পড়ার বিষয় যখন কৃষি

চাষাভুষা বলে হেয় করার দিন শেষ। মাটি ও ফসলের সঙ্গে জড়িয়ে থাকা মানেই পিছিয়ে পড়া, ভাবতেন অনেকে। কৃষিকে উচ্চশিক্ষা ও পেশা হিসেবে বেছে নেবেন এমন কথা চিন্তাও করতে পারতেন না শহুরের আধুনিক তরুণ-তরুণীরা। এই ভাবনাগুলো আজ অচল। বর্তমানে কৃষি খাত শিক্ষিত তরুণ- তরুনীদের কাছে আকর্ষণীয় পেশা।


বিশ্বজুড়ে কৃষি খাতকে বলা হচ্ছে সম্ভাবনাময় ‘সবুজ পেশা’র ক্ষেত্র। সবুজ অর্থনীতি গড়ার কারিগর হিসেবে দেশের গ-ি পেরিয়ে আমাদের দেশের সরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কৃষি বিজ্ঞানীরা এখন আন্তর্জাতিক খ্যাতির দিকে যাত্রা করছেন। স্বাধীনতার পর থেকে দেশের প্রধান খাদ্যশস্য ধানের উৎপাদন এক কোটি টন থেকে তিন কোটি টন অতিক্রম করেছে। একসময় দেশের কৃষকেরা চাষ করতেন নিজেদের পরিবারের চাহিদা মেটানোর জন্য। বর্তমানে দেশের বৃহত্তম শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলো কৃষি খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসছে। এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে কৃষিবিদদের এক বিশাল ভূমিকা। আমদানিনির্ভরতা কম থাকায় গত বছরের বিশ্বমন্দার ধাক্কা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে লাগেনি বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদেরা। কৃষি খাতই আগামীদিনে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা। কৃষি বিষয়ে উচ্চশিক্ষা নিয়ে দেশে বছরে দুই হাজার তরুণ চাকরির বাজারে আসছেন। দেশের অনেক শিক্ষিত তরুণ কৃষি খামার গড়ে তুলে একে পেশা হিসেবে নিচ্ছেন। কৃষি পেশার সঙ্গে জড়িয়ে থাকা কৃষিবিদদের পেতে দেশী-বিদেশী সংস্থাগুলো প্রতিযোগিতায় মেতে উঠেছে। দেশের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা নেয়া তরুণদের জন্য এখন বড় ধরনের সুযোগ। পেশা হিসেবে কৃষি আর সেকেলে নেই। কৃষিক্ষেত্র আজ অনেক স্মার্ট ও আধুনিক। কৃষিকে নিয়েই আপনি গড়তে পারেন আপনার স্বপ্নের ক্যারিয়ার। আসুন জেনে নেই আমাদের দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি বিষয় পড়ার বিস্তারিত তথ্য।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
দেশের শীর্ষস্থানীয় এ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হলে ন্যূনতম যোগ্যতা থাকতে হবেÑ এসএসসি ও এইচএসসি অথবা সমমানের পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে চতুর্থ বিষয় বাদে ন্যূনতম মোট জিপিএ-৭.০০; তবে উভয় পরীক্ষার প্রতিটিতেই চতুর্থ বিষয় বাদে জিপিএ-৩.০০ পেতে হবে। পাশাপাশি উভয় পরীক্ষায় পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত, জীববিদ্যা ও ইংরেজী বিষয়গুলোর প্রতিটিতে আলাদাভাবে গ্রেড পয়েন্ট ২.০০ থাকতে হবে। মেধা স্কোর : লিখিত পরীক্ষায় ১০০ নম্বর, এসএসসি ও এইচএসসির ফল থেকে যথাক্রমে ৮০ ও ১২০ নম্বরসহ মোট ৩০০ নম্বর গণনা করা হয়। পরীক্ষা পদ্ধতি : পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত, জীববিদ্যা বিষয়ে এমসিকিউ পদ্ধতিতে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হয়। বিস্তারিত জানতে লগইন করুন (িি.িনধঁ.বফঁ.নফ/ধফসরংংরড়হ)

পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়
বরিশাল বিভাগের এই ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি হলেও এটি মূলত কৃষি বিষয়কেন্দ্রিক। এখানে কৃষি অনুষদের ১৬টি বিভাগে শতাধিক শিক্ষক রয়েছেন। এ অনুষদে সহস্রাধিক ছাত্রছাত্রী পড়াশোনা করছে। কৃষি ক্ষেত্রে এ বিশ্ববিদ্যালয়ে কোর্সক্রেডিট সিস্টেমের শিক্ষাব্যবস্থা চালু রয়েছে, যা একটা সর্বাধুনিক প্রযুক্তির শিক্ষাদান পদ্ধতি। ভর্তির যোগ্যতা : যে সকল ছাত্রছাত্রী ২০০৯-১০ সালে এসএসসি বা সমমান এবং ২০১১-১২ সালে এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে উত্তীর্ণ হয়েছে, কেবল তারাই আবেদন করতে পারবে। আবেদনকারীর অবশ্যই এসএসসি বা সমমানের এবং এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় উভয় ক্ষেত্রে চতুর্থ বিষয় বাদে প্রতিটিতে ন্যূনতম জিপিএ-২.৫সহ সর্বমোট জিপিএ-৬.০০ থাকতে হবে। এছাড়া প্রার্থীকে এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় অবশ্যই তার পঠিত পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত এবং জীববিদ্যাসহ সকল বিষয়ের প্রতিটিতে ন্যূনতম জিপিএ-২.০০ থাকতে হবে। বিস্তারিত জানতে ০১৭১৭৯৬৯১২৩ অথবা ওয়েবসাইট (িি.িঢ়ংঃঁ.ধপ.নফ/ধফসরংংরড়হ)

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতা এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে একত্রে কমপক্ষে ৭.৫০ জিপিএ এবং যে কোন একটিতে কমপক্ষে ৩.০০ জিপিএ থাকতে হবে। উভয় পরীক্ষায় পদার্থবিদ্যা, গণিত, রসায়ন, জীববিদ্যা এবং ইংরেজী বিষয়গুলোর প্রতিটিতে কমপক্ষে ৩.০০ জিপিএ থাকতে হবে। স্কোর : লিখিত পরীক্ষায় ১০০ নম্বর, এসএসসি ও এইচএসসির ফল থেকে যথাক্রমে ৪০ ও ৬০ নম্বরসহ মোট ২০০ নম্বর গণনা করা হয়। পরীক্ষা পদ্ধতি : পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত, জীববিদ্যা, ইংরেজী ও সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে এমসিকিউ পদ্ধতিতে মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হয়। িি.িংধঁ.ধপ.নফ

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, (সিকৃবি) সিলেট : সিলেটের এ বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতা : এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে একত্রে কমপক্ষে ৬.৫০ জিপিএ এবং উভয় পরীক্ষার প্রতিটিতেই চতুর্থ বিষয় বাদে ৩.০০ জিপিএ থাকতে হবে। উভয় পরীক্ষায় পদার্থবিদ্যা, গণিত, রসায়ন, জীববিদ্যা বিষয়গুলোর প্রতিটিতে কমপক্ষে ৩.০০ এবং ইংরেজীতে ২.০০ থাকতে হবে। মেধা স্কোর : লিখিত পরীক্ষায় ১০০ নম্বর, এসএসসি ও এইচএসসির ফল থেকে যথাক্রমে ৪০ ও ৬০ নম্বরসহ মোট ২০০ নম্বর গণনা করা হয়। পরীক্ষা পদ্ধতি : পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত, জীববিদ্যা ও ইংরেজী বিষয়ে এমসিকিউ পদ্ধতিতে মোট ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হয়। িি.িংুষযবঃধমৎরাধৎংরঃু.বফঁ.নফ

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর : ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের ন্যূনতম যোগ্যতা : এসএসসি ও এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে একত্রে কমপক্ষে জিপিএ-৭.০০ এবং উভয় পরীক্ষার প্রতিটিতেই চতুর্থ বিষয় বাদে কমপক্ষে ৩.০০ জিপিএ থাকতে হবে। এইচএসসি পরীক্ষায় পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, ইংরেজী ও গণিত বিষয়ের প্রতিটিতে কমপক্ষে বি গ্রেড থাকতে হবে। পরীক্ষা পদ্ধতি : পদার্থবিদ্যা, রসায়ন, গণিত, জীববিদ্যা ও ইংরেজী বিষয়ে এমসিকিউ পদ্ধতিতে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হয়। ভর্তি ফরম বিতরণ ও ভর্তি পরীক্ষার তারিখসহ বিস্তারিত জানতে (িি.িনংসৎধঁ.বফঁ.নফ)

ইমাদুল হক প্রিন্স/নীলিমা ম-ল

No comments

Powered by Blogger.