বিএনপি নেতাদের দাবি- রাষ্ট্র ও প্রধানমন্ত্রীর লোকজনই বৌদ্ধদের ওপর হামলায় জড়িত

বৌদ্ধদের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলার ঘটনায় ‘রাষ্ট্র ও প্রধানমন্ত্রীর লোকজন’ কোনো না কোনোভাবে জড়িত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির নেতারা। তাঁরা বলেছেন, এ জন্যই নিজেদের সন্ত্রাসীদের আড়াল করার জন্য তদন্ত শেষ না করেই প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলের স্থানীয় সাংসদকে জড়িয়ে বক্তব্য দিয়েছেন।


গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে এবং সকালে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির নেতারা এ অভিযোগ করেন।
গত সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রামুতে হামলার ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পর এক সমাবেশে বক্তব্য দেন। এ সময় তিনি বিএনপির স্থানীয় সাংসদ লুৎফর রহমানকে ঘটনায় উসকানি দেওয়ার জন্য দায়ী করেন।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে নয়াপল্টনের সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, ‘সরকারের বিভিন্ন সংস্থা এ ঘটনার তদন্ত করছে। তা হলে এই তদন্তের কী প্রয়োজন ছিল?’
সাংবাদিক দম্পতি সাগর সরওয়ার ও মেহেরুন রুনি হত্যার বিষয়টি উল্লেখ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘কিছুক্ষণ আগে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তাঁরা নাকি চারজন চোরকে খুঁজে পেয়েছেন। সাগর-রুনি যে ঘটনায় খুন হন এবং এর পেছনে যাঁরা আছেন, তা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য এত দিন পরে তাঁরা সাধারণ চোরের দিকে অঙ্গুলিনির্দেশ করছেন।’ মোশাররফ দাবি করেন, হলমার্কের এমডি (তানভীর মাহমুদ) পুলিশের কাছে বলেছেন, অর্থ আত্মসাতের জন্য সরকারের উচ্চপর্যায়ের ব্যক্তিদের এক হাজার কোটি টাকা ঘুষ দিয়েছেন তিনি।
জাতীয়তাবাদী যুবদলের সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেনের মুক্তির দাবিতে এবং যুবদলের নেতা-কর্মীদের নামে ‘মিথ্যা মামলা’র প্রতিবাদে যুবদল এই বিক্ষোভ সমাবেশ করে। যুবদলের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুস সালামের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, যুগ্ম মহাসচিব বরকতউল্লা, রুহুল কবির রিজভী, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সকালে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘এখন পর্যন্ত আমরা যে তথ্য পাচ্ছি, যাঁরা ওই সময়ে এ ঘটনায় সম্পৃক্ত ছিলেন, তাঁদের অধিকাংশই আওয়ামী লীগের লোকজন।’
রিজভী প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যকে ‘কাণ্ডজ্ঞানহীন ও নির্লজ্জ মিথ্যাচার’ বলে অভিহিত করেন। আজ বুধবার ঢাকাসহ সারা দেশে ১৮ দলীয় জোটের বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি স্থগিত করা এবং বিভিন্ন জেলায় বিএনপির মিছিলে হামলার প্রতিবাদে এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। শহীদ জেহাদ দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি স্থগিত করা হয় বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
‘প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জেরে রামুতে হামলা’: গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেন, সাম্প্রদায়িকতা নিয়ে জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জের ধরেই রামুতে বৌদ্ধদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। ‘ইয়ুথ ফোরাম’ নামের একটি সংগঠন ‘চলমান রাজনীতি: সরকারের ভূমিকা’ শীর্ষক এ আলোচনার আয়োজন করে।

No comments

Powered by Blogger.