আইএসজির ঘোষণা-সেপ্টেম্বরে পুরোপুরি সার্বভৌম হবে কসোভো-একতরফাভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা দেওয়ার প্রায় পাঁচ বছর পর এ মর্যাদা দেওয়া হচ্ছে

অবশেষে পুরোপুরি সার্বভৌম ক্ষমতা পেতে যাচ্ছে কসোভো। আগামী সেপ্টেম্বরে পূর্ণাঙ্গ স্বাধীন দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে তারা। সার্বিয়া থেকে আলাদা হওয়ার প্রায় পাঁচ বছর পর তারা এ মর্যাদা পেতে যাচ্ছে। কসোভোর সার্বভৌমত্ব অর্জনের সক্ষমতার ওপর নজরদারি করা আন্তর্জাতিক নীতিনির্ধারণী গ্রুপ (আইএসজি) গত সোমবার এ ঘোষণা দিয়েছে।


২০০৮ সালে সার্বিয়া থেকে আলাদা হয় কসোভো। এরপর আন্তর্জাতিক 'মানদণ্ডে' সার্বভৌম ক্ষমতা পেতে প্রায় পাঁচ বছর লেগে গেল তাদের। এর মাধ্যমে আন্তর্জাতিক প্রশাসনের তত্ত্বাবধান ও নজরদারির অবসান হবে। ১৯৯৯ সাল থেকে এক ধরনের আন্তর্জাতিক প্রশাসনের অধীনে রয়েছে কসোভো।
কসোভোর প্রধানমন্ত্রী হাশিম থাচি আইএসজির ঘোষণার এ দিনটিকে 'ঐতিহাসিক' বলে অভিহিত করেছেন। তাঁর মতে, 'কসোভোর জন্য নতুন পথ চলা' শুরু হলো। তবে বেলগ্রেড হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, এর ফলে কসোভোর সংখ্যালঘু সার্বরা নিরাপত্তাঝুঁকির মধ্যে পড়বে। পাশাপাশি সার্বিয়ার জন্যও ঝুঁকি বাড়বে।
গত সোমবার অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় আইএসজির বৈঠকশেষে কসোভোকে পূর্ণ সার্বভৌমত্ব দেওয়ার ব্যাপারে ঘোষণা আসে। প্রধানমন্ত্রী হাশিম ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। আইএসজি এক বিবৃতিতে জানায়, 'আগামী সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় আইএসজির নির্ধারিত বৈঠকের পর কসোভোর ওপর থেকে আন্তর্জাতিক তত্ত্বাবধানের অবসান হবে।'
তবে সেপ্টেম্বরের পরও ন্যাটো নেতৃত্বাধীন কসোভোর জন্য শান্তিরক্ষী বাহিনী (কেএফওআর) এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইনের শাসনবিষয়ক কমিশন (ইইউএলইএক্স) কসোভোয় থাকবে। ইইউএলইএক্স কসোভোয় আইনগত সহায়তা দিয়ে থাকে।
২৫ সদস্যের আইএসজি জানায়, সার্বভৌম ক্ষমতা পাওয়ার প্রশ্নে সব শর্ত পূরণ করেছে কসোভো। 'ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ, নাগরিক অধিকার, সংস্কৃতি ও ধর্মীয় ঐতিহ্য সমুন্নত রাখার আইন প্রণয়নসহ সমন্বিত বন্দোবস্ত প্রস্তাবের (সিএসপি) সব শর্ত পূরণ করেছে কসোভো।'
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের বেঁধে দেওয়া সিএসপি অনুযায়ী কসোভো সব প্রতিশ্রুতি পূরণ করায় আইএসজি আগেই সন্তোষ প্রকাশ করেছিল। গত জানুয়ারিতে এ জন্য তারা কসোভোর পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতার ঘোষণা খুব শিগগিরই দেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছিল। গত সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে কসোভোকে অভিনন্দন জানায় আইএসজি।
১৯৯৯ সালে সার্বিয়ার স্লোবোদান মিলোসেভিচের বাহিনীকে কসোভো থেকে হটাতে বিমান হামলা শুরু করে ন্যাটো। তখন থেকেই ২৮ লাখ মানুষের এ ভূখণ্ডটি আন্তর্জাতিক প্রশাসনের অধীনে চলে যায়। কসোভোর অধিকাংশ মানুষ জাতিগতভাবে আলবেনীয়। মাত্র ছয় শতাংশ মানুষ জাতিগত সার্ব। তারা মূলত কসভোর উত্তরাঞ্চলে সার্বিয়ার সীমান্ত এলাকায় বাস করে।
২০০৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে একতরফাভাবে স্বাধীনতা ঘোষণা করে কসোভো।
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের অধিকাংশ দেশসহ ৮০টিরও বেশি দেশ তাদের সমর্থন দিয়েছে। তবে বেলগ্রেড বরাবরই কসোভোর স্বাধীনতার ঘোষণাকে প্রত্যাখ্যান করে আসছে। সূত্র : এএফপি।

No comments

Powered by Blogger.