আওয়ামী লীগের ১৯তম ত্রিবার্ষিক সম্মেলন ॥ দিন বদলের কাউন্সিল আজ- ০ সোহ‌রাওয়ার্দী উদ্যানে বর্ণাঢ্য সাজে বিশাল মঞ্চ ৬ হাজার কাউন্সিলর, ২০ হাজার ডেলিগেট ০ উৎসবমুখর পরিবেশ ০ বাদ যাওয়া কিছু নেতা সম্মানিত হওয়ার গুঞ্জন

বাঙালী জাতির মুক্তির মূলমন্ত্রে দীক্ষিত হয়ে গণতান্ত্রিকভাবে জন্ম নেয়া উপমহাদেশের পুরনো ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আজ শনিবার ১৯তম ত্রি-বার্ষিক জাতীয় সম্মেলন।
সংগ্রাম ও সাফল্যের ৬৩ বছর বয়সী এই প্রাচীন দলটি ‘শান্তি, গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে দিনবদলের প্রত্যয়ে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’Ñএই মূল সেøাগানকে ধারণ করে আওয়ামী লীগ আয়োজন করেছে এবারের সম্মেলন। নিয়ম রক্ষার এ সম্মেলনে নতুন নেতৃত্বে বড় ধরনের কোন চমকের সম্ভাবনা না থাকলেও দলটির এ কাউন্সিল ঘিরে রীতিমতো উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। জাঁকজমকপূর্ণ সম্মেলন অনুষ্ঠানে সকল প্রস্তুতি ইতোমধ্যে সম্পন্ন করেছে দলটি। নতুন নেতৃত্বে সভাপতি পদে শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক পদে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম পুনর্নির্বাচিত হচ্ছেন এটি প্রায় নিশ্চিত। কেন্দ্রীয় কমিটিতেও তেমন কোন রদবদলের সম্ভাবনাও কম। তবে গত কাউন্সিলে ‘সংস্কারপন্থী’ ইস্যুতে বাদ যাওয়া কিছু প্রবীণ নেতা আজকের সম্মেলনে সম্মানিত হবেন এমন গুঞ্জণ দলটির সর্বত্র।
প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই গণতান্ত্রিকভাবে পথচলা দেশের প্রাচীন এই দলটির সম্মেলন উপলক্ষে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক সোহ্্রাওয়ার্দী উদ্যানকে সাজানো হয়েছে নতুন রূপে। ঢাকার প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে সম্মেলকে ঘিরে বর্ণাঢ্য আলোকসজ্জা, ব্যানার, ফেস্টুন ও দলটির প্রতিষ্ঠাতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বড় বড় প্রতিকৃতি দিয়ে সাজানো হয়েছে। নৌকাসদৃশ সুবিশাল মঞ্চ সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। সাড়ে ৬ হাজার কাউন্সিলর ও ২০ হাজার ডেলিগেটর্সসহ প্রায় ৩৫ হাজার লোকের ধারণক্ষমতাবিশিষ্ট সুবিশাল প্যান্ডেল নির্মাণের কাজও শেষ হয়েছে। সকাল ১১টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলন উদ্বোধন করবেন জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
দলের সম্মেলন ঘিরে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে দলটিতে রীতিমতো উৎসবমুখর পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছে। সারাদেশ থেকে হাজার হাজার কাউন্সিলর ও ডেলিগেটররা ইতোমধ্যে পৌঁছে গেছেন ঢাকায়। ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করলেও বর্তমান কেন্দ্রীয় নেতাদের টেনশন এতটুকুও কমেনি। বড় ধরণের রদবদলের সম্ভাবনা না থাকলেও সময় যতই ঘনিয়ে আসছে গত কাউন্সিলের ঘটনা মাথায় রেখে ততই ঘুম হারাম অবস্থা হয়েছে বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির পদে থাকা নেতাদের। কার কপালে শেষ পর্যন্ত কী জুটবে কেউ-ই নিশ্চিত নন। সবাই এখন তাকিয়ে আছে দলটির সভানেত্রী শেখ হাসিনার দিকে।
