বর্ষার সতর্কবার্তা মহাসড়কে-পাঁচ হাজার কিলোমিটার সড়ক নাজুক জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তারা উদ্বিগ্ন by পার্থ সারথি দাস

গত বর্ষায় দেশজুড়ে আলোচিত বিষয়ে পরিণত হয়েছিল বিভিন্ন সড়কের বেহাল অবস্থা। এসে গেল আরেক বর্ষা। কিন্তু যথাযথ সংস্কার না হওয়ায় সড়কপথে যাতায়াতে এবারও সেই অবর্ণনীয় দুর্ভোগের পুনরাবৃত্তির সংকেত মিলছে জোরালোভাবেই। গতবারের ভয়াবহ পরিস্থিতি জোড়াতালি মেরামতের মাধ্যমে সামাল দিতে হয়।


এবার বর্ষার আগেই দেশের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক- মহাসড়কগুলো সংস্কারের তাগিদ ও তোড়জোড় থাকলেও বর্ষার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তা সম্পন্ন করা যাবে কি না সে বিষয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-ময়মনসিংহ, ঢাকা-সিলেট, ঢাকা-আরিচা, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কগুলো এবারের বর্ষায়ও যথারীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। এসব মহাসড়কসহ দেশের বিভিন্ন সড়কের বর্তমান পরিস্থিতি এমন পূর্বাভাসই দিচ্ছে। আর এ নিয়ে রীতিমতো দুশ্চিন্তায় ভুগছেন জনপ্রতিনিধি ও সড়ক বিভাগের কর্মকর্তারা।
পাঁচ হাজার কিলোমিটার সড়ক নাজুক : যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, দেশের ৬৪ জেলার প্রায় পাঁচ হাজার কিলোমিটার সড়কই এখন বিধ্বস্ত, নাজুক। এর মধ্যে দুই হাজার কিলোমিটার সড়ক খুব বেশি খারাপ অবস্থায় রয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, অর্থের অভাব, বরাদ্দে বৈষম্য, দুর্নীতি এবং বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয়হীনতার কারণে এবারও সড়কে বর্ষা-বিপর্যয়ের আশঙ্কা রয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধি ও সওজের প্রকৌশলীরা উদ্বিগ্ন। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের মাঠপর্যায়ের পরিদর্শনে বিভিন্ন স্থানে সড়কের সংস্কারকাজ না হওয়া ছাড়াও নানা দুর্নীতি ও অনিয়ম ধরা পড়ছে।
বিভিন্ন জেলার প্রকৌশলীরা বলছেন, নির্মাণসামগ্রী, বিশেষ করে বিটুমিনের দাম দুই মাসে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে গেছে। নির্মাণসামগ্রীর দাম বেড়ে যাওয়ায় প্রকল্প ব্যয় বেড়ে গেছে। শুধু তাই নয়, অনেক এলাকায় ঠিকাদারদের বকেয়া পরিশোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। বকেয়া পরিশোধের দাবিতে কয়েক মাসের ব্যবধানে রাজশাহী ও কুষ্টিয়ায় ঠিকাদাররা সড়ক অবরোধ ও সওজ অফিস অবরুদ্ধ করে রাখেন। যোগাযোগ মন্ত্রণালয় নির্দেশনা জারি করেছে, চলতি অর্থবছরের প্রকল্পের জন্য অর্থ পরিশোধ করা হবে। বকেয়া পরিশোধ করা হবে না। অথচ সওজের বিভিন্ন অফিসে ঠিকাদারদের বিভিন্ন অর্থবছরের বকেয়া জমে আছে।
সওজের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বিপুল চন্দ্র সাহা কালের কণ্ঠকে বলেন, 'প্রয়োজনীয় অর্থ না থাকায় আমরা সংস্কারকাজ করতে পারছি না। ১০ বছরের ব্যবধানে সড়ক খাতে বরাদ্দ ৮ দশমিক ২২ শতাংশ থেকে এখন ৩ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। বারবার চেয়েও প্রয়োজনীয় বরাদ্দ মিলছে না। একদিকে বরাদ্দ কমছে, অন্যদিকে সড়ক প্রকল্পের নির্মাণসামগ্রী, যেমন বিটুমিন ও পাথরের দাম বেড়েই চলেছে। এ কারণে দেশের সব সড়ক সঠিকভাবে সংস্কার করা কঠিন হয়ে পড়েছে।' প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে যোগাযোগ ও পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয় বাড়ানো দরকার বলে তিনি মন্তব্য করেন।
