পূর্বাভাসের চেয়েও বেশি মাত্রায় বাড়ছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা

প্রতিবছর সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে ৩ দশমিক ২ মিলিমিটার হারে। জার্মানির পোস্টড্যাম ইনস্টিটিউটের জলবায়ু প্রভাবসংক্রান্ত গবেষকদল গতকাল বুধবার নতুন এ তথ্য জানায়। জাতিসংঘের দেওয়া হিসাবের চেয়ে প্রায় এ হার ৬০ শতাংশ বেশি।
২০০৭ সালে জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত আন্তরাষ্ট্রীয় প্যানেল (আইপিসিসি) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছিল, প্রতিবছর সর্বোচ্চ দুই মিলিমিটার হারে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ছে।
গবেষকরা জানান, নতুন হারে বাড়তে থাকলে একুশ শতকের মধ্যেই সমুদ্রপৃষ্ঠের গড় উচ্চতা প্রায় এক মিটার (তিন দশমিক ২৮ ফুট) বাড়বে। ফলে ধারণার অনেক আগেই বাংলাদেশের মতো নিচু এলাকাগুলো পানিতে তলিয়ে যাবে। বড় বড় সমুদ্র উপকূলবর্তী শহর যেমন নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সিতে হ্যারিকেনের আঘাত আরো তীব্রতর হবে। পাশাপাশি জলবায়ু শরণার্থীর সংখ্যাও আগের তুলনায় দ্রুত বাড়বে।
দোহায় জলবায়ু সম্মেলন শুরু হয়েছে। এর মধ্যে নতুন এ গবেষণা প্রতিবেদন আলোড়ন সৃষ্টি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০০৯ সালে কোপেনহেগেন সম্মেলনও পরিবেশ রক্ষায় তেমন কোনো কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণ ছাড়াই শেষ হয়ে যায়। আগের গবেষণাগুলোতে শুধু বরফ গলার হারকে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণ হিসেবে ধরা হতো। পৃথিবীপৃষ্ঠের তাপমাত্রা, সাম্প্রতিক জলোচ্ছ্বাস এবং উপগ্রহের তথ্য বিশ্লেষণ করে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা নির্ণয়ে পোস্টড্যাম নতুন এ ভবিষ্যদ্বাণী করে।
তাপমাত্রাসংক্রান্ত নতুন এক গবেষণাও পোস্টড্যামের এ আশঙ্কাকে সমর্থন জানিয়েছে। তারাও বলছে, দশকপ্রতি পৃথিবীর উষ্ণতা বাড়ছে প্রায় ০ দশমিক ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস হারে। ২০০৭ সালে আইপিসিসি তাদের চতুর্থ পর্যালোচনা প্রতিবেদনে ২১০০ সালে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বর্তমানের তুলনায় ৫৯ সেন্টিমিটার বাড়বে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে। নোবেল জয়ী এ সংগঠনটি তাদের পরবর্তী পর্যালোচনা প্রতিবেদন আগামী বছর প্রকাশ করবে।
২০১৪ সালে দুই দফায় পরবর্তী প্রতিবেদন প্রকাশ করবে তারা। সূত্র : এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.