সাকা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষীকে জেরা

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাংসদ সালাউদ্দিন কাদের (সাকা) চৌধুরীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের দশম সাক্ষী কাজী মো. নুরুল আবছারকে গতকাল সোমবারও জেরা করেছে আসামিপক্ষ। আসামিপক্ষের প্রধান আইনজীবী আহসানুল হক সাক্ষীকে গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো জেরা করেন।


বিচারপতি নিজামুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১-এ এই জেরার সময় সাকা চৌধুরী আসামির কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন।
জেরার শুরুতে আসামিপক্ষের আইনজীবী চট্টগ্রামে সাকা চৌধুরীর পৈতৃক বাড়ি ‘গুডস হিল’ ও এর আশপাশের এলাকা সম্পর্কে সাক্ষীকে বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। পরে তিনি মত (সাজেশন) দেন, চিকিৎসক ছমিউদ্দিন তাঁর বাসায় গরিব লোকদের চিকিৎসা করতেন না। সাক্ষী বলেন, এটা সত্য নয়। ছমিউদ্দিনের ছেলে আজিজ উদ্দিনকে সাক্ষী কবে থেকে চিনতেন—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকে চিনতেন। তাঁরা একই স্কুলে পড়েছেন।
আজিজ উদ্দিনের বাড়ির সামনের পয়োনিষ্কাশন নালা প্রসঙ্গে সাক্ষী বলেন, একাত্তরে এটি গভীর ছড়ার (খাল) মতো ছিল। তার ওপর পারাপারের জন্য একটি স্ল্যাব (পাটাতন) ছিল। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ছমিউদ্দিনের সঙ্গে সাকা চৌধুরীর কোনো আত্মীয়তা আছে কি না, তা তিনি জানেন না।
আহসানুল হক বলেন, সাক্ষী যে মুক্তিযোদ্ধা, এ ব্যাপারে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই। নুরুল আবছার বলেন, এটা হতে পারে। আইনজীবী মত দেন, একাত্তরের সেপ্টেম্বরে ছমিউদ্দিনের বাড়ির কোনো অনুষ্ঠানে সাকা চৌধুরী যাননি। সাক্ষী বলেন, এটা সত্য নয়। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ঘটনার পর তাঁদের (মুক্তিযোদ্ধাদের) মধ্যে আলোচনা হয়, সাকা চৌধুরীকে মারতে গিয়ে তাঁর গাড়িচালককে হত্যা করেছেন। এটা হতে পারে যে আজিজ উদ্দিন তাঁদের সাকা চৌধুরীর বসার স্থান সম্পর্কে ভুল তথ্য দিয়েছিলেন।
এই মামলার কার্যক্রম আজ মঙ্গলবার বেলা দুইটা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়। আজ নুরুল আবছারকে জেরার জন্য এক ঘণ্টা সময় পাবেন আসামিপক্ষের আইনজীবী।
নুরুল আবছার গত ২৮ আগস্ট ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দিতে বলেন, মুক্তিযুদ্ধকালে তিনি সাকা চৌধুরীকে হত্যার জন্য সহযোদ্ধাদের সঙ্গে অভিযানে অংশ নিয়েছিলেন। ওই অভিযানে সাকা চৌধুরী বেঁচে যান, তবে তাঁর গাড়িচালক নিহত হন।
মিছবাহুর রহমানকে জেরা: একই ট্রাইব্যুনালে গতকাল জামায়াতে ইসলামীর আমির মতিউর রহমান নিজামীর বিরুদ্ধে মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রথম সাক্ষী বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মিছবাহুর রহমান চৌধুরীকে দ্বিতীয় দিনের মতো জেরা করে আসামিপক্ষ।
আসামির কাঠগড়ায় নিজামীর উপস্থিতিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী মিজানুল ইসলাম সাক্ষীকে ইসলামী ছাত্রসংঘের (জামায়াতের তৎকালীন ছাত্রসংগঠন) সাংগঠনিক কাঠামো নিয়ে কয়েকটি প্রশ্ন করেন। এসব প্রশ্নের জবাবে সাক্ষী বলেন, নিখিল পাকিস্তান ছাত্রসংঘের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম তিনি বলতে পারবেন না। ১৯৬৫ সালে পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রসংঘের সভাপতি ছিলেন ইউনুস এবং সম্পাদক ছিলেন নিজামী। আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিজামী মাদ্রাসায় প্রাথমিক শিক্ষা নিয়েছেন।
মিছবাহুর রহমানকে আজ আবার জেরা করবে আসামিপক্ষ।

No comments

Powered by Blogger.