স্বেচ্ছাশ্রমে সাঁকো নির্মাণ

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের ছয় গ্রামের দুই হাজার মানুষকে রাঘবপুর বিলের ওপর সেতু না থাকায় পাঁচ কিলোমিটার ঘুরে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে যেতে হতো। বিলের পূর্ব দিকের ছয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরাও দুর্ভোগ পোহাত। এই দুর্ভোগ লাঘবে স্থানীয় লোকজন স্বেচ্ছাশ্রমে সেখানে একটি সাঁকো নির্মাণ করেছেন।


স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বাঁশের এই সাঁকোটি তৈরিতে মাত্র দুই হাজার ৭০০ টাকা খরচ হয়েছে। এর দৈর্ঘ্য ৭০ ও প্রস্থ চার ফুট। ৭ আগস্ট সাঁকো তৈরির কাজ শুরু হয়ে শুক্রবার শেষ হয়।
স্থানীয় লোকজন জানায়, উপজেলার তালুককানুপুর ইউনিয়নের রাঘবপুর বিলের ওপর একটি সেতু ১৯৮৮ সালের বন্যায় ভেঙে যায়। ১৯৮০ সালের দিকে গোবিন্দগঞ্জ-জামালপুরহাট-তালুকানুপুর সড়কের ওই স্থানে সেতুটি নির্মিত হয়। সেতু ভেঙে যাওয়ার পর থেকে শুকনো মৌসুমে চলাচল করা গেলেও বর্ষার সময় কলাগাছের ভেলা ছাড়া পারাপারের কোনো উপায় ছিল না। সেতু পুনর্নির্মাণের জন্য ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান, সদস্য ও প্রশাসনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানিয়েও কোনো কাজ হয়নি। তাই এলাকাবাসী মিলে সাঁকো নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন নিপোর সভাপতি আহমেঞ্চদ উল্যাহ বলেন, তালুককানুপুর ইউনিয়নের উত্তরপাড়া, সমশপাড়া, রাঘবপুর, নুনদহপাড়া, ফকিরপাড়া ও সোনারপাড়া গ্রামের প্রায় পাঁচ হাজার মানুষের ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে যোগাযোগের মাধ্যম গোবিন্দগঞ্জ-জামালপুরহাট-তালুকানুপুর সড়ক। কিন্তু সড়কের রাঘবপুর বিলের ওপর সেতু না থাকায় তাঁদের পাঁচ কিলোমিটার এলাকা ঘুরে তালুককানুপুর ইউনিয়ন পরিষদে যেতে হচ্ছে।
উত্তরপাড়া গ্রামের কৃষক মজিবর মিয়া বলেন, অনেকে চাঁদা, বাঁশ দিয়ে সহায়তা করেছেন। যাঁরা চাঁদা দিতে পারেননি, তাঁরা শ্রম দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। তালুককানুপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মহসীন আলী বলেন, ‘আমি জনপ্রতিনিধি হয়ে যা করতে পারিনি, এলাকাবাসী তা করেছে।’

No comments

Powered by Blogger.