জনগণের ক্ষমতা নিশ্চিত করেছি, খালেদার এটা পছন্দ হচ্ছে না ॥প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা জনগণের ক্ষমতায় নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছি। কিন্তু খালেদা জিয়ার এটা পছন্দ হচ্ছে না। বিষধর সাপ তাঁর প্রিয়। যে সাপ একাত্তরে এদেশের মানুষদের গণহত্যা, নির্যাতন করেছে সেই বিষধর সাপের ঝাঁপি মাথায় নিয়ে চলছেন তিনি। তিনি (খালেদা জিয়া) সাপকে বিশ্বাস করেন, আওয়ামী লীগকে নয়।
শুক্রবার রাতে গণভবনে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির মুলতবি সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সরকার দুর্নীতিকে মোটেই প্রশ্রয় দিচ্ছে না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) স্বাধীনভাবে কাজ করছে। দুদক মন্ত্রী-উপদেষ্টা যাকে খুশি ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারছে। আমরা স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছি বলেই স্বচ্ছ ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে দুদক। অথচ অতীতে কোন সরকারের সময় দুদক মন্ত্রীদের ডাকার সাহস পর্যন্ত পায়নি। তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশনও (ইসি) স্বাধীন হয়েছে। আর্থিকভাবেও ইসিকে এখন পুরোপুরি স্বাধীনতা দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বিরোধীদলীয় নেত্রীর প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, আমরা জনগণের ক্ষমতায় নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছি, কিন্তু কিছু মানুষের এটা পছন্দ হচ্ছে না। জামায়াতসহ যুদ্ধাপরাধীদের বিষধর সাপের সঙ্গে তুলনা করে তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার কাছে এসব বিষধর সাপ প্রিয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ জনগণের দল। জš§লগ্ন থেকে আওয়ামী লীগ জনগণের অধিকার আদায়ে কাজ করে যাচ্ছে। মানুষের আস্থা ও বিশ্বাসই আওয়ামী লীগের সম্বল। বন্দুকের নল কিংবা কারও কাঁধে ভর করে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় অতীতে যায়নি, ভবিষ্যতেও যাবে না। জনগণের প্রয়োজনে আওয়ামী লীগ নীতি গ্রহণ করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শনিবার কাউন্সিলে আমরা কি কাজ করেছি এবং ভবিষ্যতে কি করবা তার দিকনির্দেশনা থাকবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৮ সালের নির্বাচনে আমরা যা অঙ্গীকার করেছিলাম তা একে একে পূরণ করে যাচ্ছি। জনগণের ক্ষমতায়, দেশের অর্থনীতি ভিত মজবুত, জনগণের ভোটের অধিকার, গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া, সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করাসহ দেশের সার্বিক উন্নয়ন করেছি। পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মিলিটারি ডিটেক্টররা ক্ষমতায় এসে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে। মানুষের অধিকার হরণ করেছে। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলেই জনগণ বুঝতে পারে, সরকার মানে সেবক। ১৯৯৬-২০০১ সাল পর্যন্ত সময়টা দেশের আর্থসামাজিক উন্নয়নের স্বর্ণযুগ ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে নির্বাচন মানে ছিল জুলুম ও নির্যাতন। এখন আর আর সে অবস্থা নেই। বর্তমান সরকারের সময় অনুষ্ঠিত প্রায় সাড়ে ৬ হাজারের মতো নির্বাচনের সবই অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হয়েছে। একটা নির্বাচন নিয়েও কোন ধরনের ভোট কারচুপির ঘটনা ঘটেনি। ভোটের অধিকার সুরক্ষা করতে সক্ষম হয়েছি। তিনি বলেন, আমরা তথ্য কমিশন গঠন করেছি। এখন যে কেউ তথ্য চাইতে এবং পেতে পারে। অথচ আগে সবই ঢাকা ঢাকা ভাব ছিল।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরশাদ ও খালেদা জিয়া সরকারের দুর্বলতা ছিল বলেই বেসরকারী খাতে টেলিভিশন ও রেডিও দেয়নি। বর্তমান সরকার অনেক টেলিভিশন ও রেডিও বেসরকারী খাতে দিয়েছে। কিন্তু তার পরেও আমাদের প্রতি মিডিয়ার কিছু কার্পণ্য পরিলক্ষিত হয়েছে। বনানী উড়াল সড়ক উš§ুক্ত করে দিয়েছিÑ যা দেশের জন্য মাইলফলক। কিন্তু এটা নিয়ে তেমন প্রচার হলো না। দেশের অনেক মানুষ তা দেখতেও পারল না। ভেবে ছিলাম টিভি চ্যানেলগুলো এটা ফলাও করে প্রচার করবে কিন্তু এখানেও কার্পণ্য দেখতে পেলাম।
সূচনা বক্তব্যের পর আজ শনিবার অনুষ্ঠেয় কাউন্সিলের জন্য সংশোধিত ঘোষণাপত্র ও গঠনতন্ত্র নিয়ে আলোচনার পর তা অনুমোদন দেয়া হয়। রাত সাড়ে ৯টা এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় কমিটির সর্বশেষ বৈঠক চলছিল।

No comments

Powered by Blogger.