কুড়িগ্রামে বোরো চাষে ব্যয় বাড়বে ৩৫ কোটি টাকা

ডিজেল ও ইউরিয়া সারের দাম বাড়ায় কুড়িগ্রামে বোরো আবাদ চলছে ধীরগতিতে। চলতি মৌসুমে বোরো চাষে শুধু এ দুটি খাতে কুড়িগ্রামের কৃষকদের গত বছরের তুলনায় অন্তত ৩৫ কোটি টাকা বেশি ব্যয় হবে। কৃষি সম্প্র্রসারণ অধিদপ্তর কুড়িগ্রাম কার্যালয় সূত্র জানায়, জেলায় এবার এক লাখ ছয় হাজার ৭৫৩ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এ পর্যন্ত আবাদ হয়েছে ১৩ হাজার ৮৮৫ হেক্টরে। তবে কৃষি বিভাগ বলছে, শীতের কারণে আবাদে দেরি হচ্ছে।


দুই সপ্তাহের মধ্যে কৃষকেরা পুরোদমে আবাদে নেমে পড়বেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বছর ডিজেলের দাম তিন দফায় প্রতি লিটারে মোট ১৫ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া ইউরিয়া সারের দাম প্রতি বস্তায় বেড়েছে প্রায় ৪০০ টাকা। বর্তমানে এক লিটার ডিজেল ৬১ টাকা ২৫ পয়সা এবং ৫০ কেজি ওজনের এক বস্তা ইউরিয়া এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চলতি বছর বোরো আবাদে জেলার কৃষকদের ডিজেল ও ইউরিয়া কিনতে অতিরিক্ত অন্তত ৩৫ কোটি টাকা বেশি ব্যয় করতে হবে।
বেলগাছার কৃষক সামছুল আলম, পাঁচগাছির আহাম্মদ হোসেন, ইয়াকুব আলী, সামছুল ইসলাম জানান, আলু ও ধানের আশানুরূপ দাম পাননি। তার ওপর সার, ডিজেল, বিদ্যুতের দাম বেড়ে যাওয়ায় আবাদে আগ্রহ কমে গেছে। এ কারণে বোরো আবাদ চলছে ধীরগতিতে। ঘোগাদহের হযরত আলী, আবদুল আউয়াল জানান, ডিজেল ও সারের দাম বাড়ায় তাঁদের এবার বোরো আবাদে গতবারের চেয়ে হেক্টরপ্রতি প্রায় চার হাজার টাকা বেশি ব্যয় হবে। এ অতিরিক্ত ব্যয়ের সামর্থ্য অনেক কৃষকেরই নেই।
সূত্র আরও জানায়, বোরো মৌসুমে প্রতি হেক্টর জমি সেচে ১৩৭ লিটার ডিজেল লাগবে। শুধু ডিজেলের দাম বাড়ায় প্রতি হেক্টরে কৃষকের অতিরিক্ত ব্যয় হবে দুই হাজার ৫৫ টাকা। এতে জেলায় ডিজেল চালিত সেচযন্ত্র ব্যবহারকারী কৃষকদের অতিরিক্ত ব্যয় হবে প্রায় ১৮ কোটি তিন লাখ টাকা।
আর প্রতি হেক্টরে ইউরিয়া লাগে ২৫০ কেজি (পাঁচ বস্তা)। এ হিসাবে প্রতি হেক্টরে সারে ব্যয় বেড়েছে দুই হাজার টাকা। ফলে সারের জন্য কৃষকদের গতবারের চেয়ে এবার অতিরিক্ত ব্যয় হবে প্রায় ১৭ কোটি ৫৫ লাখ টাকা।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মজনুন রহমান জানান, বোরো আবাদে ডিজেল ও ইউরিয়া কিনতে কৃষকদের গতবারের চেয়ে এবার প্রতি হেক্টরে অতিরিক্ত চার হাজার ৫৫ টাকা ব্যয় হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুড়িগ্রামের উপপরিচালক প্রতীপ কুমার মণ্ডল বলেন, কৃষকেরা বোরো আবাদে গুটি ইউরিয়া, জৈব সার ও এলসিপি পদ্ধতি ব্যবহার করলে ব্যয় কমে আসবে। এ ছাড়া পর্যায়ক্রমে ভিজানো ও শুকানো পদ্ধতিতে সেচ কার্যক্রম চালালে ডিজেল সাশ্রয় হবে; ফলনও বাড়বে।

No comments

Powered by Blogger.