়েছেন, তা মূল্যায়ন করে অবশ্যই পদৰেপ নেব।
স্বাগত বক্তব্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ যখন কোন সিদ্ধানত্ম নেয়, তা বাসত্মবায়ন করেই ঘরে ফিরে। ২০০৮ সালের ২৪ মে উদ্ভট সরকারের সময় আতঙ্কিত অবস্থার মধ্যে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ বর্ধিত সভায় তৃণমূল নেতারা ভয়-ভীতি উপেৰা করে বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ শেখ হাসিনার সঙ্গেই আছে, আর কারোর সঙ্গে নেই। শেখ হাসিনা ছাড়া নির্বাচন-সংলাপ হবে না, তাই হয়েছে। তিনি সদস্য নবায়নের ৰেত্রে ১৮ বছর বয়সী এবং ভোটার হবে এমন তরম্নণ সমাজ ও নারীদের অগ্রাধিকার দিয়ে আওয়ামী লীগের সদস্য করার জন্য তৃণমূল নেতাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, নবীন-প্রবীণ, নারী-পুরম্নষের সম্মিলনে আমরা আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করে গড়ে তুলতে চাই।
রাজশাহী বিভাগের পৰ থেকে নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রবীণ রাজনীতিক এ্যাডভোকেট সাজেদুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুর দীর্ঘ আন্দোলন ও আত্মত্যাগের কথা তুলার পাশাপাশি মন্ত্রী-এমপিদের উদ্দেশ করে বলেন, "কোন অবস্থাতেই দলকে পাশ কাটিয়ে নিজস্ব বলয় সৃষ্টি করার চেষ্টা করবেন না। বঙ্গবন্ধুর শেষ স্বপ্ন দেশকে সোনার বাংলা হিসেবে গড়ার ৰেত্রে কোন শৈথল্য দেখালে তবে নেতাকমর্ীরা পঁচা পানিতে বিসর্জন দেবে।"
ঢাকা বিভাগের গাজীপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজমত উলস্নাহ খান বলেন, নির্বাচিত প্রতিনিধিরা দলকে নিয়ন্ত্রণ করবে, নাকি দলই তাদের নিয়ন্ত্রণ করবে- এটা ঠিক করা উচিত। দলের সঙ্গে সরকারের সমন্বয় কতটুকু হচ্ছে তা ভেবে দেখা দরকার। মন্ত্রি-এমপিদের উদ্দেশ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ডিজিটাল গতিতে চলছেন, আমরা কি এনালগ গতিতে চলতে পারছি? এক বছরেও জানি না জেলা পরিষদ কে চালাচ্ছেন, কার নিয়ন্ত্রণে? তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ৰমতায় তা কাগজে-কলমে দেখি, তৃণমূল নেতারা তা অনুভব পর্যনত্ম করতে পারছে না।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৰমতায় আছি নেতাকমর্ীদের এমন ভাব যত না দেখায় ততই মঙ্গল। ভাব দেখাতে গিয়েই বিএনপি-জামায়াত জোটকে জনগণ বিদায় করে দিয়েছে। তবে তিনি জেলা পরিষদ পুনর্গঠন দ্রম্নত করা হবে বলে ঘোষণা দেন।
খুলনা বিভাগের পৰে মেহেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট মিয়াজান এমপিদের উদ্দেশে বলেন, 'দেখুন প্রধানমন্ত্রী কিভাবে তৃণমূল নেতাদের মূল্যায়ন করেন। আপনারাও (এমপি) কমর্ীদের মূল্যায়ন করম্নন, সম্মান দিন। আপনারা দল ছাড়া নির্বাচিত হননি। দল ও মার্কা ছাড়া একলা নির্বাচিত হতে পারলে জিয়াউর রহমানও হুইসেল দিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা দিতে পারতেন।'