২৫ প্রকল্পে চাহিদার বেশি বরাদ্দ : সড়ক খাতে জনগুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলোয় প্রয়োজনীয় অর্থের সংস্থান হচ্ছে না। ফলে শুরু হলেও অর্থের অভাবে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ থমকে আছে। এই অবস্থার মধ্যেও অনেক প্রকল্পে চাহিদার চেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। ২০১১-১২ অর্থবছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (এডিপি) ২৫টি প্রকল্পে সড়ক বিভাগের চাহিদার চেয়ে বেশি অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এ কাজটি করা হয়েছে পরিকল্পনা কমিশন থেকে। প্রকল্প তালিকা থেকে জানা গেছে, বগুড়া জেলার লিচুতলা-কদমতলী এবং নাংলু-বালিয়াদিঘী সংযোগসড়কসহ ধুনট-নাংলু-বাগবাড়ী-কদমতলী-গাবতলী-চৌকিরঘাট সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে সড়ক বিভাগ থেকে চাওয়া হয় দুই কোটি টাকা। কিন্তু বরাদ্দ দেওয়া হয় পাঁচ কোটি টাকা। বগুড়া সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান বলেন, 'আমাদের অর্থ এখনো ছাড় হয়নি।' সড়ক বিভাগের প্রস্তাবের বেশি বরাদ্দ পেলেন কিভাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'বেশি পেয়েছি কি না জানি না।'
এ ছাড়া ত্রিশাল-নান্দাইল-তাড়াইল সড়কে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর বালিপাড়া সেতু নির্মাণ প্রকল্পে সড়ক বিভাগ থেকে চাওয়া হয় আট কোটি টাকা। দেওয়া হয় ১০ কোটি টাকা। এভাবে ২৫টি প্রকল্পে চাহিদার চেয়ে বেশি অর্থ বরাদ্দের ঘটনায় প্রকৌশলীদের একটি অংশ ভীষণ ক্ষুব্ধ।
ব্যয় বাড়ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন প্রকল্পের : বর্তমান সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকারের অন্যতম ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেন প্রকল্পের কাজ ধীরগতিতেই চলছে। প্রকল্পের কাজ শেষ না হলেও বাড়ছে ব্যয়। প্রকল্পে এরই মধ্যে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ২১৪ কোটি টাকা। আরো ৭০০ কোটি টাকা ব্যয় বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। জানা গেছে, প্রকল্পে শুধু মাটি কাটা বাবদ ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ৩০ কোটি টাকা। কাজ শুরুর মাঝামাঝি গোপনে এই ব্যয় বাড়ানো হয়। প্রকল্পে প্রথমে এক কোটি তিন লাখ ঘনমিটার মাটির কাজ করার লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়। এর জন্য ব্যয় ধরা হয় ১৮১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। ওই লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী দরপত্র আহ্বান করা হয়। কাজও শুরু হয় দুই বছর আগে। এরই মধ্যে হঠাৎ করে ১৬ লাখ ৪২ হাজার ঘনমিটার অতিরিক্ত কাজ করার প্রস্তাব তৈরি করা হয়। এই মহাসড়কে মেঘনা ও মেঘনা-গোমতী সেতু যান চলাচলের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় আছে। মে মাসের প্রথম সপ্তাহে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে জরুরি সংস্কারকাজ শুরুর সিদ্ধান্ত হলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।
দুরবস্থার কিছু খণ্ডচিত্র : সাতক্ষীরার শ্যামনগর-নবেকিসহ কয়েকটি সড়কে যাতায়াতে মানুষের দুর্দশা নিজের চোখে দেখেন সংসদ সদস্য এইচ এম গোলাম রেজা। সাতক্ষীরা-৪ আসনের নির্বাচিত এই জনপ্রতিনিধি সড়কের নাজুক অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে একবার যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে ছোটেন, আরেকবার ছোটেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে। কোনো ফল হয় না। এলাকায় সংস্কারযোগ্য ৩২ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ নবেকি সড়ক সংস্কারে দরকার ১২ কোটি টাকা। থোক বরাদ্দ থেকে মিলেছে মাত্র ৫০ লাখ টাকা। এমপি রেজা কালের কণ্ঠকে বলেন, 'তাইলে বর্ষার মধ্যে কাজ হইবে ক্যামনে?'
