‘ফিসক্যাল ক্লিফ’- সংকট এড়ানোর ব্যাপারে আশাবাদী বারাক ওবামা

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ‘ফিসক্যাল ক্লিফ’ হিসেবে পরিচিত রাজস্বসংক্রান্ত সংকট এড়ানো সম্ভব হবে বলে আশাবাদী। গত শুক্রবার হোয়াইট হাউসে কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
নতুন বছর শুরুর আগেই কংগ্রেসে ডেমোক্রেটিক ও রিপাবলিকান নেতাদের সমঝোতা না হলে কর বৃদ্ধি এবং সরকারি ব্যয় হ্রাস স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হয়ে যাবে। এটি যুক্তরাষ্ট্রে ‘ফিসক্যাল ক্লিফ’ বলে পরিচিত। বিশ্লেষকেরা বলছেন, এই সংকট এড়ানো সম্ভব না হলে, দেশটিতে অর্থনৈতিক মন্দা সৃষ্টি হবে; যার প্রভাব পড়বে সারা বিশ্বে।
ওবামা শুক্রবার হোয়াইট হাউসে কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে এক ঘণ্টা বৈঠক করেন। এতে অংশ নেন কংগ্রেসের উচ্চকক্ষ সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা হ্যারি রিড, বিরোধী দলের নেতা মিচ ম্যাককনেল, নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান নেতা ও স্পিকার জন বোয়েনার এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা ন্যান্সি পেলোসি।
বৈঠকের পর ওবামার পাশাপাশি ম্যাককনেলও সংকট কাটিয়ে ওঠার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। ম্যাককনেল বলেন, রোববারের (আজ) মধ্যে একটি সমঝোতায় পৌঁছার ব্যাপারে তাঁরা আশাবাদী।
‘ফিসক্যাল ক্লিফ’ কাটাতে না পারলে কর বৃদ্ধির কারণে অন্তত ১০টি ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের ভোগান্তি বাড়বে। সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের আমলে এই আয়কর রেয়াত দেওয়া হয়। ৩১ ডিসেম্বর সেই মেয়াদ শেষ হচ্ছে। ওবামা বিত্তশালীদের ওপর করারোপের পক্ষে। তবে রিপাবলিকানরা নতুন করে কোনো কর আরোপ চান না। সমঝোতায় পৌঁছাতে না পারলে বছরের শুরু থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের আয়ের ওপর বর্ধিত কর আরোপ হবে।
২০১২ সালের আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময়েও নাগরিকদের উচ্চ হারে কর পরিশোধ করতে হবে। অন্তত তিন কোটি নাগরিকের ওপর অতিরিক্ত করের বোঝা চাপবে। সামাজিক নিরাপত্তা করও বৃদ্ধি পাবে। যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বিভাগ ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে, আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার পর বর্ধিত কর ফেরত পেতে এ বছর বিলম্ব হবে। শুধু তা-ই নয়, বেকার ভাতা গ্রহণকারীদের বিপাকে পড়তে হবে। স্বাভাবিক নিয়মে দেড় বছরের বেশি সময়ের জন্য বেকার ভাতা গ্রহণকারীদের ভাতা বন্ধ হয়ে যাবে। সমঝোতা না হলে বর্ধিত বেকার ভাতা তহবিল ১ জানুয়ারি থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যাবে। একই দিন থেকে স্বাস্থ্যসেবা খাতে ৩০ শতাংশ ব্যয় হ্রাস স্বয়ংক্রিয়ভাবে কার্যকর হবে। ফলে বিনা মূল্যে চিকিৎসা গ্রহণকারীরা বঞ্চিত হবেন। এসব কারণে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মসংস্থান আরও সংকুচিত হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। জর্জ ম্যাশন ইউনিভার্সিটির তথ্যমতে, ফিসক্যাল ক্লিফ এড়ানো সম্ভব না হলে নতুন করে অন্তত ২০ লাখ লোক কর্মহীন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

No comments

Powered by Blogger.