সিরিয়া নিয়ে আলোচনার জন্য তুরস্কে হিলারি ক্লিনটন

সিরিয়া পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার জন্য গতকাল শনিবার তুরস্ক গেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন। তিনি সেখানে সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন বলে জানা গেছে। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, তুরস্কের নেতাদের সঙ্গে হিলারির আলোচনায় মূলত সিরিয়া পরিস্থিতিই প্রাধান্য পাবে।


তিনটি কৌশলকে সামনে রেখে এই আলোচনা হবে। এর মধ্যে অন্যতম, সিরিয়ার বিরোধীদের সমর্থন দিলে কীভাবে নিশ্চিত হওয়া যাবে যে তা কার্যকর হয়েছে এবং সিরিয়ার সরকারকে চাপে ফেলা ও একঘরে করা যাবে। কর্মকর্তারা জানান, সিরিয়া সরকারের বিরুদ্ধে কঠোর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর ও দেশটির প্রেসিডেন্ট বাশার-আল আসাদ-পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়েও আলোচনা হবে। সহিংসতার কারণে সিরিয়া ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া শরণার্থীদের জন্য ৫৫ লাখ ডলার সহায়তা ঘোষণা করতে পারেন হিলারি।
হিলারি ১১ দিনের আফ্রিকা সফর শেষে গতকাল তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে পৌঁছান। সিরিয়ায় রক্তপাত নিয়ে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট আবদুল্লাহ গুল, প্রধানমন্ত্রী রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী আহমেদ দাভুদোগ্লুর সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। এ ছাড়া সিরিয়ার বিদ্রোহীদের সঙ্গেও তাঁর বৈঠক হতে পারে। তবে বিদ্রোহীদের পক্ষে কারা, কখন তাঁর সঙ্গে বৈঠক করবেন তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এদিকে সিরিয়ায় সহিংসতা বন্ধে ইরানের কূটনৈতিক পদক্ষেপে সংকট আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন পশ্চিমা পর্যবেক্ষকেরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে পশ্চিমা একজন কূটনীতিক বলেন, ইরানের সঙ্গে পশ্চিমাদের অবিশ্বাস পুরোনো ঘটনা। তাই সিরিয়া বিষয়ে তেহরানের পদক্ষেপ দেশটির পরিস্থিতি আরও ঘোলাটেই করবে। কারণ, সারা বিশ্ব যখন বলছে আসাদ তাঁর জনগণকে হত্যা করছে তখন ইরান ও রাশিয়ার মতো দেশ চাইছে আসাদ ক্ষমতায় টিকে থাকুক।
লড়াই অব্যাহত: সিরিয়ার দ্বিতীয় শহর আলেপ্পোয় দুই পক্ষের মধ্যে লড়াই অব্যাহত রয়েছে। বিদ্রোহীরা বড় ধরনের পাল্টা হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। গত শুক্রবারও সিরিয়ায় দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক লড়াই হয়েছে। তারিক আল বাব এলাকায় গোলা নিক্ষেপে ১২ জন নিহত ও অন্তত ২০ জন আহত হয়েছে। বিদ্রোহীদের শক্ত ঘাঁটি বলে পরিচিত সালাউদ্দিন এলাকায় সেনাবাহিনী ব্যাপক বোমা হামলা চালিয়েছে। বিদ্রোহীরা বলছেন, তাঁরা ওই এলাকা থেকে সরে গেলেও বড় ধরনের পাল্টা হামলা চালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
জর্ডান-সিরিয়া সংঘর্ষ: জর্ডান-সিরিয়া সীমান্তে দুই দেশের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। শুক্রবার রাতভর সংঘর্ষ চলে। সীমান্তের তেল শিহাব-তুরে এলাকা দিয়ে সিরীয় শরণার্থীদের জর্ডানে প্রবেশ করাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, লড়াইয়ে দুই পক্ষের মধ্যে গোলাগুলি চলে। সাঁজোয়া যানও ব্যবহার করা হয়। নাম প্রকাশ করার শর্তে জর্ডানের একজন কর্মকর্তা জানান, সীমান্তে সিরিয়ার দিক থেকে জর্ডান লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে লড়াইয়ের সূত্রপাত হয়। গোলাগুলিতে জর্ডানের পক্ষে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। এএফপি ও রয়টার্স।

No comments

Powered by Blogger.