এমা স্টোনের সাক্ষাৎকার-আমি সাংবাদিক হতে চেয়েছিলাম

সদ্যই নতুন খোলসে মুক্তি পেয়েছে নতুন স্পাইডারম্যান। দ্য অ্যামেজিং স্পাইডারম্যান ছবিতে নায়িকার চরিত্রে দুর্দান্ত অভিনয় করে হলিউডে নিজের আসন আরও একটু পাকা করেছেন এমা স্টোন। এই সাক্ষাৎকারে উঠে এসেছে আরও অনেক কিছু—


আপনার খসখসে কণ্ঠস্বর এখন তো একরকম ট্রেডমার্ক হয়ে গেছে। এটা তো ছেলেবেলার একটা অসুখের কারণে হয়েছিল?
ছেলেবেলায় আমার খুব বাজে একটা অসুখ হয়েছিল। জন্মের পর প্রথম ছয় মাস পেটে প্রচণ্ড ব্যথা ছিল। যখনই জেগে থাকতাম, গলা ফাটিয়ে কাঁদতাম। প্রতিদিনই। পরিস্থিতি এমন ছিল, এখনো আমার মা আশপাশে কোনো বাচ্চার কান্নার শব্দ শুনলেই আতঙ্কে শিউরে ওঠেন! কথা শেখার আগেই এমন চিৎকার করার কারণে আমার গলার স্বর ছেলেবেলায়ই ভেঙে যায়।
খুব বেশি লোক জানে না আপনার ক্যারিয়ার শুরু হয়েছিল ‘দ্য নিউ প্যাট্রিজ ফ্যামিলি’ দিয়ে?
ঠিক তা-ই। এটা ছিল পুরোদস্তুর একটা রিয়্যালিটি শো। মা জীবনে কখনো কোনো অডিশনের জন্য আমাকে ঠেলাঠেলি করেননি। কিন্তু একদিন টিভিতে মা বিজ্ঞাপন দেখে আমাকে এখানে জোর করে পাঠালেন। প্রথম প্রথম আমি নিমরাজি ছিলাম। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমিই জিতেছিলাম, আর এক মুহূর্তের জন্যও এটা নিয়ে কোনো অনুশোচনা হয়নি।
অ্যামেজিং স্পাইডারম্যান ছবিতে কীভাবে সুযোগ পেলেন?
সনির সঙ্গে এর আগেও আমার ছবি সুপারব্যাড, জম্বিল্যান্ড আর ইজি তে কাজ করেছি। তারা আসলে আমার সঙ্গে ম্যারি জেন নিয়ে প্রথমে কথা বলেছিল। যখন স্ট্যাসি চরিত্রটির প্রসঙ্গ এল, তারা জানতে চাইল, আমি অডিশন দেব কি না। অ্যান্ড্রু (গারফিল্ড) তত দিনে নির্বাচিত হয়ে গেছে (স্পাইডারম্যান হিসেবে)। স্ট্যাসির দীর্ঘ ইতিহাসের দিকে তাকালাম। এটা পপ-সংস্কৃতির ইতিহাসে একটা বড় জায়গাজুড়েই আছে। তাই রাজি হলাম।
পরিচালক মার্ক ওয়েব বলছিলেন প্রথম অডিশন থেকেই আপনার সঙ্গে অ্যান্ড্রুর রসায়ন বেশ জমেছিল?
আমিও অনুভব করছিলাম কিছু একটা আছে। অডিশনেই আমরা আগের চেয়ে আরও ভালো করতে পারছিলাম। আসলে অভিনয়শিল্পী হিসেবে আমি অনেকটা অস্থির ধরনের। শট দেওয়ার বিরতিতে আমি বসে বসে নিজেকে শাপশাপান্ত করি, ‘ওহ্, এরচেয়ে জঘন্য শট আর কেউ কখনো দেয়নি। নিজেকে নিয়েই খুব লজ্জা হয় আমার।’ কিন্তু অ্যান্ড্রু খুব দ্রুতই আমাকে ঠান্ডা করেছে। আমাকে আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে, প্রশংসা করেছে।
সেপ্টেম্বরে তো রায়ান গসলিংয়ের সঙ্গে আপনার আরও একটা ছবি আসছে—দ্য গাংস্টার স্কোয়াড?
ক্রেজি, স্টুপিড, লাভ-এ আমরা অনেকটা তালগোল পাকিয়ে ফেলেছিলাম। তাই রায়ান আমাকে অনেকটা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছিল এবার দ্য গ্যাংস্টার স্কোয়াড-এ। অনেক মজা পেয়েছি ছবিটা করতে গিয়ে। কারণ আমরা চল্লিশের দশকের সেটে কাজ করেছি। দুজনই মনে মনে চাইছিলাম, ইস্, সত্যি সত্যি যদি চল্লিশের দশকে আমাদের জন্ম হতো!
আপনার শৈশব নিয়ে বলুন। কী নিয়ে মেতে থাকতেন? কমিকস ভালো লাগত?
আসলে ছেলেবেলায় আমি অনেক বেশি কম্পিউটারে বুঁদ হয়ে ছিলাম। আমি ওয়েবসাইট বানাতাম। অনলাইন ফোরামগুলোতে গিয়ে ইন্টারনেটে বন্ধু পাততাম, অন্যের জন্য বিনা খরচায় ওয়েবসাইট বানিয়ে দিতাম। কারণ, আমি তখন এইচটিএমএল শিখছিলাম। আমার একটা অনলাইন নিউজলেটারও ছিল, যেটার নাম ‘নেপচুন’। এটা ১২ থেকে ১৮ বছর বয়সী মেয়েদের একটা ই-সাময়িকী। সেখানে আমি পরামর্শ দিয়ে কলাম লিখলাম, অনেক নিবন্ধও লিখেছি। ভেবেছিলাম, আমি হয়তো একজন সাংবাদিক হতে চাই। এখনো টুকটাক লেখালেখি করি বৈকি।
 রাজীব হাসান
হলিউড রিপোর্টার অবলম্বনে

No comments

Powered by Blogger.