আদালত অবমাননা আইন-রায় চ্যালেঞ্জ করবে পাকিস্তান সরকার

আদালত অবমাননা আইনকে অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের রায় চ্যালেঞ্জ করবে পাকিস্তান সরকার। পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারির দুর্নীতির মামলা চালুর বিষয়ে সুইস কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখতে প্রধানমন্ত্রীকে দেওয়া সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশের বিরুদ্ধেও আইনি লড়াইয়ে নামবে সরকার।


প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ফরহাতুল্লাহ বাবর গতকাল সোমবার পাকিস্তানি পত্রিকা ডনকে এ খবর নিশ্চিত করেছেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইউসুফ রাজা গিলানিকে আদালত অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত করে দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন (পুনর্বিবেচনার আবেদন) না করে আফসোস করছে সরকার। এ যাত্রায় সেই একই ভুল আর করা হবে না_বাবর এমনটাই দাবি করেছেন। তিনি জানান, আদালত অবমাননা আইনকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করে দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করার ব্যাপারে সরকার নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গত ৯ জুলাই পার্লামেন্টে আদালত অবমাননা বিল পাস হয়। ১২ জুলাই প্রেসিডেন্টের স্বাক্ষরের পর তা আইনে পরিণত হলেও গত শুক্রবার তা অবৈধ বলে রায় দেন সুপ্রিম কোর্ট। জারদারির মামলা পুনরায় চালুর ব্যাপারে সুইস কর্তৃপক্ষকে চিঠি লিখতে নতুন প্রধানমন্ত্রী রাজা পারভেজ আশরাফকে ১২ জুলাই নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বাবর জানান, এ ব্যাপারেও আইনি পথে আদালতের সিদ্ধান্তের মোকাবিলা করতে সরকার বদ্ধপরিকর। জোটভুক্ত দলগুলোর নেতৃত্ব ও আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ করেই সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে বাবর দাবি করেন। আগামীকাল বুধবার দায়মুক্তি অধ্যাদেশ (এনআরও) সংক্রান্ত রিটের শুনানির দিন ধার্য রয়েছে। এ দিনের মধ্যে সুইস কর্তৃপক্ষকে চিঠি লেখার ব্যাপারে আদালতকে সরকারের অবস্থান জানাতে হবে আশরাফকে। এ সময়ের মধ্যে আদালত অবমাননা আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে কি না_এমন প্রশ্নের জবাবে বাবর বলেন, 'আমি নির্দিষ্ট করে তারিখ বলতে পারছি না। তবে যত দ্রুত সম্ভব আপিল করা হবে।'
তবে এ ব্যাপারে সংশয় প্রকাশ করেছেন আইন বিশেষজ্ঞরা। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী সালমান আক্রাম রাজা বলেন, '৩ আগস্টের রায় যতক্ষণ না স্থগিত করা হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত এটি কার্যকর। রিভিউ আবেদন গ্রহণ করা হলেও আপনা-আপনি এটি অকার্যকর হবে না, যতক্ষণ না আদালত এ ব্যাপারে অন্য কোনো সিদ্ধান্ত দেবেন।' ব্যারিস্টার জাফরুল্লাহ খান সরকারের এ পদক্ষেপকে কালক্ষেপণের কৌশল হিসেবেই দেখছেন। তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের রায় রিভিউ আবেদনের পর উল্টে গেছে_এমন ঘটনা প্রায় নজিরবিহীন।
সূত্র জানায়, জোটের দুই শরিক দল পাকিস্তান মুসলিম লিগ_কায়েদ-এ-আজম (পিএমএল-কিউ) ও মুত্তাহিদা কউমি মুভমেন্টের (এমকিউএম) পীড়াপীড়িতে আপিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জারদারি। অন্যথায় প্রধানমন্ত্রী আশরাফকে সুরক্ষায় প্রেসিডেন্টের বিশেষ অধ্যাদেশ জারির ক্ষমতা প্রয়োগের কথা ভাবা হয়েছিল।

No comments

Powered by Blogger.