সরকারের নানামুখী উদ্যোগ-বিশ্বব্যাংকে চিঠি, ৯ জুলাই বৈঠক উন্নয়ন সহযোগীদের সঙ্গে by আরিফুর রহমান

পদ্মা সেতু প্রকল্পে বিশ্বব্যাংক ঋণচুক্তি বাতিল করায় যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, তা নিরসনে নানামুখী উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়ে বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তরে মঙ্গলবার একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।


অন্যদিকে ৯ জুলাই সব উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসছে সরকার। সিদ্ধান্ত পরিবর্তনে বিশ্বব্যাংকের ওপর প্রভাব বিস্তার করতে ভারতের সহযোগিতাও চাওয়া হচ্ছে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে জানান, পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন নিয়ে বাংলাদেশের উদ্বেগের বিষয়টি উন্নয়ন সহযোগীদের কাছে উপস্থাপন করে সমস্যা সমাধানে তাদের সহযোগিতা চাওয়ার জন্য এ বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে সব উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
মঙ্গলবার অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গণমাধ্যমকে জানান, সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানিয়ে বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রধানের কাছে চিঠি দেওয়া হবে। এরপর ওই দিন রাতেই বিশ্বব্যাংকের সদর দপ্তরে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইআরডির একটি সূত্র। তবে চিঠিটি কাকে লেখা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
ইআরডি সূত্রে জানা যায়, বিশ্বব্যাংক বোর্ডে ২৫ জন নির্বাহী পরিচালক রয়েছেন। মূলত এসব নির্বাহী পরিচালকের ভোটেই প্রেসিডেন্টসহ অন্যান্য বিষয় চূড়ান্ত করা হয়। তাঁরা আমেরিকা, ইউরোপ, আফ্রিকা, এশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন ভারতের এম এম প্রসাদ। তাঁর মাধ্যমে বিশ্বব্যাংকের নতুন প্রেসিডেন্টের মনোভাব পরিবর্তনে উদ্যোগ নেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে। ওয়াশিংটনে বিশ্বব্যাংক সদর দপ্তরে বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক কাজী আমিনুল ইসলামকেও আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
একই সঙ্গে বিকল্প চিন্তাও রয়েছে। পদ্মা সেতুতে অর্থায়নের জন্য বিশ্বব্যাংককে বাদ দিয়ে উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার নেতৃত্বে নতুন একটি জোট করার পরিকল্পনাও রয়েছে সরকারের। এর মধ্যে জাপান আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা (জাইকা) এবং ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক (আইডিবি) এ প্রকল্পে অর্থায়নের আগ্রহ দেখিয়েছে। সংস্থা দুটি প্রয়োজনে ফের চুক্তি করতেও সম্মত রয়েছে বলে ইআরডি কর্মকর্তারা ইঙ্গিত দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আইডিবির প্রতিনিধি ইকবাল করিম গতকাল কালের কণ্ঠকে জানান, জেদ্দায় অবস্থিত আইডিবির ইন্টিগ্রিটি বিভাগ পদ্মা সেতু প্রকল্পের বিষয়টি নিয়ে পর্যালোচনা করছে। এরপর আইডিবির সিদ্ধান্ত জানানো হবে। সংস্থাটির ঋণচুক্তি ইতিমধ্যে কার্যকর হয়েছে। কিন্তু এ চুক্তির কার্যকারিতার মেয়াদও শেষ হয়ে যাচ্ছে। এ সময়ের মধ্যে প্রতিশ্রুত ১৪ কোটি ডলার খরচ করতে না পারলে সরকারকে তা জানিয়ে দেওয়া হবে। এরপর ফের চুক্তি হতে পারে। এডিবি বাংলাদেশ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন ও ফের চুক্তি করতে গতকাল পর্যন্ত সরকার এডিবিকে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি।

No comments

Powered by Blogger.