ঝামেলামুক্ত কেনাকাটা ব্র্যান্ডের শো-রুমে by মেখ্যাইউ মারমা

আর কদিন পরই ঈদ। আর দরদামের ঝামেলামুক্ত পরিবেশে ঈদের কেনাকাটা করতে লোকজন ছুটছে দেশি-বিদেশি ব্র্যান্ড পণ্যের শো-রুমগুলোতে। ঈদ সামনে রেখে মানসম্পন্ন ও রুচিশীল পোশাক, জুতা এবং অন্যান্য সামগ্রীর দোকানে তাই লোকজনের ভিড় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত।


আড়ং, বাটা, দেশী দশ, এপেক্স, প্রাইড, ক্যাটস আই, মেনজ ক্লাব, ওয়েস্টটেকস, গ্রামীণ সুপারসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পণ্যের দোকানে গিয়ে দেখা যায়, ঈদের কেনাকাটার জমজমাট চিত্র।
আড়ং: দেশীয় সেরা ব্র্যান্ড হিসেবে আড়ংয়ের নাম এখন সবার মুখে মুখে। ঈদ সামনে রেখে ক্রেতাদের ভিড়ে আড়ংয়ের শো-রুম এখন দিনভর জমজমাট। গত বুধবার বিকেলে নগরের ২ নম্বর গেটের আড়ংয়ের বিশাল শো-রুমে গিয়ে দেখা গেছে, ক্রেতাদের ভিড় সামলাতে বিক্রয়কর্মীরা হিমশিম খাচ্ছেন।
কথা হয় কেনাকাটা করতে আসা পূর্ব নাসিরাবাদ এলাকার বাসিন্দা মোজাফফর হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘পরিপূর্ণ ঈদের বাজার আড়ং থেকেই করা যায়। কোনো ঝামেলা পোহাতে হয় না। একই শো-রুম থেকেই পরিবারের সবার জন্য চাহিদামতো পোশাক থেকে শুরু করে গয়না, জুতা, ঘর সাজানোর জিনিসপত্র সবই পাওয়া যায়। তা ছাড়া আড়ংয়ের পণ্যের মানও ভালো।’
বাটা: সানামার ওশান সিটির সপ্তম তলায় বাটার বিশাল শো-রুম রুচিশীল সব জুতায় ভরপুর। গত শুক্রবার দুপুরে গিয়ে দেখা গেছে, ক্রেতারা পছন্দমতো জুতা কিনছে। শিশুদের জুতার দিকে ভিড় ছিল সবচেয়ে বেশি। শো-রুমের উপব্যবস্থাপক মো. সোহেল রানা বলেন, ‘দেশের দ্বিতীয় এবং চট্টগ্রামের মধ্যে সর্ববৃহৎ বাটার এই শো-রুমে ঈদ উপলক্ষে মোট ৮০০ ডিজাইনের জুতা নিয়ে আসা হয়েছে। সম্পূর্ণ দেশীয় উপাদান দিয়ে এসব জুতা উৎপাদন করা হয়েছে।’ তা ছাড়া এবার ঈদ উপলক্ষে তৈরি জুতায় দাম কমিয়ে ডিজাইনে নতুনত্ব আনা হয়েছে বলে তিনি জানান।
দেশী দশ: নগরের আফমি প্লাজার পঞ্চম তলায় দেশী দশকে ঘিরে দেশীয় পোশাকপ্রেমীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। একই ছাদের নিচে বুটিকশিল্পে দেশের ১০টি নামকরা প্রতিষ্ঠানের সম্মিলিত রূপ এই দেশী দশ। এগুলো হলো বিবিআনা কে-ক্র্যাফট, অঞ্জনস, রঙ, বাংলার মেলা, দেশাল, প্রবর্তনা, নিপুণ, সাদাকালো ও নগরদোলা। মার্জিত ও রুচিসম্মত শাড়ি, পাঞ্জাবি, সালোয়ার-কামিজ, ফতুয়া, টি-শার্টসহ দেশি কাপড়ের সব ধরনের পোশাকই এসব শো-রুমে পাওয়া যাবে।
