জনমত জরিপ-ওবামাকে ছাড়িয়ে গেলেন রমনি

কিছুদিন ধরেই বারাক ওবামার ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছিলেন মিট রমনি। শেষ পর্যন্ত তিনি ছাড়িয়েই গেলেন ওবামাকে। গত সোমবার পিউ রিচার্স সেন্টার প্রকাশিত জরিপের ফল অনুযায়ী, জনসমর্থনের দিক থেকে এ মুহূর্তে ওবামার চেয়ে চার পয়েন্ট এগিয়ে আছেন রমনি।


নির্বাচনের প্রচার শুরুর পর এই প্রথম জনমত জরিপে ডেমোক্র্যাট ওবামাকে টপকে গেলেন রিপাবলিকান রমনি। যদিও গত সপ্তাহে প্রথম প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে ম্লান উপস্থিতির পর থেকেই ওবামার পিছিয়ে পড়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছিল।
গত ৩ অক্টোবর দুই প্রার্থী প্রথম দফা বিতর্কে অংশ নেন। এরপর ৪ থেকে ৭ অক্টোবর পর্যন্ত ওয়াশিংটন-ভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান পিউ রিসার্চ সেন্টার এক হাজার ৫১১ জন প্রাপ্ত বয়স্কের ওপর জরিপ চালায়। জরিপের ফলে দেখা যায়, দোদুল্যমান ভোটাদের মধ্যে রমনির গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৪৯ শতাংশ ভোটারের সমর্থন পেয়েছেন তিনি। ওবামা পেয়েছেন ৪৫ শতাংশের সমর্থন। রমনির সমর্থকদের মধ্যে নারী ও তরুণ ভোটারদের সংখ্যাই বেশি। তাঁরা মনে করেন, বিতর্কে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ওবামার তুলনায় অনেক বেশি উজ্জ্বল ছিলেন ম্যাসাচুসেটসের সাবেক গভর্নর রমনি। নিবন্ধিত ভোটারের ক্ষেত্রে অবশ্য তাঁদের দুজনের জনপ্রিয়তা সমান, ৪৬ শাতাংশ করে।
আরেক জরিপকারী প্রতিষ্ঠান গ্যালপের কাছ থেকেও প্রায় একই ধরনের পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে। তাদের হিসাবে দুই প্রার্থীর প্রতি সমর্থনের হার ৪৭ শতাংশ।
পিউ রিসার্চ সেন্টারের সহযোগী পরিচালক ক্যারোল ডোহার্টি বলেন, 'এত দিন জরিপগুলোতে ওবামাই নেতৃত্ব দিয়েছেন। এখন এ প্রবণতা রমনির দিকে ঝুঁকছে। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার এ নির্বাচন বিতর্কের প্রভাবের এটাই হচ্ছে প্রথম প্রমাণ।' পিউয়ের গত মাসে প্রকাশিত জরিপে ওবামার চেয়ে রমনি আট পয়েন্ট পিছিয়ে ছিলেন। আর প্রচার-প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রথম ভাগে দুই প্রার্থীর ব্যবধান ছিল ১৮ পয়েন্ট।
পিউ পরিচালিত জরিপে ভোটাদের দুই প্রার্থীর আর্থিক নীতি নিয়েও প্রশ্ন করা হয়। এ ক্ষেত্রেও ওবামার চেয়ে রমনি ১৩ পয়েন্ট এগিয়ে (রমনি ৩৭ শতাংশ, ওবামা ২৪ শতাংশ)। ধনীদের মধ্যে রমনির গ্রহণযোগ্যতা শুরু থেকেই বেশি। এবারের জরিপে দেখা গেছে, মধ্যবিত্ত ভোটাদের মধ্যেও তাঁর সমর্থন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। গত জুলাইয়ে এ হার ছিল ৪১ শতাংশ, এখন তা ৪৯ শতাংশ। স্বাস্থ্যসেবা, পররাষ্ট্র নীতির ক্ষেত্রেও ওবামার সঙ্গে ব্যবধান অনেকটাই কমিয়ে এনেছেন তিনি।
গত রবিবার ভার্জিনিয়ায় পররাষ্ট্র নীতির বিষয়ে দেওয়া ভাষণে ওবামাকে তুলাধোনা করেন রমনি। দুই প্রার্থীর মধ্যপ্রাচ্য নীতির মধ্যে যে বিস্তর ফারাক, তাও স্পষ্ট হয়ে যায় এ সময়ে। রমনি ইরানকে নজরদারির মধ্যে রাখা ছাড়াও লিবিয়ার সন্ত্রাসীদের আটক, মিসরকে যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তার ওপর শর্তারোপ ও সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সরাসরি অস্ত্র দিয়ে সহায়তার কথা বলেন।
দুই প্রার্থীর পরবর্তী বিতর্ক হবে ১৬ অক্টোরব নিউ ইয়র্কে। এর মধ্যেই কেনটাকিতে আগামী বৃহস্পতিবার দুই দলের ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের বিতর্ক হবে। এতে ডেমোক্রেটিক দলের জো বাইডেন মুখোমুখি হবেন রিপাবলিকান পল রায়ানের। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান, এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.