নির্বাচন কমিশনের বাধ্যবাধকতায় দেশের জেলা ও মহানগর সম্মেলন বাদ রেখেই কেন্দ্রীয় সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। এ কারণে গুরুত্বপূর্ণ পদে তেমন কোন পরিবর্তন আসছে না, তা দলের নীতিনির্ধারক পর্যায়ের একাধিক নেতাই নিশ্চিত করেছেন। তবুও কে পদোন্নতি পাচ্ছেন, কে পদ হারিয়ে রাজনৈতিক নেতৃত্ব থেকে ছিটকে পড়বেনÑ এ নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছাড়া অন্য কাউকে সভাপতি পদে কাউন্সিলররা মেনে নেবেন না এটা সর্বজনবিদিত। তাই আজকের সম্মেলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনা সপ্তমবারের মতো দলের সভানেত্রী হিসেবে পুনর্নির্বাচিত হচ্ছেন। শেষ পর্যন্ত ৭৩ সদস্যের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে কারা আসছেন তা নিয়ে অতটা আগ্রহ নেই দলের নেতাকর্মীদের। বিগত সম্মেলনগুলোতে সাধারণ সম্পাদক পদ নিয়ে প্রবল আগ্রহ সবার থাকলেও এবার সেটিও নেই। সৈয়দ আশরাফুল ইসলামই সাধারণ সম্পাদক পদে পুনর্নির্বাচিত হচ্ছেন এটিও সবাই নিশ্চিত। তবে গুরুত্বপূর্ণ সভাপতিম-লীর দু’তিনটি পদ ছাড়াও কেন্দ্রীয় সদস্যপদে নতুন কে স্থান পাচ্ছেন, কে বাদ পড়ছেন এ নিয়ে জল্পনা-কল্পনার অন্ত নেই দলটিতে।
কাউন্সিলরদের ভোটে নতুন নেতৃত্ব গঠনে সার্বিক প্রস্তুতি থাকলেও ব্যালটের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের কোন সম্ভাবনা নেই। সাধারণ সম্পাদকসহ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব নির্বাচনের দায়িত্ব কাউন্সিলররা সভানেত্রী শেখ হাসিনার ওপরই অর্পণ করবেন। তাই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব গঠনের চাবিকাঠি দলের প্রধানের হাতেই থাকছে। অনুমাননির্ভর নানাজনের নাম আসলেও নীতিনির্ধারকরা বলছেন, প্রবীণ-নবীনের সংমিশ্রণে নতুন নেতৃত্ব গঠিত হবে। তবে গতবারের কেন্দ্রীয় কমিটি ও মন্ত্রিসভার মতো বড় কোন চমক এবার প্রধানমন্ত্রী আনছেন না।
সকাল ১১টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে ১৯তম জাতীয় সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন। তিনি জাতীয় পতাকা এবং দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দলীয় পতাকা উত্তোলন করবেন। এ সময় ৭৩টি সাংগঠনিক জেলা কমিটির সভাপতি কিংবা সাধারণ সম্পাদকরাও একই সঙ্গে দলীয় পতাকা উত্তোলন করবেন।
সম্মেলন কেন্দ্রের মূল প্যান্ডেলে স্থান সঙ্কুলানের অভাবে সোহ্্রাওয়ার্দী উদ্যানের চতুর্দিকে গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বড় বড় ডিজিটাল পর্দার মাধ্যমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সম্প্রচারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। কাউন্সিলরদের উপস্থিতিতে বিকেল তিনটায় অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় পর্যায়ের কাউন্সিল অধিবেশন। এ সময় কাউন্সিলরা নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন। জানা গেছে, দ্বিতীয় অধিবেশনে শুধু সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করে কাউন্সিলররা ৭৩ সদস্যবিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনের ভার শেখ হাসিনার ওপর অর্পণ করবেন।
