অবিলম্বে শূন্যপদগুলো পূরণ করা হোক-সরকারি কলেজে শিক্ষকসংকট

সরকারি কলেজে শিক্ষকসংকট বর্তমানে যে অবস্থায় এসে ঠেকেছে, তা উদ্বেগজনক। প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, কুমিল্লা সরকারি কলেজে শিক্ষার্থীর সংখ্যা পাঁচ হাজার ৫০৯ জন হলেও শিক্ষক আছেন মাত্র ৩৮ জন। বর্তমানে কলেজে দুটি সহযোগী ও ১৯টি প্রভাষকের পদ খালি আছে।


কোনো কোনো বিভাগে স্নাতক সম্মান শ্রেণী খোলা হলেও শিক্ষকের নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়নি। উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে কম্পিউটার শিক্ষা থাকলেও কোনো শিক্ষক নেই। শিক্ষক ছাড়া কীভাবে শিক্ষার্থীরা পাঠ নেবে? সব মিলিয়ে এক হ-য-ব-র-ল অবস্থা চলছে।
কেবল কুমিল্লা সরকারি কলেজ নয়, অধিকাংশ সরকারি কলেজ নানা ধরনের সংকটে রয়েছে। অনেক সরকারি কলেজেই প্রয়োজনীয় শ্রেণীকক্ষ নেই, পাঠাগার নেই, নেই বিজ্ঞান গবেষণাগার। আবার কোথাও শিক্ষক থাকলেও পড়ানোর মতো শিক্ষার্থী নেই। এই অদ্ভুত নিয়মে চলছে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা। মহানগরের চেয়ে মফস্বলের কলেজগুলোর অবস্থা অধিক শোচনীয়। অভিজ্ঞ ও দক্ষ শিক্ষকেরা মফস্বলে যেতে চান না। তাঁদের এই মানসিকতার কারণে শিক্ষাক্ষেত্রে শহর ও গ্রামের বৈষম্য প্রকট হয়ে উঠেছে। সরকারের উচিত মফস্বলের কলেজগুলোর সমস্যা সমাধানে অধিক মনোযোগী হওয়া।
সরকারি কলেজগুলো যেভাবে চলছে, তাতে প্রতীয়মান হয় যে এসবের দেখাশোনার কেউ নেই। তাহলে উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর কী করছে? কী করছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়? যেকোনো প্রতিষ্ঠান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার শর্ত হচ্ছে নিয়মিত তদারক করা। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা সেই কাজটি করলে দেখতে পেতেন, কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কী সমস্যা আছে এবং সেই অনুযায়ী তাঁরা ব্যবস্থাও নিতে পারতেন।
মফস্বলের সরকারি কলেজগুলো ভালো ফল করছে না বলে অভিযোগ আছে। এ জন্য শুধু শিক্ষকদের দায়ী করা যায় না। সুষ্ঠুভাবে পড়াশোনা চালানোর জন্য আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধাও নিশ্চিত করা প্রয়োজন। সারা দেশে সরকারি কলেজগুলোতে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিক্ষকের পদ খালি আছে। এগুলো অবিলম্বে পূরণ করতে হবে। ‘কাজির গরু কেতাবে আছে গোয়ালে নেই’ দিয়ে আর যা-ই হোক, শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতি হতে পারে না।

No comments

Powered by Blogger.