বেড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স- ৫০ শয্যার হলেও ৩১ শয্যার জনবলও নেই by বরুন রায়

পাবনার বেড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ৫০ শয্যায় উন্নীত করার জন্য প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি হয়েছে বছর দেড়েক আগে। বছর খানেক আগে শর্ত সাপেক্ষে মিলেছে প্রশাসনিক অনুমোদন। কিন্তু লোকবলের অভাবে আজও চালু হয়নি ৫০ শয্যার স্বাভাবিক কার্যক্রম।
জানা যায়, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীর চাপ অনেক বেশি। উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা থাকায় এখানে বেড়া ছাড়াও সাঁথিয়া, সুজানগর এবং সিরাজগঞ্জের শাহাজাদপুর ও চৌহালী উপজেলার রোগীরা আসে। এ জন্য এটিকে ৩১ থেকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করার দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ৫০ শয্যায় উন্নীত করার পদক্ষেপ নেওয়া হয় ২০০৬ সালে। এ জন্য প্রায় পাঁচ কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন ভবনসহ অবকাঠামো তৈরি করা হয়। সেগুলো স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয় গত বছরের জুনে।
এরপর ওই বছরের ৭ ডিসেম্বর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পাওয়া যায় ৫০ শয্যার প্রশাসনিক অনুমোদন। তবে শর্ত দিয়ে বলা হয়, জনবল নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত আগের জনবল দিয়েই কাজ চালাতে হবে। কিন্তু এক বছর পার হলেও জনবল বাড়েনি। বরং বর্তমানে এতে ৩১ শয্যার চেয়েও কম জনবল রয়েছে। ফলে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে ৫০ শয্যার কার্যক্রম চালু হওয়া দূরে থাক, ৩১ শয্যার কার্যক্রমই চলছে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা যায়, ৩১ শয্যার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে একজন আবাসিক চিকিৎসক, অ্যানেসথেসিস্ট, জুনিয়র কনসালট্যান্ট, গাইনি, মেডিসিন, সার্জারিসহ চিকিৎসকদের নয়টি পদ রয়েছে। কিন্তু এখানে আছেন মাত্র পাঁচজন।
এ ছাড়া স্বাস্থ্য সহকারীর ছয়টি ও নার্সের একটি পদ শূন্য রয়েছে। ৫০ শয্যার জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকসহ ২৮ জন চিকিৎসক থাকার কথা। এ ছাড়া নার্স, আয়া, পিয়নসহ অন্য কর্মচারীদের পদও আনুপাতিক হারে বাড়ার কথা। সরেজমিনে দেখা যায়, নতুন ভবনে ১৯ শয্যার একটি ওয়ার্ড, অত্যাধুনিক অস্ত্রোপচার কক্ষ, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের চেম্বার রয়েছে। কিন্তু লোকবল না থাকায় সেগুলোতে কার্যক্রম চলছে না।
ছোটখাটো অস্ত্রোপচারের জন্যও এখানকার রোগীদের স্থানীয় ক্লিনিক অথবা পাবনা সদরসহ অন্য এলাকার হাসপাতালে যেতে হয়।
সন্তানসম্ভবা স্ত্রীকে নিয়ে আসা নাকালিয়া গ্রামের আব্দুর রহমান বলেন, ‘জরুরিভিত্তিতে আমার স্ত্রীর সিজার করা দরকার। অথচ এ জায়গায় সুন্দর অপারেশন থিয়েটার থাকার পরও সিজারের ব্যবস্থা নাই। বাধ্য হয়া স্ত্রীকে পাবনা নেওয়া লাগত্যাছে।’
বেড়া পৌর এলাকার হাতিগাড়া মহল্লার বাসিন্দা হোটেল ব্যবসায়ী এনামুল হক বলেন, ‘৫০ শয্যায় উন্নীত হলি নাকি ভালো চিকিৎসা পাওয়া যায়। কিন্তু আমাগরে হাসপাতাল ৫০ শয্যায় উন্নীত হলিউ ভালো চিকিৎসা মিলত্যাছে না।’
উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা কার্তিক কুমার সাহা বলেন, শর্ত সাপেক্ষে প্রশাসনিক অনুমোদন পাওয়া গেলেও লোকবল পাওয়া যায়নি। ফলে ৫০ শয্যার স্বাভাবিক কার্যক্রম চালু করা যাচ্ছে না। তবে ৫০ শয্যা অনুযায়ী রোগীদের খাদ্যসুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। লোকবল বাড়ানোর জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.