আলোচনায় রাজনৈতিক বিষয়ই প্রাধান্য পাবে by অধ্যাপক ইমতিয়াজ আহমেদ

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন, ভারতের অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি এবং জাপানের উপপ্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে আসছেন। আমাদের দেশের জন্য এটা গুরুত্বপূর্ণ। তবে তিনজনকে একসঙ্গে মিলিয়ে ফেলা ঠিক হবে না। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারতের অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখার্জি বাংলাদেশ সফরে আসবেন- এটা পূর্বনির্ধারিত ছিল।


বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধশততম জন্মবার্ষিকীর বিশেষ অনুষ্ঠানে তিনি আসবেন- সেটা রবীন্দ্র জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানসূচিতেই রাখা হয়েছিল এবং এটা উভয় দেশের মানুষ অনেক আগে থেকেই জানে। প্রণব মুখার্জি এবার বাংলাদেশে আসার কারণে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে তেমন পরিবর্তন আসবে না। সেই পথ কিন্তু কণ্টকাকীর্ণ করা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির মাধ্যমে। তিনি দুই দেশের সম্পর্কের যে গতি ছিল, তা থামিয়ে দিয়েছেন। এখন সেই গতি আবার যদি ফিরিয়ে আনতে হয় তাহলে অর্থমন্ত্রী নয়, মমতাকেই ভূমিকা রাখতে হবে। এটাই তো বাস্তবতা। আমরা জানি, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির মানসিকতায় কিন্তু তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। ফলে প্রণব মুখার্জির এই সফর আমাদের উভয়ের সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোনো বড় ভূমিকা রাখবে না, এ সফরে খুব বড় কোনো অর্জন হবে বলেও মনে হয় না।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনের আসার কথা অনেক আগে থেকে শোনা যায়নি। চীন থেকে ফেরার পথে তিনি বাংলাদেশে আসছেন। থাকবেনও মাত্র ২৪ ঘণ্টা। ফলে এই সময়ের মধ্যে বড় কোনো চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরে আসাটা কম কথা নয়। তবে যে কারণেই হিলারি ক্লিনটন আসুন না কেন, এটা যদি সরকারের শুরুর দিকে হতো, তাহলে বর্তমান সরকার আমলে দীর্ঘস্থায়ী কোনো কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা যেত। দেশে এখন যে রাজনৈতিক পরিস্থিতি চলছে, তাতে মনে হয় তাঁর এই সফর রাজনৈতিকভাবে বিশেষভাবে বিবেচিত হবে। হরতাল যদি ৪ তারিখও চলে, তাহলেও এর প্রভাব পড়বে। তবে হরতাল হোক কিংবা নাইবা হোক- বিরোধী দল কিন্তু রাজনৈতিক ইস্যু সামনে আনার চেষ্টা করবে। বিরোধী দলের নেত্রীর সঙ্গে দেখা হলে তাঁরা তাঁদের অবস্থান হিলারি ক্লিনটনের সামনে উপস্থাপন করবেন বলেই মনে করি। বিশেষ করে বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলীর নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি তাঁদের আলোচনার বিষয়বস্তু হবে বলে বিশ্বাস করা যায়।
প্রণব মুখার্জি আর হিলারি ক্লিনটনের সফরকে এক করে দেখার সুযোগ নেই। জাপানের উপপ্রধানমন্ত্রীও আসছেন। তিনজনই তিন পক্ষের স্বার্থ দেখবেন। আঞ্চলিক সহযোগিতার ক্ষেত্রেও তাঁদের অবস্থান নিশ্চিত করবেন। বাংলাদেশের স্বার্থ রয়েছে সবার সঙ্গে। সেই হিসেবে এই সফরগুলো বাংলাদেশের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। সরকারের পররাষ্ট্রনীতির সাফল্য-ব্যর্থতা মূল্যায়ন হবে। তবে সফরপর্ব সরকারের মেয়াদের শেষ পর্যায়ে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যে কারণে হয়তো কাঙ্ক্ষিত ফল লাভ নাও হতে পারে। তার পরও দেখা যাক, তাঁদের এই সফরের পরবর্তী অবস্থা কী হয়।
« পূর্ববর্তী সংবাদ
       
পরবর্তী সংবাদ »
এই প্রতিবেদন সম্পর্কে আপনার মতামত দিতে এখানে ক্লিক করুন
আপনার মতামত দিন
মতামত দিতে চাইলে অনুগ্রহ করে সাইনইন করুন
* আপনার কোন একাউন্ট না থাকলে রেজিষ্ট্রেশন করুন
মূল পাতা মুক্তধারা

No comments

Powered by Blogger.