জীবন আর সংগীতে-হৃদয় মিক্স by কামরুজ্জামান

‘চাই না মেয়ে তুমি অন্য কারও হও’। হৃদয়ের কাছে জানতে চাইলাম, এ কথাটি শুধু গানের কথা ছিল, নাকি কারও জন্য হৃদয় গানটি গেয়েছিলেন? হৃদয় হাসেন। কিন্তু হাসিতে যেন কিছুটা বিষণ্নতার ছোঁয়া। ‘ওটা তো ছিল শুধুই গান। গানের লাইন ধরে যদি এর কারণ খোঁজা হয়, তবে গান গাওয়া কঠিন হবে যেকোনো শিল্পীর জন্যই।’


বলছিলেন হৃদয়। তবে এটাও মানলেন যে কখনো কখনো জীবনের কিছু ঘটনা গানের সঙ্গে মিলে যায়। আর তখন সেই গানটি গাওয়ার সময় শিল্পী অনেক বেশি আবেগাপ্লুত হয়ে গানটি করেন। দু-একবার যে তাঁর জীবনেও এমন হয়নি, তা নয়।
‘চাই না মেয়ে তুমি’ বা ‘বল না তুই বল না’ এমন গানের সুবাদেই হৃদয়কে চেনেন আমাদের শ্রোতারা। তবে হৃদয়ের আরেকটি পরিচয় হলো, তিনি একাধারে গানের সুর করেন, আবার মিউজিক কম্পোজার হিসেবেও এরই মধ্যে তাঁর হাঁকডাক পড়েছে দারুণভাবে।
এর মধ্যে হৃদয়ের দুটি মিক্সড অ্যালবাম বাজারে এসেছে। এ ছাড়া ছোঁয়া নামে একটি একক অ্যালবাম বাজারে এসেছে কিছুদিন আগে। অ্যালবামটি বাজারে আসার আগেই বড় রকমের প্রত্যাশা ছিল সবার মধ্যে। সেই প্রত্যাশা আসলে কতটুকু পূরণ করতে পেরেছেন হৃদয়?
যে যেভাবেই বলুক না কেন, হৃদয় অ্যালবাম নিয়ে বেশ ইতিবাচক কথাই শোনালেন। ‘এই অ্যালবামের ‘আড়াল’ গানটি তো মানুষের কাছে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। আমি যেখানেই গিয়েছি, সেখানেই গানের কথা শুনেছি। আমি সন্তুষ্ট। যারা অ্যালবাম বাজারে এনেছে, তারাও খুশি।’ বলছিলেন তিনি।
হৃদয়ভক্তদের জন্য আরও একটি সুসংবাদ হলো, হৃদয় মিক্স থ্রি নিয়ে আসছেন। নিজে নিজেই বাংলাদেশ থেকে নতুন নতুন ছেলেমেয়ে খুঁজে নিয়েছেন। বিজ্ঞাপন দিয়ে ছয় হাজার ছেলেমেয়ের মধ্য থেকে ছয়জন নতুন শিল্পীকে খুঁজে নিয়েছেন। এই ছয়জনকে সঙ্গে নিয়েই তিনি হৃদয় মিক্স থ্রির কাজ শেষ করেছেন। জানালেন এখানে তিনি নিজে একক এবং দ্বৈত গান করেছেন।
নতুন শিল্পীদের নিয়ে অ্যালবামে কাজ করিয়ে কী এক্সপেরিমেন্ট করলেন?
‘তা বলতে পারেন। আসলে আমাদের দেশে সুরেলা কণ্ঠের অনেক ছেলেমেয়েই আছেন। কিন্তু তাঁরা সুযোগ পান না। আমি চেয়েছিলাম, আমার এই উদ্যোগের মাধ্যমে নতুনদের সুযোগ করে দিতে। আমার এই ক্ষুদ্র প্রয়াসে যদি দু-একজন নবীন শিল্পীর গান শ্রোতাদের মন কাড়তে সক্ষম হয়, তবে আমার জন্য সেটা হবে অনেক বড় আনন্দের একটি ব্যাপার।’ বললেন তিনি।
হৃদয় মিক্স থ্রি ঈদুল ফিতরেই বাজারে পেয়ে যাবেন শ্রোতারা।
অ্যালবাম ছাড়াও হৃদয়ের রয়েছে প্রচণ্ড ব্যস্ততা। যেমন, মাসে প্রায় ১০টি স্টেজ শো করতে হচ্ছে তাঁকে। জিঙ্গেলের কাজ করতে হয়। আর সিনেমায় সংগীত আয়োজনের কাজ তো করছেন নিয়মিতই। বললেন টেলিভিশন, সিনেমার কাজ করছেন এখন তিনি। এরই মধ্যে দুটি গানের কাজ করেছেন। খুবই আশাবাদী আমি সিনেমাটি নিয়ে।
কাজের ব্যস্ততায় ডুবে থাকলেও হৃদয়কে নিয়ে গুঞ্জনের শেষ নেই। হৃদয়ের হৃদয়ে নাকি শুধুই সুজানা, এ তো অনেক পুরোনো সংবাদ। এখন কী অবস্থা?
হৃদয় সহজ করেই বললেন, ‘বন্ধু ছিলাম, বন্ধু আছি। আগের মতোই সম্পর্ক স্থিতিশীল। আমার জীবনের অনেক কিছুই আসলে বদলেছে সুজানার জন্য। বন্ধুত্বটাকে খুবই উপভোগ করি। আর ভবিষ্যতের কথা না হয় নিয়তির ওপরই ছেড়ে দিলাম।’
তবে কেউ কেউ বলেন, হৃদয়ের হৃদয় ভেঙেছে। হৃদয় এ জন্য এখন অনেকটাই চুপচাপ। কাজ নিয়েই সবকিছু ভুলে থাকতে চাইছেন।
এমন সব বিষয়ে হৃদয় বললেন, লোকে তো অনেক কথাই বলে। আমি যা বলি না, তা-ও বলেন, আবার যা ভাবি না, তা-ও ভাবেন। ভাবুক না ওরা। ওদের ভাবনা নিয়ে আমি ভাবতে গেলে তো নিজের সব কাজ বন্ধ হয়ে যাবে। তার চেয়ে নিজের কাজ করা অনেক বেশি বুদ্ধিমানের নয় কি?

No comments

Powered by Blogger.