'ফ্রেমে ফ্রেমে আগামী স্বপ্ন'-সুন্দরের জয় হবেই হবে

রাজধানীর সুফিয়া কামাল জাতীয় গণগ্রন্থাগার চত্বর এখন মুখরিত শিশু-কিশোরের উপস্থিতিতে। তারা উপভোগ করছে বিশ্বের ৪০টি দেশের চলচ্চিত্র। সেখানে শওকত ওসমান মিলনায়তনে চলছে আন্তর্জাতিক শিশু চলচ্চিত্র উৎসব। একই সঙ্গে বিভাগীয় অন্য শহরগুলোসহ মোট ২০টি ভেন্যুতে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হচ্ছে।


বাংলাদেশের শিশু-কিশোর এবং তাদের অভিভাবকদের জন্য একই সঙ্গে শিশু চলচ্চিত্র নির্মাতা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য এই সুযোগ বিশাল। এ উৎসবের সুযোগে যেমনি আমাদের শিশুরা, তেমনি চলচ্চিত্র নির্মাতা, সমালোচক, কুশীলবসহ প্রত্যেকের জন্যই বিশেষ সহযোগিতা প্রদান করা হবে। আমাদের দেশের চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য ৪০টি দেশের দুই শতাধিক ছবি দেখার সুযোগ করে দিয়ে চিলড্রেন্স ফিল্ম সোসাইটি অব বাংলাদেশ (সিএফএস) ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য হয়েছে। এই প্রতিষ্ঠানটি এর আগেও এমন বড় মাপের আয়োজন করার মাধ্যমে শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক ধারার বিকাশের পথ প্রশস্ত করেছে। উত্তরোত্তর তাদের আওতাও বেড়ে চলেছে। আজকে বাংলাদেশের এই আয়োজন সারা দুনিয়ার মানুষকে সম্পৃক্ত করেছে। সরকারি উদ্যোগের বাইরে এমন একটি আয়োজন অবশ্যই আমাদের দেশের চলচ্চিত্রবোদ্ধাদের এবং বিদেশের বিশিষ্টজনদের একটি প্লাটফরমে আনার সুযোগ করে দিয়েছে। সেমিনার, অন্তরঙ্গ আড্ডা ও চলচ্চিত্রবিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে চলচ্চিত্রের অধিকতর উন্নয়নের পথ সহজতর করে দেওয়া হয়েছে। আয়োজকরা শিশুদের বিনা মূল্যে ছবি দেখার সুযোগ করে দিয়ে আরেকটি উদাহরণ তৈরি করেছেন। এ আয়োজন চলচ্চিত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে পথনির্দেশনা প্রদান করবে। তবে চলচ্চিত্রকে সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছানোর কোনো প্রচেষ্টা আমাদের এখান থেকে নেওয়া হয় না। আর শিশু চলচ্চিত্রের কথা তো বলাই বাহুল্য। স্বাধীনতার ৪০ বছরেও শিশু চলচ্চিত্রের প্রতি রাষ্ট্র বা বেসরকারি উদ্যোক্তাদের মনোযোগ হতাশাব্যঞ্জক। বর্তমানে যে উৎসব আয়োজিত হয়েছে, তা মানুষকে অনুপ্রেরণা জোগাবে। শিশুদেরও দৃষ্টি প্রসারিত করবে বহির্বিশ্বের দিকে। তারা জানতে পারবে, বাইরের দুনিয়ার মানুষের চিন্তাচেতনা সম্পর্কে। বোঝা যাবে, আমাদের চলচ্চিত্রগুলো বিশ্বমানের সঙ্গে কতটা তুল্য হতে পারে। এতে সাংস্কৃতিক সেতুবন্ধ যেমন রচিত হবে, তেমনি ভাবের আদান-প্রদানও হবে। উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার চলচ্চিত্র নির্মাণে ভিন্ন মাত্রা তৈরির বিভিন্ন দিকনির্দেশনা প্রদান করবেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। এমন উদ্যোগের পাশাপাশি আমাদের দেশের শিশুদের অপসংস্কৃতির আগ্রাসনের হাত থেকেও রক্ষা করতে হবে। এ পরিস্থিতিতে বিশ্ব চলচ্চিত্র নিয়ে অনুষ্ঠিত এই উৎসব কিছুটা হলেও তৃপ্তি প্রদানে সহায়ক হবে। অন্তত আমাদের শিশুরা সত্যের আলোয় নিজেদের আলোকিত করতে এবং মেধা ও মানসকে পরিপুষ্ট করার সুযোগ পাবে।

No comments

Powered by Blogger.