সিলেট বিভাগের পৰে হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ডা. মুশফিকুর রহমান বিএনপি-জামায়াত জোট যাতে কোন ৰতি করতে না পারে সেজন্য প্রধানমন্ত্রীকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, জেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদসহ নানাস্থানে এখনও বিএনপি-জামায়াত জোটের ক্যাডাররা বসে আসে। অতিসত্বর জেলা ও ইউপি নির্বাচন দিতে হবে। সমস্যা-অভিযোগ নিয়ে তৃণমূল নেতারা প্রধানমন্ত্রীসহ মন্ত্রী-এমপিদের সঙ্গে দেখা করতে পারেন না। সচিবালয়ে গিয়ে যাতে তাঁরা দেখা করতে পারেন সে ব্যবস্থা করতে হবে।
চট্টগ্রাম বিভাগের পৰে বান্দরবান জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী মুজিবুর রহমান বলেন, গত এক বছরে দলের সঙ্গে সরকারের অনেক দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। তৃণমূল পর্যায়ে নেতাকর্মীরা যাতে মন্ত্রী-এমপিদের সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করতে পারেন সে ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারের সঙ্গে দলের সমন্বয় করে কাজ করতে হবে। যুদ্ধাপরাধী ও ২১ আগস্টের খুনীদের রেহাই দেয়া যাবে না।
নতুন ঘোষিত রংপুর বিভাগের পৰে পঞ্চগড় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাডভোকেট সাজেদুল ইসলাম বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা নিয়ে অনেক খেলা খেলেছে। খুনীদের রৰার চেষ্টা করেছে। দিন বদলের সনদ বাসত্মবায়নে প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশ দেবেন, তৃণমূল নেতারা তা অৰরে অৰরে পালন করবে।
তবে উপজেলার নেতাদের বেশিরভাগই উপজেলা পরিষদের সঙ্গে এমপিদের দূরত্ব ঘোচানোর জন্য প্রধানমন্ত্রীর প্রতি অনুরোধ জানান। খুলনার কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধীর কৃষ্ণ ম-ল অসহায়ত্ব প্রকাশ করে বলেন, এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানের মধ্যে সমন্বয় না হলে আমরা কোন দিকে যাব? প্রশাসন কার কথা শুনবে? তিনি অতি দ্রম্নত ইউপি নির্বাচনের দাবি জানান। নিলফামারীর সৈয়দপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আওলাদ হোসেন বাদল বলেন, সরকার ও দলের মধ্যে বিরাট ব্যবধান। এমপি-মন্ত্রীরা নিজেদের সবচেয়ে ৰমতাধর মনে করছেন। মন্ত্রী-এমপিরা একক ৰমতা দেখালে বিরোধ বাড়বেই। তাই সরকার ও দলকে আলাদা করতেই হবে। তিনি সরকারী নিয়োগে মন্ত্রী-এমপিদের পাশ কাটিয়ে আমলাদের টাকার বিনিময়ে চাকরি প্রদানের অভিযোগ তোলেন।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার সর্বৰেত্রে এমন দলীয়করণ করে গেছে তা রাতারাতি সমাধান করা যাবে না। আর তাদের মতো দলীয়করণে আওয়ামী লীগ বিশ্বাস করে না। দলীয় নেতাকর্মীরা পড়াশোনা করে উত্তীর্ণ হয়ে চাকরি পায় সেজন্য কোচিংয়ের ব্যবস্থা করার জন্য তৃণমূল নেতাদের নির্দেশ দেন তিনি।
বরিশালের দশমিনা উপজেলার সাধারণ সম্পাদক আবদুল আজিজ অভিযোগ করেন, উপজেলা চেয়ারম্যানরা মনে হচ্ছে টিএনওদের অধীনে। এসব আমলারা দ্বৈতশাসন চালু করেছে। তাই স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করতে এমপি-উপজেলা চেয়ারম্যানদের মধ্যে দূরত্ব কমাতে হবে।
জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যানদের ধৈর্য ধরতে হবে। বাড়ি-গাড়িসহ এমন কাজ দেয়া হবে যাতে তারা দম ফেলানোর সুযোগ না পায়। তিনি সবাইকে মিলেমিশে কাজ করার জন্য নির্দেশ দেন।

No comments

Powered by Blogger.