সচিবালয়ে অপর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর ক্ষোভ

জামায়াত-শিবিরের অব্যাহত সহিংসতার মুখে সচিবালয় ও সংলগ্ন এলাকায় অপর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সোমবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সরকারের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের ডেকে তিনি এ মনোভাব প্রকাশ করেন।
সুষ্ঠু আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখতে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী পুলিশের মহাপরিদর্শককে নির্দেশ দেন। সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল সূত্রে এ খবর জানা গেছে। গতকাল সকাল ১০টায় রাজধানীর মতিঝিল ও গুলিস্তান এলাকায় জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা হঠাৎ করেই গাড়ি ভাঙচুর শুরু করেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সচিবালয়ে অবস্থান করছিলেন। তখন মন্ত্রিসভার বৈঠক চলছিল।
মন্ত্রিসভায় উপস্থিত একাধিক সূত্র প্রথম আলোকে জানায়, সচিবালয়সংলগ্ন গুলিস্তান এলাকায় যখন সহিংসতা চলছিল, তখন মন্ত্রীরা বৈঠকে বসেই বিকট শব্দ শুনছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন মন্ত্রী বলেন, তাঁরা প্রথম ভেবেছিলেন, কোথাও আগুন লেগেছে। পরে তাঁরা বৈঠকে বসেই জামায়াত-শিবিরের হামলার খবর পান।
সূত্র জানায়, এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষীরা তৎপর হয়ে ওঠেন। স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্সের (এসএসএফ) শীর্ষ কর্মকর্তারা র‌্যাব ও পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। সচিবালয় ও সংলগ্ন এলাকায় পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা না থাকায় তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেন। কয়েকজন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা গতকালের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর অপর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
সরকারি সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রিসভার বৈঠক শেষে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে বসেন। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মুখ্য সচিবসহ শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাদের ডেকে পাঠান তিনি। একপর্যায়ে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানান, বিআরটিসির (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন সংস্থা) ১৪টি বাস জামায়াত-শিবিরের হামলায় মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রী জামায়াত-শিবিরের বারবার হামলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। আগের ঘটনাগুলোর সময় কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, তা-ও জানতে চান। এ সময় তিনি মুখ্য সচিবকে তৎক্ষণাৎ পুলিশের মহাপরিদর্শককে ফোন করতে নির্দেশ দেন। জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। মুখ্য সচিব সঙ্গে সঙ্গে পুলিশের মহাপরিদর্শককে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ জানিয়ে দেন।

No comments

Powered by Blogger.