শিশুদের জন্য সিনেমা হল by সাজ্জাদ হোসেন রিজু

২১ থেকে ২৭ জানুয়ারি ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়ে গেল পঞ্চম আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব। উৎসবে ছিল বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৪০টি দেশ থেকে মনোনীত হয়ে আসা ২০০টিরও বেশি শিশুতোষ চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী, সেমিনার আর কর্মশালা। এই উৎসব আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য শিশু-কিশোরদের চোখ দিয়ে সমাজের চারপাশকে দেখার চেষ্টা করা আর তাদের মেধা-মননশীলতা ও সৃজনশীলতার বিকাশকে ত্বরান্বি্বত করা।


ছবি পরিচালনা থেকে শুরু করে প্রযোজনা, নির্দেশনা, অভিনয়সহ সবকিছুই করছে শিশুরা। যদিও এসব কাজে তারা বড়দের বা অভিজ্ঞদের সহযোগিতা নিচ্ছে। উদ্যোক্তাদের প্রত্যাশা, এ ধরনের উৎসব থেকে তারা ভালো কিছু শিশুতোষ ছবি আর সৃজনশীল কিছু শিশু চলচ্চিত্র নির্মাতা বের করে আনতে সক্ষম হবেন। পাশাপাশি শিশুদের মধ্যে সৃজনশীল কাজের আগ্রহ সৃষ্টি হবে। কিন্তু আমার প্রশ্ন, তা টেকসই হবে তো? নাকি প্রতি বছর উৎসবকে উপলক্ষ করেই সব আয়োজন? উৎসবে ৭টি বিভাগীয় শহরের প্রায় ২০টি ভেন্যুতে চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হয়েছে। কিন্তু প্রত্যেকটি ভেন্যুই শহরাঞ্চলে। গ্রামাঞ্চল বা তৃণমূল পর্যায়ের শিশুরা চলচ্চিত্রগুলো দেখতে পেতে পারে এমন কোনো সুযোগ রাখা হয়নি। বসন্তের কোকিলের মতো আমাদের স্বভাব থেকেই গেল। আমরা শুধু উৎসবে আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে উঠি। যখন উৎসব শেষ, ভুলে যাই সবকিছু। আমরা যদি আমাদের আগামী প্রজন্মের কথা সত্যিকার অর্থেই ভেবে থাকি, তাহলে কেন শিশুদের জন্য আলাদা সিনেমা হল নেই, যেখানে তারা তাদের তৈরি চলচ্চিত্রগুলো প্রদর্শন করতে পারবে? এটি করা গেলে এই সৃজনশীল মাধ্যমের নিয়মিত চর্চার একটি প্ল্যাটফরম তৈরি হবে। নিয়মিত চর্চা ছাড়া কোনো শিল্পই পূর্ণ মাত্রা পেতে পারে না।
নগর জীবন হয়ে উঠছে সংকীর্ণ। শিশুদের খেলাধুলার জায়গাগুলো হয়ে যাচ্ছে বেদখল। তারা হয়ে পড়ছে গৃহবন্দি; কি ঘরে, কি স্কুলে। যতটুকু সুযোগ সৃষ্টি করা যায়, ততটুকুই করতে হবে ওদের জন্য। শিশুতোষ চলচ্চিত্রের মতো একটি সৃজনশীল মাধ্যমকে জাগিয়ে তুলতে হলে শিশুদের জন্য আলাদা সিনেমা হল/শিশু থিয়েটার মঞ্চ গড়ে তোলার বিকল্প নেই। আর সুবিধাবঞ্চিত শিশুদেরও সুযোগ করে দিতে হবে। কারণ একাংশকে পেছনে রেখে সামগ্রিক উন্নয়ন কখনও সম্ভব নয়।
য় মহিলা কলেজপাড়া, ঝিনাইদহ

No comments

Powered by Blogger.