খুনিদের মনে শাস্তির ভয় লোপ পাচ্ছে কার কারণে?-কত রকম মানুষ, কত রকম হত্যা

যখন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি শিথিল থাকে, যখন শাসক-প্রশাসকেরা যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করেন না, তখন জনগণকে বহু রকম দুর্ভোগে ভুগতে হয়। এই সীমিত মাত্রার নৈরাজ্যের খেসারত অনেককে জীবন দিয়েও শোধাতে হয়। রোববারের প্রথম আলোর একটি শিরোনাম এ ইঙ্গিতই দেয়, হত্যা-সন্ত্রাসের নিশানা থেকে কেউই বাদ পড়ছে না।


শিরোনামটি এই: সাংবাদিকসহ চার জেলায় সাত খুন। জনগণের জীবনের নিরাপত্তার প্রশ্নটির প্রতি সরকারের তাই বিশেষ মনোযোগী হওয়ার আছে।
এই সাতজনের মধ্যে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ আছেন। সীমান্তরক্ষী বিজেবি বাহিনীর সোর্স হিসেবে কাজ করতেন দুই ভাই, কিছুদিন আগে তাঁদের তথ্যের ভিত্তিতে বিরাট একটি ফেনসিডিলের চালান ধরা পড়ে। যশোর থেকে প্রকাশিত দৈনিক পত্রিকা গ্রামের কাগজ-এর শার্শা প্রতিনিধির খুনের কারণ এখনো অজ্ঞাত। যশোরেই খুন হন বিজেবির আরেক সোর্স। পুঠিয়ায় হত্যার পর আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয় এক ব্যক্তিকে। ওদিকে বোমার আঘাতে অভয়নগরে প্রাণ হারান আরেক ব্যক্তি। রায়গঞ্জ উপজেলায় ওষুধ কোম্পানির এক বিক্রয় প্রতিনিধিকে অপহরণের পর হত্যা করা হয়।
সাংবাদিক হত্যার কারণ অজ্ঞাত হলেও তা সাধারণভাবে জনগণ এবং সাংবাদিক সমাজকে উদ্বিগ্ন না করে পারে না। সাংবাদিক সমাজ চিরকালই ক্ষমতাবান গোষ্ঠী ও অপরাধী চক্রের কোপানলে ছিল। এ কারণে তাঁদের শত্রুরও অভাব হওয়ার কথা নয়। এ বাস্তবতাতেই যশোরের শার্শায় একজন স্থানীয় সাংবাদিক নৃশংসভাবে খুন হয়ে যেতে পারেন। উল্লেখ্য, এই যশোরেই ২০০০ সালে সাংবাদিক শামছুর রহমান আততায়ীর হাতে নিহত হন।
হত্যাকাণ্ডের বিস্তার, পদ্ধতি ও লক্ষ্যগুলো পর্যালোচনা করলে মনে হয়, খুনিরা ধরা পড়া বা শাস্তির ভয়ে ভীত নয়। যে কাউকে হত্যা করে পার পাওয়া যাবে—এমন ধারণাই কি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বাড়িয়ে দিচ্ছে? প্রশ্নটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে। উত্তর এবং বিহিত তাঁদের কাছেই প্রত্যাশিত। জনগণের জীবনের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে তাদের আর গতানুগতিক চালে চলা উচিত নয়।

No comments

Powered by Blogger.