সারদায় প্রধানমন্ত্রী-জামায়াতের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করতে পুলিশকে নির্দেশ

ধৈর্য ও সাহসিকতার সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দেওয়ার জন্য পুলিশ বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, 'তারা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ভণ্ডুল করতে এসব অপতৎপরতা চালাচ্ছে।
' প্রধানমন্ত্রী পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশে বলেন, 'আমি আশাবাদী, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ভণ্ডুল করতে সক্রিয় এবং পুলিশের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা পরিচালনাকারী জামায়াত-শিবিরের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিয়ে আপনারা আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হবেন।' গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে রাজশাহীর সারদায় বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমীর তিন দিনব্যাপী শতবর্ষ উৎসব উদ্বোধনকালে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
শেখ হাসিনা মানবাধিকার সমুন্নত রেখে জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষায় সজাগ থাকতে এবং সর্বোচ্চ আন্তরিকতা ও সততার মাধ্যমে সেবাদান করে জনগণের আস্থা অর্জনের জন্য পুলিশ বাহিনীকে নির্দেশ দেন। তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় তাঁর সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের উল্লেখ করে বলেন, দায়িত্ব নেওয়ার পর বর্তমান সরকার জঙ্গিবাদ দমন করেছে এবং সন্ত্রাসবিরোধী ন্যাশনাল ব্যুরো স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে।
এই বিশেষায়িত পুলিশ ইউনিট স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির অপতৎপরতা দমন এবং দেশব্যাপী জঙ্গিবাদ নির্মূলে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, ২০০১ সালের নির্বাচনের পর চারদলীয় জোট সরকার হত্যাসহ সন্ত্রাসবাদ, নির্যাতন এবং জনগণের চক্ষু উৎপাটন ও বিকলাঙ্গ করার মাধ্যমে দেশব্যাপী এক ভীতিকর অবস্থার সৃষ্টি করে। তিনি বলেন, বিএনপি নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ভয়াবহভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করে গণতন্ত্র সংকটাপন্ন করা হয়েছিল। শেখ হাসিনা বলেন, জনগণ বাংলা ভাই, ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা এবং দেশব্যাপী সিরিজ বোমা হামলার কথা ভোলেনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার ভিশন-২০২১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে ২০২১ সালের মধ্যে একটি মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। এ লক্ষ্য অর্জনে পুলিশ বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তিনি বলেন, তাঁর সরকার এই উপমহাদেশের অন্যতম প্রাচীন প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান সারদা পুলিশ একাডেমীকে সর্বোৎকৃষ্ট প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে চায়।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী এই একাডেমীতে পৌঁছালে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শামসুল হক টুকু, পুলিশের মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার ও একাডেমীর প্রিন্সিপাল নায়েম আহমেদ তাঁকে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রীকে পুলিশের একটি চৌকস দল গার্ড অব অনার প্রদান করে। তিনি সালাম গ্রহণ এবং একটি খোলা জিপে চড়ে গার্ড পরিদর্শন করেন।
প্রধানমন্ত্রী হর্স শো, ব্যান্ড শো ও অডিও-ভিজুয়াল প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন এবং এ অনুষ্ঠান উপলক্ষে শতবার্ষিকী স্মারক ডাকটিকিটের মোড়ক উন্মোচন করেন। এ ছাড়া এ উপলক্ষে ১২ টাকা মূল্যমানের স্মারক টিকিট, ১০ টাকা মূল্যমানের ফার্স্ট ডে কভার এবং পাঁচ টাকা মূল্যমানের ডাটা কার্ড ও একটি বিশেষ সিলমোহর অবমুক্ত করা হয়। অনুষ্ঠানে মন্ত্রী, সংসদ সদস্য, ঊর্ধ্বতন সরকারি কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ পুলিশের বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

No comments

Powered by Blogger.