আমানত শাহ্ লুঙ্গি অলিম্পিক আপডেট-কিংবদন্তি হওয়ার অপেক্ষায় বোল্ট by মাসুদ পারভেজ

'বি অ্যান্ড বি'! লন্ডন অলিম্পিকে সবচেয়ে বেশি বিকানো ব্র্যান্ডনেম! এ ব্র্যান্ডের প্রতিষ্ঠাতা গ্লেন মিলস বেচারাও আছেন দারুণ ধন্দে। তাঁর পণ্যের ভীষণ কাটতি, কিন্তু সমস্যায় এ জ্যামাইকান। কিংবদন্তি হওয়ার পথে থাকা উসাইন বোল্টকে শেষ ধাপটা পার করে দেওয়ায় একটু বেশি মনোযোগী হবেন, নাকি বোল্টের বিপক্ষে চ্যালেঞ্জ জয়ের মন্ত্র


পড়াবেন ইয়োহান ব্লেককে? দুজনই তাঁর আবিষ্কার। দুজনকেই ঘষে-মেজে আজকের পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন। কাজেই সমান স্নেহ আর ভালোবাসায় ভেদাভেদ করা তাঁর জন্য কঠিন। 'বোল্ট অ্যান্ড ব্লেক' ব্র্যান্ড এ কোচকে এমনই মধুর সমস্যায় ফেলে দিয়েছে।
১০০ মিটার স্প্রিন্টে ওই দুজনের লড়াইয়ের ফল তো আপনাদের জানাই। সেখানে নতুন অলিম্পিক রেকর্ড গড়ে শ্রেষ্ঠত্ব অক্ষুণ্ন রাখা বোল্টেরও সময় খারাপ কাটছে না। নানা রকম নেতিবাচক আলোচনায় বিরক্ত হয়ে ইভেন্ট শুরুর আগে অবশ্য নিজেকে একরকম আড়ালই করে ফেলেছিলেন। কিন্তু যেই না বিশ্বের দ্রুততম মানব হয়েছেন আবারও, খোলস ছেড়ে বেরোতে শুরু করেছেন 'লাইটনিং বোল্ট'। গেমস ভিলেজে সুইডেনের মহিলা হ্যান্ডবল দলের তিন খেলোয়াড়ের তাঁর সঙ্গে ছবি তোলার আবদার মিটিয়েছেন সানন্দেই। টুইটারের মাধ্যমে সে খবর দেওয়া বোল্ট যে বেশ ফুরফুরে মেজাজেই আছেন, তা আর বলতে!
সমালোচকদের জবাব দেওয়া ৯.৬৩ সেকেন্ডের দৌড়ে ইতিহাসে ঢুকে যাওয়া বোল্টের সামনে আজ আরেকটা পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় উতরে গেলেই নিজেকে 'কিংবদন্তি' ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছিলেন ১০০ মিটার স্প্রিন্টে সোনা জেতার পরই। গত রাতে হয়ে যাওয়া ২০০ মিটার স্প্রিন্টের সেমিফাইনালের বৈতরণী পার হয়ে গিয়ে থাকলে আজই কিংবদন্তি হওয়ার পথে শেষ ধাপটা অতিক্রম করতে নামবেন তিনি। এর আগে গত পরশু হিটে উত্তীর্ণ না হওয়ার কোনো কারণ ছিল না। তবে হিট যে সামর্থ্যের শেষটা দিয়ে দৌড়ান না, তা আরেকবার প্রমাণিত। কারণ ১০০ মিটারের হিটে তিনি ছিলেন দ্রুততম টাইমিংয়ের দিক থেকে ৯ নম্বরে। ২০০ মিটারে অতটা পেছনে নন ঠিক, তবে সবার আগেও না।
নিজের হিটে সময় নিয়েছেন ২০.৩৯ সেকেন্ড। আর জ্যামাইকার অলিম্পিক ট্রায়ালে ১০০ মিটারের পর এ ইভেন্টেও যাঁর কাছে হেরেছিলেন, সেই ব্লেক হিটে ২০০ মিটার শেষ করেছেন তাঁর চেয়ে একটু কম সময় (২০.৩৮) নিয়ে। ব্লেকসহ হিটে বোল্টের চেয়ে সময় কম নিয়েছেন মোট চারজন। তাঁদের মধ্যে আছেন আরেক জ্যামাইকান ওয়ারেন উইয়ারও (২০.২৯)। ২০.২৮ সেকেন্ড সময় নিয়ে হিটে দ্রুততম টাইমিংটা অবশ্য করেছেন ইকুয়েডরের অ্যালেক্স কুইনোনেজ। ১০০ মিটারের হিটে এমনই সবার আগে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের রায়ান বেইলি। ফাইনালে তাঁর পদক তালিকায় নাম ওঠাতে না পারাতেই বোঝা যায় যে হিটের টাইমিংই শেষ কথা নয়।
শেষ কথা হলে বোল্টও ফাইনালে তাঁর গতি দিয়ে সবাইকে পেছনে ফেলেন না। সেরাটা তিনি ফাইনালের জন্যই জমিয়ে রাখেন বলে এখন সিংহভাগের ধারণা। ১০০ মিটারের ফাইনালে এর প্রমাণ দেওয়া বোল্টের এখন ২০০ মিটারের অপেক্ষা। বেইজিংয়ে ১৯.৩০ সেকেন্ড সময় নেওয়া বোল্ট সেবার নতুন অলিম্পিক রেকর্ড গড়েই জিতেছিলেন ২০০ মিটারের সোনা। পরের বছর বার্লিনে হওয়া বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে ১০০ মিটারের পাশাপাশি গড়েছিলেন ২০০ মিটারের (১৯.১৯) বিশ্বরেকর্ডও। দুই ইভেন্টের টাইমিংয়ে তিনিই এখন শেষ কথা। নতুন কোনো বিশ্বরেকর্ড গড়ুন বা না গড়ুন, এবার ২০০ মিটারে জিতলেই ইতিহাসের অন্য অধ্যায়ে নাম লিখিয়ে ফেলবেন আরেকবার। কারণ এক অলিম্পিকে জেতা ২০০ মিটারের সোনা পরেরবার এসে ধরে রাখার নজির ইতিহাসেই আর একটাও নেই। সেজন্যই হয়তো নিজেকে কিংবদন্তি বলার আগে ২০০ মিটারের ফলের অপেক্ষায় থাকতে চেয়েছেন বোল্ট।
'বি অ্যান্ড বি' ব্র্যান্ডের সবচেয়ে আকর্ষক 'বি'!

No comments

Powered by Blogger.