প্রবৃদ্ধি অর্জনে বিশ্বে বাংলাদেশ ৩৫তম ও বিশ্বব্যাংকের ‘হেলদি’ কমেন্ট by সুমি খান

অন্ন , বস্ত্র, বাসস্থান এবং শিক্ষা এই চার মৌলিক অধিকারের ক্ষেত্রে মহাজোট সরকারের ভূমিকা ইতিবাচক বলে মনে করছেন সাধারণ জনগণ। তবে এ নিয়ে দ্বিমত থাকতেই পারে। তাই তথ্যপ্রমাণ সাপেক্ষেই আমার এ বক্তব্য গ্রহণীয়।

অনেকেই বিশ্বব্যাংকের মতো হয়তো বলবেন ‘মন্দ নয় ’, ‘অগ্রগতি হেলদি’। তবে বিশ্বমন্দা সহ নানান কারণে ( বিরোধী দলের ভাষায় সরকারের ব্যর্থতার কারণে) ৭% প্রবৃদ্ধি হয়তো সম্ভব হবে না। আইএমএফএর ওয়ার্ল্ড ইকনমি আউটলুকে বলা হয়েছে বাংলাদেশ বিশ্বের ১৫০টি দেশের মধ্যে প্রবৃদ্ধি অর্জনে ৩৫ তম অবস্থানে আছে। রোববার রাজধানীর আগারগাও বিশ্বব্যাংক কার্যালয়ে এক সম্মেলনে বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন একথা বলেছেন।
আইএমএফ এবং এডিবির পূর্বাভাস ছিল ৬.১ %, সেখানে বাংলাদেশ ৬.৩২% প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের এ অগ্রগতিকে সমর্থন করে বলেছে দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষাপটে ৬ % প্রবৃদ্ধি কম নয়। দাতা সংস্থা কী আর এমনি এমনি মুখ বড় করে আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের একটি দেশের সফলতার কথা বলবে?

কিন্তু আমরা নিজেরা কেন মুখ লুকিয়ে আড়ালে আবডালে বিরস মুখে বলছি এতো বড়ো বিজয়ের কথা? এই রাষ্ট্রটা তো অনেক রক্তের দামে কেনা, বিজয়ের স্বপ্নে জিতে নেয়া। তবে স্বপ্নজয়ের কথা বড়ো করে না বলে দাতা সংস্থার কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে চিবিয়ে চিবিয়ে বলা কেন? এতে সাময়িকভাবে কিছু কায়েমী স্বার্থান্বেষী ব্যক্তির ব্যক্তিস্বার্থ উদ্ধার হলেও দেশের ক্ষতি করেই চলেছি আমরা।
এই অগ্রগতির সুফল হয়তো তাৎক্ষণিক ভাবে না পেলেও ৫ বছর পর অবশ্যই পাওয়া যাবে।
আগামী ৪ নভেম্বর শুরু হচ্ছে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট(জে এস সি)পরীক্ষা।জে এস সি পরীক্ষায় চট্টগ্রাম বোর্ডে আগের বছরের থেকে ৮ হাজার ২শ’ ২৯ জন পরীক্ষার্থী বেড়েছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম বোর্ড কর্তৃপক্ষ। বাংলানিউজে প্রকাশিত সংবাদে জানলাম এর মধ্যে ৭৫ হাজার ৭’শ ৪২ জন মেয়ে  এবং ৬০ হাজার ৫শ’ ৫১ জন পরীক্ষার্থী ছেলে।

শিক্ষাক্ষেত্রে বড় ধরণের অগ্রগতির প্রকাশ এই চিত্র। ২০১১ সালে ছেলেদের চেয়ে ১৪ হাজার ৯শ’বাষট্টি জন মেয়ে বেশী ছিল। এবার ১৫ হাজার ১শ’ ১৯১ জন মেয়ে পরীক্ষার্থী বেশী । মেয়েদের অগ্রগতি আর সফলতার এমন নজির আগে কখনও দেখা যায়নি। কারণ বিনা বেতনে দ্বাদশ ক্লাস পর্যন্ত পড়ানো যখন বিশ্বের উন্নত অনেক দেশের জন্যই

বিলাসিতা, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে তা দূরদর্শিতা।এরই বিনিময়ে এসেছে এই  সাফল্য। এভাবেই আরো অনেক সাফল্য ছিনিয়ে আনবে এদেশের নারীরা।

অনেকেই  আজ যারা অন্ধের মতো চোখ বুজে আছেন, তারা একদিন স্বীকার করবেন এর সত্যতা।

সমুদ্রসীমা বিজয়ে বিরোধী দলের অভিনন্দন এবং বিনা কারণে হঠাৎ আবার অভিনন্দন ফিরিয়ে নেবার মতো হাস্যকর বিলাসিতা এদেশের মতো আর কোন দেশে হওয়া সম্ভব কি?

মধ্যরাতে বসে এ লেখাটি লিখতে গিয়ে কথা বাড়াতে ইচ্ছে করছে না। শুধু বলতে ইচ্ছে করছে আমরা নিজেরা নিজেদের মঙ্গল কামনা করি কি শুধু বাইরে? নাকি মন থেকেও। যদি মন থেকে হয়, তাহলে এমন সাফল্য এ দেশের প্রতিটি নাগরিকের প্রাণ মন যেন ছুয়ে যায়।

No comments

Powered by Blogger.