প্রাইড শাড়ি: ঈদ উপলক্ষে দেশীয় শাড়ির হাউস প্রাইড নিয়ে এসেছে সুতি, সিল্ক এবং মসলিনের আকর্ষণীয় শাড়ি ও সালোয়ার কামিজ। বিপণিবিতান, ইউনুস্কো শপিং সেন্টার, চিটাগং শপিং সেন্টার, আফমি প্লাজাসহ নগরের বিভিন্ন বিপণিকেন্দ্রে প্রাইডের মোট সাতটি শো-রুমে বেচাকেনা চলছে সমানে।
জিইসি মোড়ের প্রাইড শো-রুম ব্যবস্থাপক নুরুন্নবী জানান, ঈদ উপলক্ষে আধুনিক ডিজাইনের শাড়ি এবং সালোয়ার কামিজের নকশায় নতুনত্ব আনা হয়েছে। ব্লক, বাটিক, এমব্রয়ডারি করা সুতির শাড়ির দাম সর্বনিম্ন ৪০০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা পর্যন্ত। সিল্ক এবং মসলিনের শাড়ি এক হাজার ৯৫০ থেকে সাত হাজার ৮৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ক্যাটস আই: পুরুষদের পোশাকের জন্য ব্র্যান্ড হিসেবে খ্যাত ক্যাটস আই। পাঞ্জাবি, ফরমাল এবং ক্যাজুয়াল শার্ট-প্যান্ট, টি-শার্টের প্রচুর সংগ্রহ রয়েছে ক্যাটস আইয়ের শো-রুমে। গাবাডিং কাপড়ের চাপা প্যান্টের সঙ্গে যোদপুরী পাঞ্জাবি এবারের ঈদে বেশি চলছে বলে জানালেন সানমার ওশান সিটির ক্যাটস আইয়ের শো-রুম ব্যবস্থাপক হুমায়ুন কবির। এই পাঞ্জাবির দাম এক হাজার ৮০০ টাকা ও প্যান্টের দাম এক হাজার ৪০০ টাকা। এ ছাড়া ক্যাটস আইয়ের সব পাঞ্জাবিই শেরওয়ানি কাটের। এসব পাঞ্জাবির দাম এক হাজার ৬৫০ থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত। ফরমাল ও ক্যাজুয়াল শার্টের দাম এক হাজার ৩০০ থেকে এক হাজার ৯৯০ টাকা। নয়টি পকেটবিশিষ্ট কার্গো প্যান্ট, জিন্স, ফরমাল প্যান্টের দাম এক হাজার ৪০০ টাকা থেকে দুই হাজার ৮৫০ টাকা।
ওয়েস্টটেকস: আধুনিক সব পোশাকই পাওয়া যাবে নগরের প্রবর্ত্তক মোড়সংলগ্ন ওয়েস্টটেকসে। ঈদ উপলক্ষে ছেলেদের শার্টে দেওয়া হচ্ছে ১০ শতাংশ বিশেষ ছাড়। ওয়েস্টটেকসের নিচতলায় রয়েছে নারী-পুরুষ উভয়ের ফরমাল ও ক্যাজুয়াল পোশাক, জুতা ও ব্যাগ। গেঞ্জির কাপড়ের প্রাধান্য এখানে বেশি। শিশু, নারী এবং পুরুষের পোশাক নিয়ে আলাদাভাবে সাজানো রয়েছে ওয়েস্টটেকসের তিন তলার শো-রুমটি।
গ্রামীণ সুপার: ইউনুস্কো সেন্টারের চতুর্থ তলায় গ্রামীণ সুপারের শো-রুমে রয়েছে নানা ডিজাইনের জুতার সমাহার। এখানে নির্দিষ্ট অঙ্কের জুতা কিনলেই দেওয়া হয় একটি গ্রাহক কার্ড। পরবর্তী সময়ে এই কার্ড নিয়ে গেলে পাওয়া যাবে ১০ শতাংশ ছাড়।

No comments

Powered by Blogger.