ড্যাবের তিন ডাক্তারকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল প্রতিপক্ষ- এক নেতাসহ ৬ জন গ্রেফতার

অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জের ধরে বিএনপিপন্থী চিকিৎসকদের সংগঠন ড্যাবের (ডক্টরস এ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) একটি গ্রুপ অপর গ্রুপের তিন ডাক্তারকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল। এমন হত্যার পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িত ড্যাবের কেন্দ্রীয় নেতা ডা. কামরুল ইসলামসহ ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
সোমবার র্যাব সদর দফতরে এক সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, দীর্ঘ দিন ধরে ড্যাব মহাসচিব ডা. এজেডএম জাহিদ ও ডা. দোলনের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। এরই জের ধরে ডা. দোলন ড্যাবের জাহিদ গ্রুপের তিন ডাক্তার ডা. মোফাখখারুল ইসলাম রানা, ডা. বাহার ও ডা. উজ্জ্বলকে হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেয়া হয় ড্যাবের জুনিয়র নেতা ডেন্টাল কলেজের সাবেক ছাত্রদল সভাপতি ডা. কামরুল ইসলামকে। ডা. কামরুল এমন দায়িত্ব সাগ্রহে গ্রহণ করেন। ডা. কামরুল মিরপুর এলাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী গাজী সুমনের সহযোগী সেকেন্ড ইন কমান্ড ভাড়াটে খুনী মিঠু ওরফে প্রশান্তের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরিকল্পনামতো প্রশান্ত তার কয়েক সহযোগী নিয়ে ডা. রানাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গত ১২ আগস্ট মিরপুর ডিজি ল্যাবে ডা. রানার চেম্বারে যায়। কিন্তু ডা. রানা ওইদিন চেম্বারে না থাকায় পরিকল্পনা ভেস্তে যায়। ১৩ আগস্ট ডা. রানা তার জীবননাশের চেষ্টা করা হয়েছে মর্মে একটি সংবাদ সম্মেলন করেন।
বিষয়টি র্যাবের নজরে আসার পর গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়। মিঠৃু গা ঢাকা দেয়ায় ডা. কামরুল সংগঠনের অপর দুইজন নেতা ডা. উজ্জ্বল ও ডা. বাহারকে হত্যার জন্য মামুন নামের অপর এক সন্ত্রাসীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন। পরে গত ১ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১টার দিকে মিরপুরের ৬ নম্বর সেক্টরের ৩ নম্বর সড়কের একটি নির্মাণাধীন ভবনের সামনে থেকে র্যাব-৪-এর একটি দল তৎক্ষণাৎ অভিযান চালিয়ে ডা. কামরুল ইসলাম, পেশাদার খুনী মিঠু ওরফে প্রশান্ত, জয়নাল, তুষার, মেহের আলী ও মোস্তফাকে গ্রেফতার করে। মিঠুর কাছ থেকে ৩ রাউন্ড গুলিসহ ১টি বিদেশী পিস্তল ও জয়নালের কাছ থেকে ১টি ধারালো ছোরা উদ্ধার করা হয়।
ডা. কামরুল সাংবাদিকদের জানান, গত রমজানে ড্যাবের ইফতার পার্টিতে ড্যাব মহাসচিব ডা. জাহিদের ও ডা. দোলনের লোকজনের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এর জের ধরে ডা. দোলন তাদের শিক্ষা দেয়ার জন্য হত্যার পরিকল্পনা করেন। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে এই কাজ করেছে বলে স্বীকার করে। ডা. দোলনকে গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত আছে। পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে আরও কেউ জড়িত কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন র্যাব।

No comments

Powered by Blogger.