পড়ে আছে ৩০ কোটি টাকার নর্দমা

গাইবান্ধা শহরে ৩৩ কিলোমিটার নর্দমা নির্মাণ ও দফায় দফায় সংস্কারে ব্যয় হয়েছে প্রায় ৩০ কোটি টাকা। কিন্তু পৌর কর্তৃপক্ষের গাফলতি ও অপরিকল্পিতভাবে নির্মাণের কারণে এগুলো ভরাট হয়ে পানি নিষ্কাশন হতে পারছে না। ফলে শহরবাসীর কোনো কাজে লাগছে না নর্দমাগুলো।


গাইবান্ধা পৌর মেয়র শামছুল আলম বলেন, দুটি গাছের কারণে নির্মাণাধীন দুটি নর্দমার কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। ফলে নর্দমাগুলো কাজে লাগানো যাচ্ছে না। পৌরসভা সূত্র জানায়, ১৯২৩ সালে স্থাপিত পৌরসভায় মোট ৩৩ কিলোমিটার পাকা ও আধাপাকা নর্দমা রয়েছে। এর মধ্যে পাকা ২১ কিলোমিটার ও আধাপাকা ১২ কিলোমিটার।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কের দুই ধারে নির্মিত এসব নর্দমার মুখ ময়লা-আবর্জনা জমে বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে পানি নিষ্কাশন হতে পারছে না। শহরের ডিবি রোডের ব্যবসায়ী রাজু মিয়া বলেন, ‘আমার দোকান ঘেঁষে ড্রেন হয়েছে। কিন্তু পানিনিষ্কাশন দূরের কথা, দুর্গন্ধে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে থাকা দুষ্কর হয়ে পড়েছে।’ আগের ২৮ কিলোমিটার নর্দমা কোনো কাজে না এলেও বর্তমানে শহরে আরও প্রায় পাঁচ কিলোমিটার নতুন নর্দমার নির্মাণকাজ চলছে। সব মিলিয়ে ৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৩ কিলোমিটার নর্দমা নির্মিত হয়েছে বলে পৌরসভার প্রকৌশল বিভাগ জানিয়েছে। কিন্তু দৃশ্যত এগুলো শহরবাসীর কোনো কাজে আসছে না। গাইবান্ধা যুব নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক জিয়াউল হক বলেন, পরিকল্পিতভাবে নর্দমাগুলো নির্মাণ করা হয়নি। ফলে সরকারের কোটি কোটি টাকা অপচয় হয়েছে। এ কারণে সেগুলো শহরবাসীর কোনো কাজে লাগছে না। পরিবেশ আন্দোলন গাইবান্ধার আহ্বায়ক ওয়াজিউর রহমান বলেন, আধুনিক শহর নির্মাণে পরিকল্পিত নর্দমা নির্মাণ ও পরিবেশ রক্ষায় নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা দরকার। অথচ পৌর কর্তৃপক্ষ তা করছে না। এদিকে নিয়মিত পরিষ্কারের অভাবে নালাগুলো পরিণত হয়েছে কাদা, ময়লা ও আবর্জনার স্তূপে। বিশেষত শহরের ডিবি রোডের ট্রাফিক মোড়, বাসস্ট্যান্ড, সার্কুলার রোড, স্কুল লেন, কুঠিপাড়া রোড, গোরস্থানপাড়া রোড, ভিএইড রোডে নর্দমার অবস্থা শোচনীয়। এ ছাড়া এসব রোডে নির্মিত নর্দমার ঢাকনা নেই। এর মধ্যে শহরের থানাপাড়া ও ডিবি রোডের একাধিক স্থানে নর্দমার কাজ অসমাপ্ত রয়েছে।
গাইবান্ধা পৌর মেয়র আরো বলেন, শহরের কলেজ রোড ও ডিবি রোডের বাস টার্মিনাল-সংলগ্ন এলাকায় দুটি গাছের কারণে নর্দমার কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। গাছ দুটি কাটার জন্য জেলা সমন্বয় কমিটির সভায় তাগাদা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ গাছ কাটার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। পূর্ববর্তী মেয়রের আমলে অপরিকল্পিতভাবে এসব নর্দমা নির্মাণ করা হয় বলে দাবি করেন তিনি। তখন এসব নর্দমার পানি নিষ্কাশনের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি।
এ প্রসঙ্গে জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কল্লোল কুমার চক্রবর্তী বলেন, গাছ দুটি কাটার জন্য রংপুর বিভাগীয় কমিশনার বরাবরে আবেদন করা হয়েছে। অনুমতি পাওয়া গেলে কাটা হবে।

No comments

Powered by Blogger.