দলের প্রতিষ্ঠাতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছাড়াও হোসেন শহীদ সোহ্্রাওয়ার্দী, মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, শামসুল হক, জাতীয় চার নেতাসহ প্রতিষ্ঠাকালীন নেতাদের বড় বড় প্রতিকৃতি টানানো হয়েছে পুরো সোহ্্রাওয়ার্দী উদ্যানের মূল মঞ্চসহ চতুর্দিকে। কাউন্সিল উদ্বোধনের পর শোক প্রস্তাব উত্থাপন এবং এক মিনিট নীরবতা পালন করা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে অভ্যর্থনা উপকমিটির চেয়ারম্যান সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী এবং কাউন্সিল প্রস্তুতি কমিটির চেয়ারম্যান শেখ হাসিনা উদ্বোধনী ভাষণ দেবেন। এছাড়া উদ্বোধন শেষে অতিথিদের আসন গ্রহণ শেষে তিনটি দেশাত্মবোধক ও দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হবে। বাংলা ও ক্ষুদ্র নৃতাত্বিক গোষ্ঠীরসহ ১১টি ভাষায় একটি গান গাওয়া হবে এবং তাঁর সঙ্গে পরিবেশিত হবে নৃত্য।
এই অধিবেশনের পর ১০ মিনিট বিরতি দিয়ে শুরু হবে কাউন্সিল অধিবেশন। সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট উপস্থাপনের পর ধারাবাহিকভাবে সংশোধিত গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্রসহ গত কাউন্সিলের পর দলের সকল আয়-ব্যয়ের হিসাব অনুমোদন নেয়া হবে। এছাড়া সাত বিভাগ থেকে একজন করে কাউন্সিলর বক্তব্য রাখবেন এবং ৭৩ সাংগঠনিক জেলার রিপোর্ট উপস্থাপিত হবে। নির্বাচন কমিশন গঠনের পর বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণা করা হবে এবং আসন থেকে নেমে আসবেন শেখ হাসিনা। এরপর নির্বাচন কমিশন আসনগ্রহণ করে নির্বাচন পরিচালনা করবেন। সব শেষে খ্যাতনামা শিল্পীদের পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগের আজকের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে চির বৈরী রাজনৈতিক প্রধান প্রতিপক্ষ বিরোধী দলীয় নেত্রী খালেদা জিয়াসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল রাজনৈতিক দলের নেতাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। এছাড়া দেশের খ্যাতনামা বুদ্ধিজীবী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক, বিভিন্ন চেম্বারের ব্যবসায়িক নেতৃবৃন্দ, সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকসহ নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিবর্গকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তবে জামায়াতসহ যুদ্ধাপরাধী ও উগ্র সাম্প্রদায়িক রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত কোন রাজনৈতিক দলের নেতাকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি আওয়ামী লীগ সম্মেলনে।
কেন্দ্রীয় সম্মেলনকে ঘিরে পুরো সোহ্্রাওয়ার্দী উদ্যানসহ আশপাশের এলাকায় নিñিদ্র নিরাপত্তাবলয় গড়ে তোলা হয়েছে। সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষিবিদ আফম বাহাউদ্দিন নাছিমের নেতৃত্বে প্রায় ৭শ’ স্বেচ্ছাসেবক কাউন্সিলর, ডেলিগেট ও অতিথিদের আপ্যায়ন করবেন। ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনের সামনেরগেট শুধু ভিআইপিদের যাতায়াতের জন্য এবং বাংলা একাডেমীর সামনে রমনা কালি মন্দিরের প্রবেশ গেট, জাতীয় তিন নেতার মাজারসংলগ্ন গেট এবং টিএসসির সামনের গেট দিয়ে কাউন্সিলর, ডেলিগেটরস এবং আমন্ত্রিত অতিথিদের যাতায়াতের ব্যবস্থা করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলেই এসএসএফ, সেনাবাহিনীসহ বিপুলসংখ্যক র‌্যাব এবং প্রশিক্ষিত কুকুর দিয়ে পুরো সোহরায়ার্দী উদ্যানে নিরাপত্তা তল্লাশি চালিয়েছে।
