প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন-রেলওয়ের জমি বেদখল

সারা দেশে প্রভাবশালী মহল বাংলাদেশ রেলওয়ের হাজার হাজার একর জমি অবৈধভাবে দখল করে রেখেছে। এখনো নানাভাবে রেলওয়ের জমিতে ঘরবাড়ি, দোকানপাট, কার্যালয় নির্মাণ অব্যাহত আছে। জয়পুরহাট রেলওয়ে স্টেশনের জমি অবৈধভাবে দখল হওয়ার সংবাদ জানাচ্ছে গতকাল বুধবারের প্রথম আলো।


উদ্বেগের ব্যাপার হলো, এখানে প্রধান দুই দল আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের কার্যালয় গড়ে তোলা হয়েছে। রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রীয় সম্পদ বেদখল করে রাখলে তা বাজে দৃষ্টান্ত সৃষ্টি করে। এতে ভূমিগ্রাসীরা উৎসাহিত বোধ করে। দখলের এ প্রবণতা রোধ করতে না পারলে তাদের আগ্রাসন আরও বাড়তেই থাকবে।
অতীতে দেখা গেছে, সব সময়ই সরকারি দলের নেতা-কর্মীদের ছত্রচ্ছায়াতেই ভূমি দখল হয়েছে। দখলবাজিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপিতে তফাত নেই। যে দল ক্ষমতায় যায়, তারাই দখলবাজিতে মেতে ওঠে। এবারও সে ধারাবাহিকতাই যেন অক্ষুণ্ন রেখে চলেছেন বর্তমান শাসক দল ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর নেতা-কর্মীরা।
অপেক্ষাকৃত নিরাপদ, আরামদায়ক, সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হিসেবে যাত্রী ও মালামাল পরিবহনে সারা দুনিয়ায় বর্তমানে রেলপথ অত্যন্ত জনপ্রিয়। দেশে দেশে রেল সম্প্রসারণের চিন্তা দেখা যাচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেশের চিত্রটি পুরো বিপরীত। দুর্নীতি, অবহেলা আর অদক্ষতার বলি হয়ে চলেছে রেলওয়ে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য রেলওয়ের আধুনিকীকরণের দিকে সরকারের দৃষ্টি দেওয়ার পাশাপাশি দরকার বেদখল হয়ে যাওয়া সব সম্পদ পুনরুদ্ধার করে তার সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা।
রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা সমাজের সচেতন অংশ। রাষ্ট্রীয় সম্পদ অবৈধভাবে দখল করে রাখা তাঁদের মানায় না। ন্যায়নীতির স্বার্থেও অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া আবশ্যক। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের উদাসীনতা দেখালে রেলওয়ের জমি স্থায়ীভাবে হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। রেলওয়ের বেদখল হওয়া জমি উদ্ধারে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।

No comments

Powered by Blogger.