কপর্দকহীনকে কোটিপতি কন্যার বিয়ের করুণ পরিণতি

অনেক স্বপ্ন আর আশা নিয়ে কপর্দকহীন, ঋণগ্রস্ত এক তরুণকে বিয়ে করেছিলেন সৌদি রাজপরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এক ধনকুবেরের কন্যা। কিন্তু তার এ সুখের সংসার শেষ পর্যন্ত বিবাহ বিচ্ছেদের দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।
এ মামলা পরিচালনার জন্য তাদের আইনজীবীদের দিতে হচ্ছে ১০ লাখ পাউন্ড। ১৯৯৮ সালে সৌদি রাজপরিবারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ এক প্রভাবশালী পরিবারের কন্যা নোরা আলি মুসাল্লেম যখন সালিম আলিয়ামিকে বিয়ে করেছিলেন তখন উত্তরাধিকার হিসেবে পাওয়া সব সম্পদ এনে স্বামীকে দিয়েছিলেন।
পশ্চিম লন্ডনের হল্যান্ড পার্কের কাছে ২৭ লাখ পাউন্ডের পাঁচ বেডরুমের ফ্ল্যাটে এ দম্পতি তাদের তিন সন্তানকে নিয়ে থাকতেন। সেখানে তাদের সেবার জন্য নোরার পরিবারের কাছ থেকে আসা অর্থে দুজন কর্মচারী এবং একজন গাড়িচালক রাখার সুবিধাও ভোগ করতেন। কিন্তু ২০০৮ সালে তাদের মধ্যকার মনমালিন্যের কারণে সম্পর্কে চিড় ধরতে শুরু করে। অবশেষে তারা অর্থ এবং সন্তানদের অধিকার নিয়ে আইনি লড়াইয়ে নামেন। নিজের পরিবারের মাসিক ৩০০ পাউন্ড বেতনের কর্মচারীকে বিয়ে করার পর তাকেই এখন ৪৫০০০০ পাউন্ডের বাড়ি এবং ৩৭০০০০ পাউন্ডের ঋণ পরিশোধের জন্য ৫০০০০ পাউন্ড পরিশোধ করতে এক ফ্যামিলি জাজের নির্দেশে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেছেন নোরা। এদিকে স্বামী সালিমও এ ধরনের রায়ে সন্তুষ্ট নয়। কারণ স্ত্রীর সঙ্গে মামলা পরিচালনা করতে গিয়ে তিনি ইতিমধ্যে ৫০০০০০ পাউন্ড ব্যয় করেছেন। এছাড়া তিনি নিজেও বড় ধরনের ঋণে জড়িয়ে পড়েছেন। সালিমের আইনজীবী একটি আপিল কোর্টের মাধ্যমে তার জন্য আরও বেশি অর্থ বরাদ্দ দেয়ার জন্য বিচারকদের প্রতি আবেদন জানিয়েছেন। আদালতে আইনজীবী জানিয়েছেন ২০০৪ সালে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত নোরার বাবা সৌদি বাদশাহ ফাহাদের একজন সিনিয়র উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আইনজীবী বলেছেন, হলফনামায় সালিম জানিয়েছেন মৃত্যুর পর নোরার বাবা ৫০০ কোটি পাউন্ডের সম্পদ রেখে গেছেন। তার তিন স্ত্রী এবং ১৯ সন্তান থাকলেও ইসলামিক আইন অনুযায়ী নোরা বেশ ভাল একটি অংশ পাবে। তিনি দাবি করেছেন নোরা তার বাবার সম্পদের পরিমাণ নিয়ে দ্বিমত পোষণ করেছেন। গত বছর এক আইনজীবী নোরাকে ৪৫০০০০ পাউন্ড সালিমকে দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিল। এ অর্থ দিয়ে সে তার সন্তানদের থাকার জন্য একটি বাড়ি কিনতে পারতেন। কিন্তু  সাবেক স্ত্রীর অর্থে সালিম আইনি লড়াইয়ের বিশাল অঙ্কের বিল পরিশোধ করতে পারে এ আশঙ্কায় বিচারক সেই অর্থ দেয়ার নির্দেশ দিতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। এ সংক্রান্ত রায়ে বিচারক বলেছেন, আমার মনে হয় এ ধরনের রায়ে কোন পক্ষই সন্তুষ্ট হবে না। তিনি বলেন, বলতে গেলে স্বামীর কাছে কেবল ঋণ ছাড়া আর কিছুই নেই। এখন তার কোন চাকরি বা ব্যবসাও নেই। সন্তানদের কথা চিন্তা করে আমি দু’পক্ষের দাবিই বিবেচনা করছি। সন্তানদের আসলে একটি নিরাপদ আবাস দরকার। সবশেষে দেখা যাচ্ছে স্বামীর কাছে কিছুই নেই। আর স্ত্রীকেই এখন সন্তানদের ভরণপোষণের সার্বিক খরচ বহন করতে হবে। এক নির্দেশে বিচারক বলেছেন, বাড়িটি তার সাবেক স্ত্রীর নামেই থাকবে। তবে তিনি সেখানে একা থাকতে পারবেন। সন্তানরা বড় হওয়ার পর বাড়িটি বিক্রি করা হলে তখন তিনি ওই অর্থের অর্ধেক পাবেন।

No comments

Powered by Blogger.