হাসিনার প্রাণ নিয়ে জামায়াত নেতার সাবধানবাণী

আওয়ামী লীগ যে নির্বাচনী ব্যবস্থায় ক্ষমতায় এসেছে, তা বন্ধ করে দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রীর জীবনশঙ্কাও তৈরি হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মজিবুর রহমান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে তিনি বলেছেন, 'তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সিঁড়ি দিয়ে আপনি ক্ষমতায় এসেছেন।
এই সিঁড়ি সরিয়ে নিলে আপনি নিজেই নামতে পারবেন না। এতে আপনার জীবনাবসান পর্যন্ত হতে পারে।' গতকাল বুধবার নয়াপল্টনে ১৮ দলীয় জোটের জনসভায় তিনি এ কথা বলেন। এ সময় মঞ্চের সামনে থাকা জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা মুহুর্মুহু করতালি দিয়ে তাঁর বক্তব্যের প্রতি সমর্থন জানায়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে মজিবুর বলেন, 'অন্যায়ভাবে জামায়াত-শিবিরকে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রতিনিয়ত পুলিশ আমাদের ওপর চড়াও হচ্ছে, আমাদের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলব, পুলিশ বাদ দিয়ে মাঠে আসুন, দেখা যাবে কে জেতে।'
গতকাল নয়াপল্টনে ১৮ দলীয় জোটের সমাবেশকে ঘিরে মঙ্গলবার রাতেই নয়াপল্টনের সমাবেশস্থলের আশপাশে অবস্থান নেয় জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা। দূর-দূরান্ত থেকে যারা ঢাকায় এসেছে তাদের অনেকেই সমাবেশের আগের রাতে নয়াপল্টন এলাকায় রাত কাটায়। গতকাল সকাল থেকেই সমাবেশস্থলের আশপাশের বেশির ভাগ জায়গা দখল করে অবস্থান নেয় জামায়াতের নেতা-কর্মীরা। এ সময় তাদের হাতে ছিল জামায়াতের নায়েবে আমীর দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, মতিউর রহমান নিজামী, গোলাম আযমসহ শীর্ষ নেতাদের ছবিসংবলিত ব্যানার পোস্টার। সমাবেশে তাদের নেতা-কর্মীকে বিচার বন্ধের দাবিতে ব্যাপক লিফলেট ও বই বিতরণ করে জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীরা। একইসঙ্গে দলের শীর্ষ নেতাদের মুক্তির দাবিতে সমাবেশ এলাকায় বেলুন, ডিজিটাল ব্যানার, ফেস্টুনের ছড়াছড়ি দেখা যায়।
গতকাল সমাবেশস্থলে আসা লোকজন জানিয়েছে, সমাবেশে আসার পথে টঙ্গি, যাত্রাবাড়ী, চিটাগাং রোড, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুরসহ বিভিন্ন স্থানে আওয়ামী লীগের কর্মীরা তাদের আসতে বাধা দেয়। সকাল থেকে যারা সমাবেশস্থলে আসে বিকেল নাগাদ তাদের অনেকেই খালেদা জিয়ার বক্তব্য না শুনে বাড়ি ফিরে যায়।
বিনা মূল্যে টোস্ট ও খাবার পানি : সমাবেশের পেছনে পল্টন মডেল থানার সামনে পল্টন থানা শ্রমিক দল বিনা মূল্যে লোকজনকে দুটি করে টোস্ট বিস্কুট ও পানি সরবরাহ করেছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে পল্টন থানা শ্রমিক দলের নেতা রিপন জানান, তারা সমাবেশে আগতদের জন্য নিজ খরচে প্রায় ২০০ গ্যালন খাবার পানি ও দুই মণ টোস্ট বিস্কুট সরবরাহ করেছেন। লোকজনকে আনন্দ নিয়ে তা খেতে দেখা গেছে।
জামায়াত-শিবিরের শোডাউন : ১৮ দলের জনসভাকে ঘিরে বড় শোডাউন করেছে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবির। সকাল থেকেই সমাবেশ এলাকায় তাদের কর্মীদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। বিএনপি এবং সহযোগী সংগঠনের কর্মীদের সমাবেশে আসা শুরুর আগেই জামায়াত এবং শিবিরের কর্মীরা সমাবেশে আসতে থাকে। তারা কারাবন্দি নেতাদের মুক্তির দাবিসংবলিত বিভিন্ন ধরনের ব্যানার-ফেস্টুন বহন করে। এ ছাড়া বড় বেলুন উড়িয়ে তাতে নেতাদের মুক্তির দাবিসংবলিত পোস্টার এঁটে দিয়েছেন। সমাবেশের মূল মঞ্চের পশ্চিম পাশে শিবিরকর্মীরা অবস্থান করে।

No comments

Powered by Blogger.