সাক্ষাৎকার- উড়ালসড়ক নির্মাণের যৌক্তিকতা ছিল না by জেরিনা হোসেন

প্রথম আলো: বহদ্দারহাট জংশনে উড়ালসড়ক নির্মাণ নিয়ে শুরু থেকে আপত্তি তুলেছিলেন নগর বিশেষজ্ঞরা। আপনিও সেই দলে ছিলেন। একটু ব্যাখ্যা করবেন কি? জেরিনা হোসেন: আসলে যেকোনো একটি বড় প্রকল্প করতে হলে মহাপরিকল্পনার প্রয়োজন।
সেই মহাপরিকল্পনা বা পরিকল্পনা থেকেই আসবে এর যৌক্তিকতা। আমাদের সম্পদ সীমিত। এই সীমিত সম্পদ দিয়ে অধিকতর নাগরিকের অর্থনৈতিক ও দৈনন্দিন চাহিদা পূরণ করতে হয়। এ কথাটা মাথায় রেখেই যেকোনো প্রকল্প হাতে নিতে হয়। কিন্তু বহদ্দারহাট জংশনে উড়ালসড়ক নির্মাণ প্রকল্পের কোনো যৌক্তিকতা ছিল না। রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য এবং চমক সৃষ্টি করতে ব্যক্তিবিশেষ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজে হাত দেয়। নগর বিশেষজ্ঞদের মতামত এখানে উপেক্ষিত হয়। প্রকল্প বাছাই ও বাস্তবায়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে পেশাদারিত্বেরও মারাত্মক অভাব ছিল। এখানে ব্যক্তির ইচ্ছা প্রাধান্য পাওয়ায় শুরু থেকে আমরা এর বিরোধিতা করে আসছিলাম।
প্রথম আলো: আপনি ব্যক্তির কথা বলেছেন। ওই ব্যক্তিটা কে?
জেরিনা হোসেন: এটা কি বলার অপেক্ষা রাখে? ওই ব্যক্তি সিডিএর প্রধান, যাঁর মধ্যে প্রকৌশলজ্ঞান বলতে কিছুই নেই। তৈরি পোশাক কারখানা পরিচালনা কিংবা রুটি-বিস্কুট বানানো আর উড়ালসড়ক নির্মাণ এক কথা নয়। সব কিছুকেই তিনি যেন এক শ্রেণীতে নিয়ে এসেছেন। নইলে সবাই যদি সব কাজ জানতেন তাহলে দেশে প্রকৌশল ও পরিকল্পনা বিদ্যার কোনো প্রয়োজন হতো না।
প্রথম আলো: মানুষের মধ্যে আতঙ্ক এখনো কেটে যায়নি। এই অবস্থা থেকে বের হওয়ার উপায় কী?
জেরিনা হোসেন: প্রথমত, জরুরি ভিত্তিতে নির্মাণাধীন উড়ালসড়কটি বেষ্টনী দিয়ে রাখতে হবে, যাতে কেউ যেন আশপাশে যেতে না পারে। মধ্য মেয়াদে বিশেষজ্ঞ দল দিয়ে উড়ালসড়কের নির্মাণকাজ পরীক্ষা করানো দরকার। ভবিষ্যতে এই সেতু ব্যবহার করা যাবে কি না তা যাচাই করে দেখা দরকার।

No comments

Powered by Blogger.