ঈদের আগে শ্রমিকদের বেতন ও উৎসব ভাতা দিন- তৈরি পোশাকশিল্প

প্রতিবছর ঈদের আগে শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন ও উৎসব ভাতা দেওয়া নিয়ে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে অসন্তোষ লক্ষ করা যায়। বিশেষ করে, তৈরি পোশাকশিল্পে এই অসন্তোষ কখনো কখনো সংঘাত-সংঘর্ষেও রূপ নেয়। এ বছরও ঈদের আগে সব কারখানায় শ্রমিকদের বেতন ও উৎসব ভাতা পরিশোধ করা হবে কি না, সে ব্যাপারে সংশয় রয়েছে।


শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) এক বিবৃতিতে ২০ রোজার মধ্যে তৈরি পোশাক কারখানাসহ সব শিল্প কারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের বেতন ও উৎসব ভাতা দেওয়ার জন্য মালিকদের প্রতি দাবি জানিয়েছে।
স্কপের এই দাবি অত্যন্ত যৌক্তিক। অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিক শ্রমিক-কর্মচারীদের বেতন ও উৎসব ভাতা দিতে অহেতুক গড়িমসি করেন। দেরিতে বেতন ও উৎসব ভাতা দিলে শ্রমিকেরা বাড়ি যেতে পারবেন না, এ সময় তাঁরা কারখানায় কাজ করবেন—এই চিন্তাও তাঁদের মাথায় থাকে। আবার কোনো কোনো কারখানা কর্তৃপক্ষ আর্থিক অসচ্ছলতার অজুহাতে উৎসব ভাতা দেয় না। শ্রমের পুরোটা আদায় করে নিয়েও শ্রমিকদের পাওনা না দেওয়া অনৈতিক ও বেআইনি।
দুঃখজনক যে দেশের তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিক অসন্তোষের বিষয়টি দেশের সীমা ছাড়িয়ে বিদেশেও অভিঘাত তৈরি করেছে। সম্প্রতি বিদেশি ক্রেতাদের একটি প্রতিনিধিদল শ্রমমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে বৈঠক করে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। তবে বিদেশি ক্রেতারা এ-ও বলেছেন, বাংলাদেশে ব্যবসা করার মতো পরিবেশ এখনো অনুপস্থিত নয়। তাদের এই আস্থার জায়গাটি ঠিক রাখতেই শিল্পাঞ্চলে স্থিতিশীলতা জরুরি। আর সেটি নিশ্চিত হতে পারে শ্রমিকদের ন্যূনতম পাওনা মিটিয়ে দিয়ে।
সম্প্রতি তৈরি পোশাকশিল্পের শ্রমিকেরা বেতন বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলন করলেও মালিকেরা তা বাড়াননি। এখন যদি ঈদের আগে কোনো কারখানায় বেতন ও উৎসব ভাতা পেতেও সমস্যা হয়, তাহলে ফের শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক নয়। অতএব, স্কপের দাবি অনুযায়ী ২০ রোজার আগেই তাঁরা শ্রমিকদের বেতন ও উৎসব ভাতা পরিশোধ করবেন আশা করি।

No comments

Powered by Blogger.