এক নজরে ৬৩ বছরে ১৯ কাউন্সিল ॥ রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী রোডগার্ডেনে জন্মলাভের পর ১৯৪৯ সালে আওয়ামী লীগের প্রথম কাউন্সিলে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী সভাপতি, শামসুল হক সাধারণ সম্পাদক এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯৫৩ সালে ময়মনসিংহে দলের দ্বিতীয় কাউন্সিলে মওলানা ভাসানী সভাপতি পুনর্নির্বাচিত ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ‘৫৫ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত তৃতীয় কাউন্সিলে একই কমিটি বহাল থাকে। ‘৫৭ সালে কাগমারি সম্মেলনকে ঘিরে মওলানা ভাসানী দল ভেঙ্গে ন্যাপ করলে আওয়ামী লীগের মওলানা আবদুর রশিদ তর্কবাগিশ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব অপরিবর্তিত থাকেন। ‘৫৮ সালে সামরিক শাসন জারি হলে আওয়ামী লীগের কর্মকা- স্থগিত করা হয়। দীর্ঘ ৬ বছর পর ’৬৪ সালে দলকে পুনরুজ্জীবিত করা হয়। এতে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে তর্কবাগিশ-মুজিব অপরিবর্তিত থাকেন। ‘৬৬ সালের কাউন্সিলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন তাজউদ্দীন আহমদ। এরপর ‘৬৮ ও ‘৭০ সালের কাউন্সিলে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক অপরিবর্তিত থাকেন। এই কমিটির মাধ্যমেই পরিচালিত হয় বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ।
দেশ স্বাধীন হবার পর ’৭২ সালের সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন বর্তমান রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমান। ’৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু দায়িত্ব ছেড়ে দিলে সভাপতি হন এ এইচ এম কামরুজ্জামান। সাধারণ সম্পাদক হিসেবে জিল্লুর রহমান বহাল থাকেন। ’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর আওয়ামী লীগের রাজনীতি আবারও স্থগিত করা হয়। ’৭৬ সালে ঘরোয়া রাজনীতি চালু হলে অওয়ামী লীগকে পুনরুজ্জীবিত করে মহিউদ্দিন আহমেদ সভাপতি ও সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক হন। ’৭৭ সালে এই কমিটি ভেঙ্গে আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। আহ্বায়ক হন সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন। ’৭৮ সালের সম্মেলনে আবদুল মালেক উকিল সভাপতি ও আবদুর রাজ্জাক সাধারণ সম্পাদক হন।
’৮১ সালের সম্মেলনে বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতেই তাঁকে সভাপতি এবং আবদুর রাজ্জাক সাধারণ সম্পাদক পদে বহাল থাকেন। এরপর শেখ হাসিনা দেশে ফিরে ঐতিহ্যবাহী এই রাজনৈতিক দলটির হাল ধরেন। ’৮৩ সালে আবদুর রাজ্জাক দলত্যাগ করে বাকশাল গঠন করলে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ’৮৭ সালের সম্মেলনে শেখ হাসিনা সভাপতি ও সাজেদা চৌধুরী সাধারণ সম্পাদক হন। ’৯২ ও ’৯৭ সালের সম্মেলনে শেখ হাসিনা সভাপতি ও জিল্লুর রহমান সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ২০০০ সালের বিশেষ কাউন্সিলেও একই কমিটি বহাল থাকে।
এরপর ২০০২ সালের ২৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত কাউন্সিলে শেখ হাসিনা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন আবদুল জলিল। সর্বশেষ ২০০৯ সালের ২৪ জুলাই অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের সর্বশেষ কাউন্সিলে শেখ হাসিনা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম। আর সর্বশেষ কাউন্সিলেই বাঘা বাঘা নেতাদের সাইডলাইনে রেখে অপেক্ষাকৃত তরুণদের নিয়ে গঠন করেন চমকের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটি। আজ অনুষ্ঠিত দলের ১৯তম কাউন্সিলেই বর্তমান কমিটির অধিকাংশই বহাল থাকছেন বলে জানা গেছে।

No comments

Powered by Blogger.