হিযবুত কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ, গ্রেপ্তার ৪১

রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গতকাল শনিবার দুপুরে পুলিশের সঙ্গে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহ্রীর কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে কয়েকজন আহত হন। পুলিশ ও র‌্যাব এ ঘটনায় হিযবুত তাহ্রীরের ৪১ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল দুপুর সোয়া ১২টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে হঠাৎ করে হিযবুত তাহ্রীরের ৪০ থেকে ৫০ জন নেতা-কর্মী ব্যানার নিয়ে সরকারবিরোধী স্লোগান দিয়ে মিছিল শুরু করেন। এ সময় পুলিশ তাঁদের বাধা দিলে হিযবুত কর্মীরা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়লে মিছিল ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এরপর হিযবুত কর্মীরা বিএমএ ভবনসহ আশপাশের এলাকায় অবস্থায় নেন। খবর পেয়ে র‌্যাব ও অতিরিক্ত পুলিশ এসে আশপাশের এলাকা থেকে ৪১ জনকে আটক করে। গতকাল সন্ধ্যা ছয়টার দিকে আটক ব্যক্তিদের মধ্যে নয়জন শাহবাগ থানায় ও বাকি ৩২ জন র‌্যাব-৩-এর কার্যালয়ে ছিলেন।
সংঘর্ষের সময় জাতীয় প্রেসক্লাবের ব্যবস্থাপনা কমিটির নির্বাচন চলছিল। এ ছাড়া বিভিন্ন কর্মসূচি থাকায় ওই এলাকায় বিপুলসংখ্যক মানুষের সমাগম ঘটে। এ কারণে সংঘর্ষের সময় প্রেসক্লাব ও আশপাশের এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই নিরাপদ আশ্রয়ে দিগিবদিক ছোটাছুটি করতে থাকেন।
শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রুপেশ চন্দ্র বলেন, প্রেসক্লাবের সামনে বেশ কয়েকটি সংগঠনের মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি চলছিল। এসব কর্মসূচিতে প্রায় দুই হাজার লোকের সমাগম হয়। হিযবুত তাহরীরের সদস্যরা ওই কর্মসূচির সুযোগে সেখানে এসে জড়ো হন। এ ছাড়া তাঁরা নিজেদের মুঠোফোনে খুদেবার্তা পাঠিয়ে কর্মীদের জড়ো করেন। তিনি বলেন, ছত্রভঙ্গ হয়ে হিযবুত তাহরীরে কর্মীরা আশপাশে আশ্রয় নেন। তাঁরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিশে যান। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে সাতজন এবং পরে আহত অবস্থায় দুজনকে হাসপাতাল থেকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
জানতে চাইলে র‌্যাব-৩-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল আনিসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, আটক ৩২ জনের সঙ্গে হিযবুত তাহরীরের সম্পৃক্ততা আছে কি না, তা যাচাই-বাছাই করে দেখা হচ্ছে। অভিযুক্তদের থানায় সোপর্দ করা হবে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, আহত দুজন হলেন জহিরুল ইসলাম (২৪) ও নাজিম উদ্দিন (৫০)। জহিরুল দাবি করেন, তিনি মিরপুর বাংলা কলেজ থেকে ইংরেজি সাহিত্যে সম্মান শেষ বর্ষের পরীক্ষা দিয়েছেন। বিজয়নগর থেকে রিকশায় করে প্রেসক্লাব হয়ে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছিলেন। প্রেসক্লাবের সামনে এলে সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে যান তিনি। পরে তাঁর ডান হাতে পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেট লাগে। নাজিম দাবি করেন, তিনি প্রেসক্লাবের সামনে একটি মানববন্ধনে অংশ নিতে বন্ধুর সঙ্গে এসেছিলেন। পুলিশের রাবার বুলেটে তিনিও আহত হন।

No comments

Powered by Blogger.