বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১১শ’ কোটি ডলারে উন্নীত

আমদানি ব্যয় কমায় ও রেমিটেন্স বাড়ায় আবারও বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ১১শ’ কোটি ডলারে উন্নীত হলো। এর আগে টানা দুই মাস রিজার্ভ হাজার কোটি ডলারের ঘরে অবস্থান করে। বুধবার কর্মদিবস চলাকালে তা গত ১৫ মাস আগের অবস্থানে ফিরে গিয়ে ১১শ’ কোটি ডলারে দাঁড়ায়।


এদিন শুরুতে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১০ দশমিক ৯২ বিলিয়ন ডলার, যা দিন শেষে ১১ দশমিক শূন্য ৫ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে পৌঁছায়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ফরেন রিজার্ভ ও ট্রেজারি ব্যবস্থাপনা বিভাগ সূত্র মতে, এর আগে ২০১১ সালের ৩ মে রিজার্ভ বেড়ে ১১ দশমিক ৩৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছিল। সেটাই এ যাবতকালে দেশের সর্বোচ্চ রিজার্ভ। তবে তৎপরবর্তীতে বিশ্ববাজারে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি ও আমদানি ব্যয় বাড়তে থাকায় এক পর্যায়ে তা ৯ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে আসে। পরিসংখ্যান বিবেচনায় চলতি বছরের হিসাবে এটি রিজার্ভের রেকর্ড। গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত কোন মাসেই রিজার্ভ এই পরিমাণ হয়নি। আর সর্বশেষ জুলাই মাস পর্যন্ত তা ১০ বিলিয়ন ডলারের ঘরে অবস্থান নেয়। মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ১০ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার। বুধবার দিনের শুরুতেই তা বেড়ে ১১ দশমিক ৫ ডলার হয়।
অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকের মাঝামাঝি সময়েই রিজার্ভ বেড়ে ১১শ’ কোটি ডলার হওয়াটাকে দারুণ ইতিবাচক হিসেবেই দেখছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ প্রসঙ্গে গবর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, সাম্প্রতিক প্রবাসীদের রেমিটেন্স প্রবাহ ভাল যাচ্ছে। আমদানি ব্যয় কমে আসছে এবং তা নগদ পরিশোধ করারও সুযোগ বাড়ছে। এসব কারণেই বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ ১১ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম করেছে। এটা আমাদের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক।
সূত্র মতে, গত মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে এশিয়ান ক্লিয়ারিং হাউস (আকু) পেমেন্ট করার পর রিজার্ভ ১০ বিলিয়নের নিচে নেমে এসেছিল। এরপর টানা দেড় মাস পর এপ্রিল মাসে তা আবার ১০ বিলিয়ন হয়। কিন্তু মে মাসে তা আবার নেমে সাড়ে নয় বিলিয়ন ডলার হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, গত বছরের সেপ্টেম্ব^রের শুরুতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ কমে ৯ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে। অক্টোবর মাসে তা আবার হাজার কোটি ডলার ছাড়ায়। তবে নবেম্বর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত তা ৯ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি অবস্থান করছিল।
জানা গেছে, এ সময় রিজার্ভের ওপর চাপ থাকায় বাংলাদেশ ব্যাংক সেই সময় থেকে অতি জরুরী প্রয়োজন ছাড়া ডলার বিক্রি করছে না। একই সঙ্গে আমদানির ক্ষেত্রে কোন ধরনের পণ্য আনা হচ্ছে তা দেখে ডলার ছাড় করা হচ্ছে।
অন্যদিকে চলতি বছরের জানুয়ারিতে রেকর্ড পরিমাণ রেমিটেন্স দেশে আসে। জানুয়ারি মাসে প্রবাসীরা মোট ১২১ কোটি ডলার পাঠায়। আর সর্বশেষ জুলাই মাসে ১১৯ কোটি ৩৭ লাখ ডলার রেমিটেন্স দেশে এসেছে।

No comments

Powered by Blogger.