ইকোনমিস্টের দুই সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালের নোটিশ

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সাপ্তাহিক দ্য ইকোনমিস্ট-এর চীন সংস্করণের সম্পাদক রব গিফোর্ড ও দক্ষিণ এশীয় ব্যুরো-প্রধান এডাম রবার্টসের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগে কেন কার্যক্রম নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে নোটিশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।
আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের এর জবাব দিতে বলা হয়েছে।
মানবতাবিরোধী অপরাধের চলমান বিচার-প্রক্রিয়ায় বাধা সৃষ্টি করা এবং ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানের ই-মেইল ও স্কাইপি অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে গোপনীয়তা নষ্টের অভিযোগে বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ গতকাল বৃহস্পতিবার এই আদেশ দেন।
আদেশে বলা হয়, গঠনের পর থেকে এই ট্রাইব্যুনাল উন্মুক্ত এজলাসে বলে আসছেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন, ১৯৭৩ একটি নতুন আইন। এ জন্য তাঁরা এ বিষয়ে অভিজ্ঞ ও দক্ষ মানুষের কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পারেন। তাঁরা চাইলে দেশ-বিদেশে গবেষকদের কাছ থেকেও এ বিষয়ে পরামর্শ নিতে পারেন। বেলজিয়ামে বসবাসরত বাংলাদেশের নাগরিক ও আন্তর্জাতিক অপরাধ আইন বিশেষজ্ঞ আহমেদ জিয়াউদ্দিনসহ আরও কয়েকজনের সঙ্গে ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানের বিশ্বজুড়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ আইনের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ রয়েছে। চলমান বিচার কার্যক্রমের বিভিন্ন সময়ে চেয়ারম্যান তাঁর কাছ থেকে সহযোগিতাও নিয়েছেন। দু-তিন দিন আগে চেয়ারম্যান বুঝতে পারেন, তাঁর ই-মেইল ও স্কাইপি অ্যাকাউন্টের পাশাপাশি কম্পিউটারও হ্যাক করা হয়েছে। গত বুধবার রাত ১০টার দিকে ইকোনমিস্ট থেকে চেয়ারম্যানকে ফোন করে বলা হয়, চেয়ারম্যান ও আহমেদ জিয়াউদ্দিনের মধ্যে কথোপকথন তাঁদের কাছে আছে এবং এ বিষয়ে তাঁকে কয়েকটি প্রশ্ন করেন। চেয়ারম্যানের কম্পিউটার, ই-মেইল ও স্কাইপি অ্যাকাউন্ট হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে মারাত্মকভাবে গোপনীয়তা নষ্ট করা হয়েছে। এ ছাড়া আইনত কোনো ব্যক্তি একজন বিচারকের কাছে টেলিফোনে প্রশ্ন করতে পারেন না। চেয়ারম্যান আরও জানতে পেরেছেন, আহমেদ জিয়াউদ্দিনের ই-মেইল ও স্কাইপি অ্যাকাউন্টও হ্যাক হয়েছে এবং এটা পরিষ্কার যে যাঁরা ট্রাইব্যুনালে বিচার বাধাগ্রস্ত করতে চান, তাঁরাই এ কাজ করেছেন। এ জন্য ট্রাইব্যুনাল ইকোনমিস্ট-এর চীন সংস্করণের সম্পাদক রব গিফোর্ড এবং দক্ষিণ এশীয় ব্যুরো-প্রধান এডাম রবার্টসের বিরুদ্ধে নোটিশ জারি করেন।
আদেশে ওই দুজনকে চেয়ারম্যানের ই-মেইল ও স্কাইপি অ্যাকাউন্ট থেকে পাওয়া তথ্য গোপন রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। ট্রাইব্যুনাল বলেন, নির্দেশ অমান্য করা হলে আইন অনুসারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পুলিশের মহাপরিদর্শক ও বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে আদেশের অনুলিপি সরবরাহ করার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

No comments

Powered by Blogger.