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এর আগে থোক বরাদ্দ থেকে সওজের খুলনা জোনের যশোর, ঝিনাইদহ, মেহেরপুর ও বাগেরহাটে ২৫ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। সাতক্ষীরায় কোনো বরাদ্দ হয়নি। এমপি রেজা বৈষম্যের অভিযোগ তুলে গত ৩ জানুয়ারি যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে এই বরাদ্দ বন্ধ রেখে ন্যায্য বরাদ্দ দাবি করেছিলেন। চার মাসেও তিনি কোনো সদুত্তর পাননি।
ফরিদপুর সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী সন্তোষ কুমার রায়ের চোখ-মুখ যেন মলিন হয়ে ওঠে বর্ষার কথা ভাবলেই। এবারের বর্ষায় এই এলাকার সড়কে বিপর্যয় ঠেকাতে পারবেন কি না- এ নিয়ে তিনি বেশ চিন্তিত। কালের কণ্ঠকে তিনি বলেন, ফরিদপুরে ১৯৫ কিলোমিটার সড়ক সংস্কার করতে হবে। সড়ক বিভাগ থেকে চাওয়া হয়েছিল ৪০ কোটি টাকা। কিন্তু দেওয়া হয়েছে ২০ কোটি টাকা। এই টাকায় পুরোদমে বর্ষা শুরুর আগে সংস্কারকাজ সম্পূর্ণভাবে করা সম্ভব হবে না। সড়ক উন্নয়নের অন্য প্রকল্পগুলোতে এবার অর্থ নেই।
পরিদর্শনে ধরা পড়ছে দুর্নীতি : মাঠপর্যায়ে সড়কের সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের অবস্থা সরেজমিনে দেখতে যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের ২৩ জন কর্মকর্তাকে দেশের বিভিন্ন জেলায় পরিদর্শনে যাওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে চলতি বছরের শুরুর দিকে। তাঁদের সঙ্গে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন জেলার ১৫ নির্বাহী প্রকৌশলী ও আট উপবিভাগীয় প্রকৌশলীকে। নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, সরেজমিনে গিয়ে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের চোখে ধরা পড়ছে সময়মতো ও সঠিকভাবে কাজ না হওয়ার নমুনা। যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব (উন্নয়ন) সফিকুল ইসলাম গত ৮ ও ৯ মার্চ বরিশাল ও ঝালকাঠি জেলার বিভিন্ন সড়ক পরিদর্শনে গেলে দুই জেলার সড়কগুলোর বেহাল দশা দেখতে পান। তিনি দেখতে পান, ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের বরিশাল-ভুরকাটা অংশের বিভিন্ন স্থান নাজুক অবস্থায় রয়েছে। এর মধ্যে চার কিলোমিটার অংশ যানবাহন চলাচলের একেবারে অনুপযোগী। ২০১০-১১ অর্থবছরের ১০ মাসেও এই অংশের কাজ হয়নি। তিনি আরো দেখতে পান, ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর-কাঁঠালিয়া সড়কের আড়াই কিলোমিটার অংশেও কাজ হয়নি। বর্ষার আগেই দুই জেলার বিধ্বস্ত সড়কগুলো সংস্কারের পরিকল্পনা থাকলেও তার বাস্তবতা খুঁজে পাওয়া দুরূহ হয়ে উঠেছে। সওজের হিসাব মতে, শুধু দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলাতেই সওজের ২০০ কিলোমিটার সড়ক নাজুক অবস্থায় রয়েছে।
১৩০ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থ নেই : সড়ক খাতের বিভিন্ন প্রকল্পে অতিরিক্ত বরাদ্দের জন্য স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে বারবার সুপারিশ পাঠাচ্ছেন। অন্য অনেক সংসদ সদস্যের মতো শ্রম ও কর্মসংস্থান এবং প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী খন্দকার ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন তাঁর নির্বাচনী এলাকা ফরিদপুরে ৬১ কিলোমিটার দীর্ঘ গোয়ালন্দ-ফরিদপুর-তারাইল সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পে ২০ কোটি টাকার অতিরিক্ত বরাদ্দ চেয়েছেন। গত বছরের মে মাসে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। এরপর অর্থ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে গত ডিসেম্বর মাসে মন্ত্রীকে দিয়ে কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করানো হয়। এ যাবৎ তিন কোটি ২০ লাখ টাকা পাওয়া গেছে। ফরিদপুর সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী সন্তোষ কুমার রায় জানান, কাজ শুরু হলেও এখন প্রকল্পে কোনো টাকা নেই। ঠিকাদারের পাওনা রয়েছে ৯ কোটি টাকা। আগামী বর্ষা মৌসুমের আগে কাজ শেষ করতে না পারলে জনসাধারণকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হবে। জানা গেছে, অর্থ সংকটের কারণে সড়কের কমপক্ষে ১৩০ প্রকল্প নিয়ে যোগাযোগ মন্ত্রণালয় এখন বিপাকে আছে।
৯ বছর ধরে ঝুলছে সড়ক তহবিল : পাকিস্তানে টোল আদায়ের মাধ্যমে মহাসড়ক রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। এতে ২০০০ থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত তাদের যানবাহন চালনা খরচ ৮০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার হ্রাস পেয়েছে। জাম্বিয়ায় গত ১৫ বছরে জাতীয় মহাসড়কের ৪৫ শতাংশের উন্নতি সাধিত হয়েছে। এল সালভাদরে এ কারণে প্রতি ১০০ কিলোমিটারে সাড়ে ৮ মার্কিন ডলার সাশ্রয় হয়েছে। এসব দৃষ্টান্ত সামনে রেখে বাংলাদেশেও সড়ক সংস্কারের জন্য তহবিল গড়তে উদ্যোগ নেওয়া হয়। কিন্তু গত ৯ বছরেও এর জন্য কোনো নীতিমালা চূড়ান্ত হয়নি। যোগাযোগ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, সরকারের সংযুক্ত তহবিল থেকে বরাদ্দকৃত অর্থ, সড়ক ব্যবহারকারী যানবাহনের আদায়কৃত চার্জ, যানবাহনের বার্ষিক লাইসেন্স ফি, সড়ক ও সেতুর টোল, যানবাহনের জরিমানা, আন্তর্জাতিক ট্রানজিটসহ বিভিন্ন চার্জ, উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে পাওয়া ঋণ বা অনুদান ও বিভিন্ন উৎস থেকে এই তহবিল গঠন করা হবে।

No comments

Powered by Blogger.