‘নির্বাচনী’ ব্যানার-পোস্টারে ছেয়ে গেছে রংপুর by আরিফুল হক

সিটি করপোরেশন ঘোষণার দিন থেকেই রংপুরে সম্ভাব্য একাধিক মেয়র প্রার্থী ‘নির্বাচনী’ প্রচারাভিযানে নেমে পড়েছেন। নগরবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে তাঁরা দেয়ালে দেয়ালে সেঁটেছেন রঙিন পোস্টার, সড়কে টানিয়েছেন ব্যানার। প্রচার চলছে মাইকেও।


স্থানীয় সরকার নির্বাচন দলীয় না হলেও দলের প্রচারই এখানে মুখ্য হয়ে উঠেছে।
এ ব্যাপারে বিভাগীয় নির্বাচন কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন বলেন, এখনো নির্বাচনের দিনক্ষণ নির্ধারণ হয়নি। তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনী আচরণবিধির বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হবে। রংপুর বিভাগীয় নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১ জুলাই রংপুরকে দেশের দশম সিটি করপোরেশন হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। আগামী ছয় মাসের মধ্যে সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে এখনো প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়নি। সদর উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন নিয়ে ২০৩ বর্গকিলোমিটার সীমানা নির্ধারণ হলেও ওয়ার্ডের সীমানা এখনো নির্ধারণ হয়নি। জানা যায়, আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ শরফুদ্দিন আহমেদ নগরজুড়ে পোস্টার সেঁটেছেন। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াছ আহমেদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সাফিউর রহমান ও তুষার কান্তি মণ্ডলও পোস্টার, ব্যানার লাগিয়েছেন। আওয়ামী লীগের এই চারজনের পোস্টারে তাঁদের ছবির ওপর বঙ্গবন্ধু ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর ছবি রয়েছে। জাতীয় পার্টির সাবেক সাংসদ ও উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য মশিউর রহমান, একই দলের জেলা কমিটির সদস্যসচিব ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমানও পিছিয়ে নেই। তাঁদের দুজনের পোস্টারে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের ছবি রয়েছে। সেই সঙ্গে বর্তমান পৌর মেয়র ও জেলা জাতীয় পার্টির নেতা এ কে এম আবদুর রউফও রয়েছেন। এসব নেতা পোস্টার সাঁটার পাশাপাশি আঞ্চলিক সংবাদপত্রগুলোতে নগরবাসীকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে বিজ্ঞাপন দিচ্ছেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় পার্টির এই তিন নেতা মেয়র পদে নির্বাচন করবেন বলে প্রচার চালাচ্ছেন।
২ জুলাই মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাফিউর রহমান হাত উঁচিয়ে এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘ভাই, আমার দিকে লক্ষ রাইখেন। আমি কিন্তু নির্বাচন করতে যাচ্ছি।’ আওয়ামী লীগের সাবেক সাংসদ শরফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘পরোক্ষভাবে দলের সমর্থন একটা বড় ব্যাপার। তবে দলের বাইরে নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি হয়ে নির্বাচন করব।’ তিনি এর আগে সদর উপজেলা ও পৌরসভার চেয়ারম্যানও ছিলেন। মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি মণ্ডল বলেন, ‘জনগণের কাছে পরিচিতি পেতে এ ধরনের পোস্টার লাগানো হয়। দেখা যাক শেষমেশ কী দাঁড়ায়। এখনো নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হয়নি বলে প্রচার চালানো হচ্ছে।’ জাতীয় পার্টির সাবেক সাংসদ মশিউর রহমান বলেন, ‘ভোট করব বলেই শুভেচ্ছা-অভিনন্দন জানিয়ে আমার সমর্থনে এসব পোস্টার লাগিয়েছেন সমর্থকেরা।’ জেলা জাতীয় পার্টির সদস্যসচিব ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘দেখতে দেখতে নির্বাচন ঘনিয়ে আসবে। তাই বসে থাকলে চলবে না। পোস্টারে নির্বাচনের কথা না বললেও অভিনন্দন-শুভেচ্ছা জানিয়ে নির্বাচনী প্রচার শুরু করেছি।’ জাতীয় পার্টির আরেক নেতা ও বর্তমান পৌর মেয়র এ কে এম আবদুর রউফও পরোক্ষভাবে দলের মনোনয়ন পেতে আগ্রহী। তিনি আবারও নির্বাচন করবেন বলে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জানিয়েছেন। ব্যানার-পোস্টারে নগরবাসীকে শুভেচ্ছা না জানালেও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোজাফফর হোসেন ইতিমধ্যে ‘নির্বাচনী’ মাঠে নেমেছেন। সভা-সমাবেশসহ নানা অনুষ্ঠানে অতিথি হচ্ছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন আচরণবিধি মেনে অবশ্যই ভোট করব।’

No comments

Powered by Blogger.